এম আবুহেনা সাগর; ঈদগাঁও :
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে পুরোদমে চলছে প্রতিমা ও পূজা মন্ডপ তৈরির কাজ। এবার বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা সাত ইউনিয়নে ছোট বড় ১৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার প্রতিমা শিল্পীরা। কাদামাটি খড়-কাঠ আর প্রতিমা নিয়েই দিন কাটছে তাদের। প্রতিমাও এর প্রত্যেকটির অনুষঙ্গ তৈরি, নিখুঁতভাবে কাজ ফুটিয়ে তুলতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ শিল্পীদের।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠি পূজার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ মহোৎসব শুরু হবে চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের উৎসব। প্রতিমা তৈরি শুরু হয়েছে অনেক আগে, কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন কেবল প্রতিমাগুলোর নকশা করা হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই তৈরি করা দুর্গার প্রতিমা গুলোতে রং লাগিয়ে সুসজ্জিত করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মরত শিল্পীরা।
এদিকে উৎসাহ উদ্দীপনা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গোৎসব নিয়ে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় চলছে সাঁজ-সাঁজ রব। পূজার আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে পুজারী থেকে শুরু করে কর্মব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা। আলোক সজ্জার সাথে মন্দিরে-মন্দিরে প্রতিমা শিল্পীর রঙ তুলির আছড়ে যেন জীবন্ত হয়ে উঠছে সুদর্শন প্রতিমাগুলো। সব মিলিয়ে প্রতিটি এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে মহা আনন্দের ছোয়া। তবে এক্ষেত্রে সকল আনন্দকে সর্বোত্তম জায়গায় এগিয়ে নিতে সর্বশেষ পরিশ্রম মূলে রয়েছে প্রতিমা তৈরীর শিল্পীরা।
প্রত্যেক শিল্পীর শুধু লক্ষ্য তৈরীকৃত প্রতিমার সৌন্দয্য বৃদ্ধি করে ভক্তদের আনন্দকে সার্থক করে তোলা। তাই শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতিতে যেন দম ফেলার ফুরসুত নেই তাদের। ঈদগাঁওতে ধর্মীয়স্থান হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করায় অধিকাংশ প্রতিমা তৈরী হয়ে থাকে বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে। তাই অন্য সব কাজ বাদ দিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে প্রতিটি কারিগরকে। আবার ক্ষেত্র বিশেষে শিল্পীর দক্ষতার সাথে প্রতিমার গুণগত মানে শ্রমের মূল্যও রয়েছে তফাৎ। দেশের নামী-দামী শিল্পীর দ্বারা প্রতিমাগুলো তৈরী হওয়ায় শ্রম মূল্যের সাথে আকর্ষনের তফাতে রয়েছে বহু মাত্রায় ফারাক। ফলে প্রতিযোগীতার মধ্য দিয়ে চলে শিল্পীর সর্বশেষ আঁছড়। কারণ সব শিল্পীর একটি লক্ষ্য নিজের শিল্প কর্মকে ভক্তের কাছে বেশী প্রশংসনীয় করে তোলা।
জৈনক এক প্রতিমা তৈরীর কারিগর জানান, জেলার অন্যন্য এলাকার তুলনায় ঈদগাঁওতে প্রতিমার রয়েছে নাম-ডাক। এ প্রতিমা তৈরীতে শ্রম দিতে হয় দোআশ, এটেল ও পলি মাটির সাথে শুকনো খড় ও খুঁটি ব্যবহার করে তৈরী হয় প্রতিমা। প্রতিমাগুলোর ধরন অনুযায়ী একেকটি প্রতিমার পেছন খরচ পড়ে হাজার হাজার টাকা। তবে এবার ঈদগাঁও কেন্দ্রীয় কালি মন্দিরের দূর্গা পুজার বাজেট রাখা হয়েছে ৫ লক্ষাধিক টাকা।
এ ব্যাপারে ঈদগাঁও কালী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট অশোক আচার্য্য জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ও উৎসাহ মুখর পরিবেশে এ দুর্গাৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
You must be logged in to post a comment.