নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া
উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পুলিশ বার বার অভিযান চালিয়ে বালি বোঝাই ট্রাকসহ বালি উত্তোলনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করলেও ঠেকানো যাচ্ছে না খাল ছরা থেকে নির্বিচারে বালি উত্তোলন ও পাহাড় কেটে মাটি পাচার বাণিজ্য। অবৈধ উপায়ে বালি উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে খালের ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে ফসলী জমি ও বসতবাড়ি।
সূত্রে জানা গেছে, নদীমাতৃক এ উপজেলার দোছরী খাল, বালুখালী পান বাজার, থাইংখালী ও পালংখালীসহ ৪টি খাল থেকে বৈধ উপায়ে সরকারি রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে বালি উত্তোলন করা হলেও পালংখালী, গয়ালমারার ঢালা, জামতলী, বালুখালী টিভি টাওয়ার, কুতুপালং, কচুবনিয়া, মাছকারিয়া খাল, ফলিয়াপাড়া, গয়ালমারা, রত্নাখাল, তুলাতলী, হলদিয়া পাতাবাড়ী খাল, মরিচ্যা, পাগলির বিল খাল, সেতুনি পাড়া, পাইন্যাশিয়া, জুম্মাপাড়া, সোনাইছড়ি, মনখালী, চেংছরী ও রেজু খালের বিভিন্ন স্পটসহ প্রায় ১৫টি খাল থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে।
সম্প্রতি কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের অভিযোগে ১৭ জনকে আসামী করে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও, ঠেকানো যাচ্ছে না বালি উত্তোলন ও পাহাড় কেটে মাটি পাচার বাণিজ্য।
এ উপজেলার খরস্রোতা রেজু খাল থেকে অব্যাহত বালি উত্তোলনের ফলে শত শত বসত বাড়ি ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিল্লোল বিশ্বাস রেজু খাল থেকে বালি উত্তোলন বন্ধ করলেও আশেপাশের অন্যান্য খাল ছরা থেকে নির্বিচারে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। উখিয়া ভূমি অফিসের নবাগত সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুর উদ্দিন মুহাম্মদ শীবলি নোমান কর্মস্থলে যোগদান করার পরপরই গোপন সূত্রের সংবাদের ভিত্তিতে জালিয়াপালং ইউনিয়নের ছেপটখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে বালি উত্তোলনে ব্যবহৃত একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করেছে। সরেজমিন পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী টিভি টাওয়ার সংলগ্ন তেলীপাড়া খাল ও বালুখালী পান বাজারের উত্তরে সড়ক সংলগ্ন ছরা থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ কাজে সরবরাহ করছে। জানতে চাওয়া হলে বালি উত্তোলনকারী নুরুল আমিন ভুট্টো জানান, সে ডিসিআর কেটে বৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে।
একই ওয়ার্ডের ইউ,পি, সদস্য ফজলুল কাদের ভুট্টো জানান, তার কোন বৈধতা নাই। সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে বালি উত্তোলন করে পাচার করছে। এভাবে প্রায় ১৫টি খাল, ছরা থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে সরকার প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুর উদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান জানান, অবৈধভাবে বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যে কোন সময়ে ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে বালি বহনকারী ট্রাক সহ বালি উত্তোলনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, মালামাল জব্দ করা হবে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, বালি উত্তোলন ও পাহাড় কেটে মাটি পাচারের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেল তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কোন প্রকার কার্পন্যতা করা হবে না।
You must be logged in to post a comment.