অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সভিউ:
কোনো রকম ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই কক্সবাজার আসছে মিয়ানমারের গরু, মহিষ, ছাগল। এসব পশু কতটা স্বাস্থ্য সম্মত তা নিয়ে সন্দিহান স্থানীয় ক্রেতারা। দেশীয় গৃহপালিত গরু সারা বছর ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে থাকে বলে, মিয়ানমারের গরুর পরিবর্তে দেশীয় গরু কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন করিডোর দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই দেশের ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে গরু, মহিষ ও ছাগল। এসব পশু স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহও করা হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলার করিডোর ব্যবসায়ীরা জানান, সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারির পর মিয়ানমার থেকে পশু আনার বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে টেকনাফ ইউএনও সেলিনা কাজি বৈঠক করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে একটি অঙ্গীকারনামাও নেন। অঙ্গীকারনামা অনুযায়ী পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া দেশের ভেতরে কোনো পশু প্রবেশ করানো হবে না। কিন্তু চিকিৎসক টিম প্রতিনিয়ত থাকেন না। সপ্তাহে তিন দিন তারা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। মূলত চিকিৎসক না থাকার কারণেই পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো সম্ভব হয় না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে করিডোর এলাকায় দেখা যায় মিয়ানমার থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীর কাছে ২০০টি গরু, ৫৫টি মহিষ ও ৩০টি ছাগল এসেছে। পশুগুলো ট্রলার থেকে নামানোর পর করিডোরে খোলা জায়গায় রাখা হলেও সেখানে কোনো চিকিৎসককে দেখা যায়নি।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, চিকিৎসকরা প্রতিটি পশুর কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন না। কোনো পশু অসুস্থ দেখলে সেটিকে পরীক্ষা করেন মাত্র।
কয়েক বছর আগেও গরু মোটাতাজা করতে ইনজেকশন এবং ট্যাবলেট ব্যবহার করতেন কৃষক ও খামারিরা। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। দেশীয় পদ্ধতিতেই গরু মোটাতাজা করছেন তারা। পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার সাক্ষ্য দিচ্ছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরাও।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশীয় ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করতে খামারীদেরকে সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
কৃত্রিম পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা গরু হাটে আসছে কি না, তা পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়েছে ক্রেতারা।
এদিকে কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নন্দন কুমার চন্দ বলেন, করিডোর দিয়ে যে সকল গুরু আসছে, সেগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য করিডোর এলাকা মেডিকেল টিম রয়েছে। তবে চোরাই পথে যেসব পশু কক্সবাজারে আসছে, সেসকল পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই প্রবেশ করছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে কক্সবাজারের পশুর হাট গুলোতে আসা স্বাস্থ্য পরীক্ষাহীন গরু ক্রয়ে চিন্তার মধ্যে রয়েছে বলে জানান স্থানীয় ক্রেতারা। এবিষয়ে প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানোর দাবীও জানা তারা।
You must log in to post a comment.