(এক দিনে বিজিবি হাতে আটক ২৪ কোটি টাকার ইয়াবা)
গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
টেকনাফ উপজেলার নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের জলসীমা অতিক্রম করে প্রতিনিয়ত মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা। এই মাদক পাচার বিরামহীন ভাবে অব্যাহত থাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা রকম প্রশ্ন। কারণ সরকার মাদক পাচার প্রতিরোধ করার জন্য যতই কঠোর ভূমিকা পালন করছে, ততই বাড়ছে মাদক পাচারের সংখ্যা। তার পাশাপাশি বাড়ছে মাদক ব্যবসায়ীদের সংখ্যা। এতে দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অত্র এলাকার যুব সমাজ ও ছাত্র সমাজ। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বেশি টাকার লোভে পেলে পাচার কাজে বাহক হিসাবে ব্যবহার করছে এই সমস্ত যুবকদেরকে।
ইদানিং টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন উপকূল এলাকা থেকে বিজিবি সদস্যদের হাতে ধরা পড়ছে লক্ষ লক্ষ মালিকবিহীন ইয়াবা। এই ইয়াবা গুলোর সাথে কোন পাচারকারী আটক না হওয়ার কারনে টেকনাফ উপজেলার চারিদিকে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এ ব্যাপারে টেকনাফ সুশীল সমাজের মানুষেরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, এই উপজেলার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদেরকে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসা না হলে সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা পাচার কিছুতেই প্রতিরোধ করা যাবেনা।
এদিকে সীমান্ত প্রহরী টেকনাফ ২ বিজিবি সদস্যরা মাদক পাচার প্রতিরোধ করার জন্য তাদের নিজের জীবন বাজি রেখে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এবং প্রতিনিয়ত উদ্ধার করছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা। সেই ধারাবাহিকতার সফলতা হিসাবে ৯ ফেব্রুয়ারী মাত্র একদিনের ব্যবধানে উদ্ধার করেছে ৮ লক্ষ মালিকবিহীন ইয়াব। যার মূল্য ২৪ কোটি টাকা। তবে এই ইয়াবা গুলোর সাথে জড়িত কোন পাচারকারীকে আটক করতে পারেনি বিজিবি সদস্যরা।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ৯ ফেব্রুয়ারী গভীর রাত ১টা ১৫ মিনিটে শাহপরীরদ্বীপ বিওপির বিজিবি সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের বদর মোকাম জলসীমায় অভিযান চালিয়ে ৭ লক্ষ ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
অপরদিকে একই দিন সকাল সাড়ে ৯টায় দমদমিয়া বিওপির বিজিবি সদস্যরা আরেকটি অভিযান পরিচালনা করে নাফনদীর জইল্যার দ্বীপ এলাকা থেকে ১ লক্ষ মালিকবিহীন ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বিজিবি সুত্রে আরো জানা যায়, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচারের গোপন সংবাদ পেয়ে অভিযানে গেলে বিজিবি সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায় পাচারকারীরা। এতে কৌশলে বস্তাবন্দী ইয়াবাগুলো ফেলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বলেন, অরক্ষিত সীমান্ত এলাকা টেকনাফ উপজেলায় মাদক পাচার প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তা নিয়ে পরিশ্রম করে যাচ্ছে রাত-দিন। সেই অভিযানের সফলতা হিসাবে আমাদের সদস্যরা ৯ ফেব্রুয়ারী মাত্র এক দিনের ব্যবধানে উদ্ধার করেছে ৮ লক্ষ ইয়াবা। যার মূল্য ২৪ কোটি টাকা। তিনি আরো বলেন, সীমান্ত এলাকা এই টেকনাফ থেকে যারা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী তাদেরকে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসতে পারলে আমাদের অভিযানের সফলতা আরো বাড়বে।
তবে স্থানীয় এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এই পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তাহলে আমরা মাদক পাচার প্রতিরোধ ও ইয়াবা ব্যবসায়ীদেরকে আটক করতে সক্ষম হব।
You must be logged in to post a comment.