গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
কক্সবাজার জেলার সর্বদক্ষিণে টেকনাফ উপজেলা। এই উপজেলার ১নং ইউনিয়ন হচ্ছে হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়ন। পাহাড় পর্বতে ঘেরা সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি এই্ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষের বসবাস। এখানকার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চাষ হচ্ছে পান, লবণ, ধান, শাকসব্জি, চিংড়ি ও জুম চাষ। এই ইউনিয়নের অবহেলিত ৪নং ওয়ার্ডে পাহাড়ি এলাকায় ঝুকিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে এদেশেরই নাগরিক প্রায় এক হাজার উপজাতি। এরা যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর পানি, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত এবং ঝুকিপূর্ণ বসবাসসহ নানান সমস্যা নিয়ে জীবন যাপন করে আসছে।
সরেজমিনে এই এলাকাটি ঘুরে দেখা যায়, হোয়াইক্যং ৪ নং ওয়ার্ডের চাকমা পল্লী হিসেবে খ্যাত ১শ’টি বসত বাড়ি ও হাজার লোকের বসবাসের এই গ্রামে প্রবেশের কোন নির্দিষ্ট রাস্তা নেই। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা নেই, যেখানে কমবেশি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে চাকমা পল্লীর জনসাধারণ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে যেমনি ছিল এখনি সে অবস্থায় গহীন অরন্যে অবহেলিত ভাবে বসবাস করে আসছে। নেই কোন পানির ব্যবস্থা, নেই কোন বিদ্যুৎ ,নেই চিকিৎসা ব্যবস্থা, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছেলেমেয়েরা সব মিলিয়ে এক প্রকার আদিকালের মানুষের মত জীবন যাপন করছে এই গ্রামের মানুষগুলো। এমনকি প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে গহীন অরণ্যে হেটে গিয়ে ঝর্ণা থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়।
এই অবহেলিত এলাকার উপজাতি তরুণ যুবক কিরন চাকমা আক্ষেপ করে বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণের মত আমরাও মূল্যবান ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচিত করি। ভোটের আগের জনপ্রতিনিধিরা আমাদের সব সমস্যা সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। নির্বাচন শেষ হলেই জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে তো দুরের কথা সহজে দেখাও মিলে না। মানুষের মৌলিক চাহিদা হিসেবে অন্ন, বস্ত্রের পাশাপাশি নিরাপদ বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, যোগাযোগ ব্যবস্থা কোনটাই আমাদের গ্রামে নেই।
সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বুক ভরা আশা নিয়ে আমাদের গ্রামের বাবুধং ভাইকে মেম্বার নির্বাচিত করেছি। এখন আমাদের এলাকাবাসীর স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে দাবি নবনির্বাচিত মেম্বার বাবুধং ভাইকে সহযোগিতার মাধ্যমে এএলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
এ ব্যাপারে হোয়াইক্যং ৪নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার বাবুধং চাকমা বলেন, আমাদের এলাকার জনগণ ব্রিটিশ আমল থেকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। নির্বাচন এলে উন্নয়নের আশা নিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে থাকি। কিন্তু এতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। এবার এলাকার লোকজন উন্নয়নের আশা নিয়ে আমাকে বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়ে মেম্বার নির্বাচিত করেছেন। এখন আমার মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় পানির সমস্যা সমাধান, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।
You must be logged in to post a comment.