গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
টেকনাফে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা এলাকায় ৫ সন্তানের জননী মরিয়ম হত্যার প্রধান আসামী খুনি হাসিনা চিকিৎসা ও পুলিশ পাহারা অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মারা গেছে। ২৩ জুন ৫ সন্তানের জননী মরিয়মকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করার পর স্থানীয় জনগন তাকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশের কাছে সোর্পদ করে। আটক অবস্থায় সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে কর্তব্যরত ডাক্তার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করে। অবশেষে ২৫ জুন দুপুরের দিকে টেকনাফ থানা পুলিশের পাহারায় ঘাতক হাসিনার মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, ২৩ জুন পারিবারিক কলহের জের ও পরকীয়া প্রেমের কারনে এই হত্যাকান্ডটি সংগঠিত হয়।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, মোহাম্মদ ইলিয়াছ ও তার ছোট ভাই মোহাম্মদ ইউনুছ স্বপরিবারে একই স্থানে বসবাস করে আসছে। বড় ভাই ইলিয়াছ ৫ সন্তানের পিতা তার স্ত্রীর নাম মরিয়ম খাতুন, ছোট ভাই মোহাম্মদ ইউনুছ ৩ সন্তানের পিতা তার স্ত্রীর নাম হাসিনা বেগম। বিগত কয়েকদিন ধরে স্ত্রী হাসিনা ও স্বামী ইউনুছের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি শুরু হয়। পারিবারিক কলহের এক মাত্র কারন হচ্ছে ছোট ভাই মোহাম্মদ ইউনুছের সঙ্গে বড় ভাইয়ের স্ত্রী মরিয়ম খাতুনের সাথে পরকীয়া প্রেমের সুত্রপাত ঘটে। এই নিয়ে বিগত কয়েকদিন আগে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হাসিনা বেগম বড় ভাইয়ের স্ত্রী মরিয়মের সঙ্গে তার স্বামী ইউনুছের পরকীয়ার সম্পর্কের অভিযোগ এনে সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তি ও স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানের নিকট সালিশ দায়ের করে। তবে বিচারকরা তদন্ত করে পরকীয়া প্রেমের কোন তথ্য পায়নি বলে জানা যায়। এই নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে ইউনুছ ও হাসিনার সংসারের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। এই দ্বন্দ্ব নিয়ে ২২জুন বিচারকদের সালিশী বৈঠকে স্বামী ইউনুছ স্ত্রী হাসিনাকে তালাক প্রদান করে এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সালিশী বৈঠকে তা কার্যকর করা হয়। সেই সুত্র ধরে ঘাতক হাসিনা বেগম ২৩ জুন সকাল ৬টার দিকে বড় ভাই ইলিয়াছের বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। মরিয়মের চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন জড়ো হয়ে খুনি হাসিনাকে আটক করে। এদিকে মরিয়মকে দ্রুত উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত ডাক্তার টিটু কুমার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজার হাসপাতালে রেফার করা সময় টেকনাফ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে। খবর পেয়ে টেকনাফ থানা পুলিশে একটি দল ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক হাসিনা বেগমকে আটক করে তার পর টেকনাফ হাসপাতাল থেকে লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে পোস্ট মর্টেমের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরন করা হয়।
এব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার মোহাম্মদ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তালাক প্রাপ্ত মহিলা ভাবীর সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া সন্দেহর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সকাল ৬টার দিকে বড় ভাইয়ের স্ত্রী ৫ সন্তানের জননী মরিয়মকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক মহিলাকে আটক করেছে। তিনি আরো জানান, ঘাতক হাসিনাকে প্রধান আসামী করে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.