কক্সবাজার শহরের হাসপাতাল সড়কে কতিপয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যূ ডাঃ হাসান মুরাদ গং কর্তৃক প্রশাসনকে ব্যবহার করে হিন্দু সম্প্রদায়ের শতবছরের পুরনো ভোগ দখলীয় বসত বাড়ী (দেবত্তর সম্পত্তি) উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৯ জুলাই দুপুর ১২টার সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসত বাড়ী উচ্ছেদ করতে গেলে কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর ও স্থানীয় ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার জাবেদ মোঃ কাইছার নোবেল সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গে অনুরোধের প্রেক্ষিতে উচ্ছেদ কার্যক্রম আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের ব্যস্ততম এলাকা হাসপাতাল সড়কের হিন্দু সম্প্রদায়ে লোকজনের কক্সবাজার মৌজার অর্পিত সম্পতি আইন এর গেজেটভুক্ত জমিতে শতবছর যাবত বসত বাড়ী উপলক্ষ্যে ভোগ দখলে করে আসছিল। বেশ কিছু দিন পূর্বে একই জমিতে জনৈক হাসান মাষ্টার আংশিক জমির দখল স্বত্ব ক্রয় করেন। এর পর হতে পুরো জায়গাটি ওই হাসান মাষ্টারের ছেলে ডাঃ হাসান মুরাদ নামক ব্যক্তি তার নামে বন্দোবস্তী গ্রহন করেছেন মর্মে বলে ৯ জুলাই দুপুর ১২টার সময় হাসপাতাল সড়কস্থ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বসত বাড়ী ভাংচুর ও নারী পুরুষদের গ্রেফতার করার হুমকি দিয়ে অর্পিত সম্পতি আইন এর গেজেটভুক্ত ওই জায়গা হতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনেক উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়। এসময় কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর ও স্থানীয় ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার জাবেদ মোঃ কাইছার নোবেল সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে অনুরোধ করলে, তা আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে সময় দিয়ে চলে আসেন।
এই বিষয়ে হিন্দু নেতা ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, ওই জায়গা হিন্দু সম্প্রদায়ের শতবর্ষী বসত বাড়ী। তাছাড়া ওই জায়গা ইতিপূর্বে অর্পিত সম্পত্তি আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে উক্ত মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাই এই জমি অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রশাসন লিজ কিংবা বন্দোবস্তী প্রদান করার কোন সুযোগ নেই। হয়তো প্রশাসনকে মিথ্যাতথ্য দিয়ে এবং প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অবৈধ বসে নিয়ে বন্দোবস্ত হাসিল করেছে। যা কখনো আইন সম্মত হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, যদি উক্ত জায়গায় ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা প্রদান করার না হয়, তবে যে কোন মুহুর্তে একটি সাম্প্রদায়িক সংঘাত সহ যে কোন রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ হতে পারে। তাই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের শতবর্ষী বসতবাড়ী উচ্ছেদ করার চেষ্টার প্রতিবাদে ৯জুলাই বিকাল ৪টায় কক্সবাজার শহরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিছিলোত্তর প্রতিবাদ সমাবেশ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মার সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক দাশ এর সঞ্চালনায় পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ কক্সবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দন শর্মা, জেলা যুবলীগ সহ-সভাপতি শহিদুল হক সোহেল, ডাঃ পরিমল কান্তি দাশ, এডভোকেট বাপপী শর্মা, সাংবাদিক বলরাম দাশ অনুপম প্রমুখ। হিন্দু নেতৃবৃন্দরা বলেন, আগামী ১২ জুলাইয়ের মধ্যে এই বিষয়ে প্রশাসনিক কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে, সারা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন কঠোর কর্মসূচী গ্রহন করবেন।
You must be logged in to post a comment.