সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / পেকুয়ায় গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

পেকুয়ায় গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ


মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়ায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি’র অভিযোগ উঠেছে। গত ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ধীর গতিতে এখনো চলছে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গৃহহীনদের এ প্রকল্প থেকে অর্থ লুটপাটের জন্য ঘর নির্মাণে প্লান, ডিজাইন, নির্মাণসামগ্রী গুণগত মান বজায় রাখা হচ্ছেনা। ঘর নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। ঘর নির্মাণে নিয়োজিত শ্রমিকদের খাবার ও নির্মাণ সামগ্রী আনতে উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি টইটং ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম অন্য আরেকজনকে দিয়ে এসব ঘর নির্মাণ করাচ্ছেন। তাই তাদের ক্ষমতার প্রভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে টু-শব্দ করতে পারছে না কেউ।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ঘরগুলো বরাদ্দের তালিকা তৈরীতেও অনিয়ম করা হয়েছে। প্রকৃত গৃহহীনদের ঘর বরাদ্দ না দিয়ে সিংহভাগ ঘর দেওয়া হয়েছে সচ্ছল পরিবারকে। টাকার বিনিময়ে উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। যা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় ১২টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২লাখ ৫৮হাজার ৫৩১টাকা। প্রতিটি ঘর হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। ২০ ফুট লম্বা ও পাশ হবে ৮ ফুট। চারপাশে হবে ইটের দেয়াল, উপরে টিনের ছাউনি। ছাউনিতে মেহগনি অথবা কড়াই কাঠ ব্যবহার করতে হবে। গৃহের মেঝেতে তিন ইঞ্চি ঢালাই হবে। রান্নাঘর ও টয়লেট হবে ১৩ ফুট। ইট হবে এক নাম্বার, ছাউনির টিন হবে পয়েন্ট ৪৬ মিলিমিটার পুরত্বের রঙিন ঢেউটিন। ঘর ও রান্নাঘরের মাঝখানে সাত ফুট করিডোর থাকবে। যার উপরে থাকবে টিনের ছাউনি।

উপকারভোগীদের অভিযোগ, পেকুয়া উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য এসব ঘর নির্মাণেনিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারা ভাবে কাজ করা হচ্ছে। অনুমোদিত নকশা না মেনে কাজ করা হচ্ছে। সিংহভাগ ঘর নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট, সিমেন্ট ও ময়লাযুক্ত বালু। আড়াই ফুটের কথা থাকলেও এক ইটের গাথুনি দিয়ে করা হয়েছে এক থেকে দেড় ফুটের বেইজমেন্ট। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে প্রতিটি ঘর। এছাড়া এসব ঘরে টিন ব্যবহার করা হয়েছে খুবই নিম্নমানের। টিন ফিটিংসে পেরেকে দেওয়া হয়নি ওয়াটার প্রুফ। এতে বৃষ্টির পানি ঢুকছে সদ্য নির্মিত প্রতিটি ঘরে।

রাজাখালী ইউনিয়নের মাতবর পাড়া গ্রামের উপকারভোগী জেবর মুল্লুক বলেন, বারবার বলার পরেও দূর্বল কাঠামোর উপর আমার ঘরটি তুলেছে ঠিকাদার। এক ইটের এক ফুট গাথুনি দিয়ে আমার ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ঘরটি ঝড়োবাতাসে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে খুবই নিম্নমানের। এসব বিষয় সংশ্লিষ্টদের জানানোর পরেও আমি কোন সুরাহা পাইনি।

পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চৈরভাঙ্গা এলাকার উপকারভোগী খালেদা বেগম বলেন, টিন ফিটিংসে পেরেক লাগানোর সময় ওয়াটার প্রুফ ব্যবহার না করায় সদ্য নির্মিত ঘরে বৃষ্টি ও কুয়াশা ঢুকছে। এছাড়া নিম্নমানের ইট দিয়ে ঘরটি নির্মাণ করায় এর স্থায়ীত্ব নিয়ে সবাই প্রশ্ন উঠেছে।

অনিয়ম ও দুর্নীতির এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাহেদুল ইসলাম জানান, এসব ঘর সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী নির্মাণ করা হচ্ছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না।

এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সৌভ্রাত দাশ বলেন, ঘর নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে অনিয়মের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। এসব ঘর নির্মাণে যদি কোন অনিয়ম ও দূর্ণীতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ কারাগারে

নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের নব নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদকে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/