এস.এম.ছগির আহমদ আজগরী, পেকুয়া:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় গ্রাম পুলিশের বনায়ন জবর দখল পাঁয়তারার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘঠেছে, উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বনবিট এলাকায়। ভুক্তভুগী বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারইয়াকাটা এলাকার মৃত মৃত সিরাজুল হকের পুত্র স্থানীয় গ্রাম পরিষদের চৌকিদার নুর মোহাম্মদ পুতু সাংবাদিকদের জানান, চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জের অথীন বারবাকিয়া বনবিট কর্তৃপক্ষ ২০০৮-০৯ইং সনে ১০.০হেক্টর জায়গা বনায়ন সৃজন করে। এর রক্ষনাবেক্ষনে ২৫জন উপকারভোগী নিযুক্ত করেন।
ভুক্তভুগী গ্রাম পুলিশ নুর মোহাম্মদ পুতুকেও ওই বনায়নের ১জন উপকারভোগী হিসাবে তালিকাভুক্ত রাখা হয়। একপর্যায়ে সেখানে বনায়নের জায়গা জবর দখলের হিড়িক দেখা দিলে উপকারভোগী গ্রাম পুলিশ তার বনায়ন রক্ষায় ওই সামাজিক বনায়নে পাহাড়াঘর বসিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস আরম্ভ করে। পরে, কর্মব্যস্ততার কারণে বনায়নের জায়গায় তার বসবাস কঠিন হয়ে দাড়ালে সে তার পরিচিত অস্থায়ী গ্রাম পুলিশ হারুনের এক নিকটাত্মীয় হিসাবে পরিচিত বাশখালী উপজেলার ছনুয়া গ্রামের নবী হোসনের পুত্র মোঃ আসহাব উদ্দিনকে পাহাড়াদার হিসাবে নিযুক্তি দিয়ে পরিবার নিয়ে গ্রাম পুলিশের বনায়নের জায়গায় বসবাসের অনুমতি দেন। যা নিয়ে দু’জনের মধ্যে রয়েছে একটি শর্ত স্বাপেক্ষের মুছলেখা চুক্তিপত্র। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নিযুক্ত পাহাড়াদার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে গ্রাম পুলিশের বনায়নের গাছ কর্তন, পাঁচার ছাড়াও জমির শ্রেনী পরিবর্তনে মাতেন। এনিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে বনায়ন মালিক গ্রাম পুলিশ পাহাড়াদার আসহাব উদ্দিন ও তার পরিবারকে বিবাদী করে বারবাকিয়া গ্রাম পরিষদে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৮১/১৫। গ্রাম আদালত তার রায় গ্রাম পুলিশের পক্ষে দেয়।
পরে, গত ঈদুল আযহার কোরবানী ঈদের কয়েকদিন পর গত শনিবার পাহাড়াদার আসহাবউদ্দিন গ্রাম পুলিশের বনায়নের গাছ কেটে পাঁচার ছাড়াও পাহাড়ের টিলা কেটে জমির শ্রেনী পরিবর্তনে মাতেন। এসংবাদ পেয়ে ভুক্তভুগী গ্রাম পুলিশ নুর মোহাম্মদ পুতু অস্থায়ী গ্রাম পুলিশ হারুনকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
পরিদর্শনকালে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তারা পাহাড়াদার আসহাবউদ্দিন ও তার লোকজনকে বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাহাড়াদার আসহাবউদ্দিনের পরিবারের লোকজন তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় ভুক্তভুগী গ্রাম পুলিশ নুর মোহাম্মদকে পিঠিয়ে মাটিতে লুটিয়ে দেয় এবং চৌকিদার হারুনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে হামলাকারীরা। পরে, তাদের শৌর চিৎকারে পাড়ালিয়া লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করান।
এঘটনার জের ধরে ভুক্তভুগী গ্রাম পুলিশ বাদী হয়ে ঘটনায় জড়িতদের নামোল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। যা বর্তমানে পেকুয়ায় থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। কিন্তু একইদিনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে পাহাড়াদার আসহাবউদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে চকরিয়া জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ভুক্তভুগী গ্রাম পুলিশ ও তার সহকর্মী হারুন রশীদের নামোল্লেখ করে হয়রানীমুলক আরেকটি পাল্টা মামলা দায়ের করেন। যাও দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের তদন্তে।
এদিকে, পাল্টাপাল্টি এ মামলার জের ধরে গ্রাম পুলিশের চুক্তিভিত্তিক নিযুক্ত পাহাড়াদার বহিরাগত আসহাবউদ্দিন ভুক্তভুগীর মালিকানাধীন বনায়ন স্বত্বটি জবর দখলের পাঁয়তারায় মেতেছেন জানিয়ে ঘটনার ন্যায় প্রতিকার কামনা করেছেন। পেকুয়া থানার ওসি মোঃ আবদুর রকিব গ্রাম পুলিশের আদালতে দায়েরকৃত মামলা পুলিশের হাতে তদন্তাধীনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
You must be logged in to post a comment.