মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
ভরাট চরে ফুটবল খেলে পানিতে নাইতে নেমে চোরাবালীতে আটকে ৫ ছাত্র নিহত হওয়ার মাতামুহুরী ট্রাজেডির পর থেমে নেই চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন। দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খবর পেলেই নদীসহ ছড়াখালে ছুটে যাচ্ছেন চোরবালি সৃষ্টির অন্যতম হাতিয়ার বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত শ্যালো মেশিন জব্দ করতে।
সোমবার ৬ আগস্ট দুপুরে উপজেলার হারবাং ছড়াখালে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত টিম। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মো.ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাতের নেতৃত্বে পুলিশ ও সরকারী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টিম। প্রশাসনিক অভিযান সত্বেও কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি বিভিন্ন এলাকার নদী-ছড়া থেকে এবং পাহাড়ি ঝিরি থেকে বালু আহরণ করে লাখ-লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মো.ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত বলেন, সোমবার দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত হারবাং এলাকার ছড়াখালে অভিযান চালাই। এসময় ইজারা না নিয়ে হারবাং ১ ও ২ পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়। ভ্রাম্যমাণ আদালত টিমকে দেখে সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যায়। ৩ নং পয়েন্টে ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করছে দাবী করলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অফিসে তলব করা হয়েছে। শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠায় তার কাছ থেকে অঙ্গিকারনামা নেয়া হবে মেশিন না বসাতে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে জড়িতেদেরও ভূমি অফিসে হাজির করাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত শনিবার বাটাখালী ব্রীজ পয়েন্টে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। ওইসময় সংশ্লিষ্টরা মেশিন নিয়ে পালালেও কিছু পাইপ জব্দ করা হয়। এর আগে মাতামুহুরী নদীর ব্রীজ পয়েন্ট থেকে তিনটি শ্যালো মেশিন ও পাইপ জব্দ করা হয়।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমানের নেতৃত্বে খুটাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছড়াখাল থেকে বালু ৪জনকে আটক করে ১মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এরপরও মাতামুহুরী নদীর বাঁশঘাটা, ঘুনিয়া, বেতুয়া বাজার ও বাটাখালী ব্রীজ পয়েন্ট, বাঘগুজারাসহ মাতামুহুরী নদীর অন্তত ৩০ স্থানে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। একইভাবে হারবাং ছড়াখাল, সোনাইছড়ি, খুটাখালীসহ ৭টি ছড়াখালের বিভিন্ন স্থান থেকে বালু তুলে বাণিজ্য করছে অসাধু কতিপয় ব্যক্তি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান ও উপজেলা সহাকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত অভিন্ন বক্তব্যে বলেন, নদী ও কোন ছড়াখাল থেকে অবৈধভাবে কাউকেই বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবেনা। যেখানে বালু উত্তোলন হবে সেখানে অভিযান চলবে। যারাই অবৈধভাবে বালু বাণিজ্য করবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
You must be logged in to post a comment.