মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা :
রয়েছে পর্যাপ্ত ছাত্র-ছাত্রী, কিন্তু নেই সেই পরিমাণ শ্রেণীকক্ষ, আসবারপত্র ও ভবন। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীর জায়গা না হওয়ায় মাঝে মাঝে বিদ্যালয় মাঠে ও গাছ তলায় চলে পাঠদান। ১লা জুলাই ২০১৩ইং সালে বিদ্যালয়টি সরকারী হলেও নেই কোন ভবন। এলাকার মানুষের নিজস্ব অনুদান ও সরকারী সামান্য বরাদ্দের টাকা দিয়ে কোন রকম একটি টিনশেড ঘরে ৩টি কক্ষে চলে বিদ্যালয় কার্যক্রম। গাদাগাদি করে ছোট শ্রেণী কক্ষে চলে পাঠদান। বৃষ্টি হলে বাধ্য হতে দিয়ে হয় বিদ্যালয় ছুঁটি। এমন জীর্ণ অবস্থা নিয়ে চলছে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের কম্পোনিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০০৭ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ২৫১ জন শিক্ষার্থী ও ৩জন শিক্ষক আছে বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের নামে রয়েছে এক একর পাহাড়ি জমি। পাহাড়ি এলাকার দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এসে বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে।
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আমেনা বেগম, আবুল কাসেম, মংক্যাহ্লা মার্মা এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টি অনেক জরাজীর্ণ। চারপাশের দেয়ালে বড় বড় ফাটল ধরেছে, জানালা গুলো ভাঙ্গা, বৃষ্টি হলে পানি পড়ে, আমাদের বসার বেঞ্চ ও টেবিল নাই, জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবন। আমরা সরকারকে বলছি, আমাদের বিদ্যালয়ে নতুন ভবন দেয়ার জন্য। ভাঙ্গা ও ছোট শ্রেণী কক্ষে আমাদের ক্লাস করতে ভাল লাগেনা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়াজকুরুনী বলেন, শিক্ষামূলক কর্মকান্ডে বিদ্যালয়টি এগিয়ে থাকলেও ভবন না থাকায় শ্রেণীকক্ষের অভাবে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, লামা উপজেলায় আমাদের বিদ্যালয়টি সবচেয়ে সুবিধা বঞ্চিত। স্কুলটি সরকারী হলেও সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা পায়নি। একটি ভবন পর্যন্ত নেই বিদ্যালয়ের। নতুন ভবন তৈরি, শ্রেণীকক্ষ সম্প্রসারণ, আসবাবপত্র, পয়নিস্কাষন ব্যবস্থার সমস্যা, পানীয় জলের নানা সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন জানান, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আশপাশে আর কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এ বিদ্যালয়ের পড়া-লেখার মানও ভালো। তবে বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা বিরাজ করছে। বিশেষ করে একটি ভবনের অতি প্রয়োজন। সমস্যা সমাধানে শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ কামনা করছি।
লামা উপজেলা শিক্ষা অফিসার যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, বিদ্যালয়ের নানান সমস্যার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কিন্তু নতুন ভবন না আসা পর্যন্ত কষ্ট করতে হবে সকলকে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণে সুপারিশ করা হবে।
You must be logged in to post a comment.