সিম ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধ কমাতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালায়। উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সিম ব্যবহারকারীর পরিচয় সুনিশ্চিত করণের। শুরু হয়েছে অবৈধ সিম সনাক্তকরণ ও জাতীয় পরিচয় পত্রের অধীনে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া। কয়েকটি ধাপে এই প্রক্রিয়ার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম ধাপে সবগুলো মোবাইল অপারেটরের সরবারহ করা ৫৭ লাখ সিম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ বা ৪০ লাখ ভুয়া, নিবন্ধনহীন ও জাল কাগজপত্র দিয়ে নিবন্ধনের প্রমাণ মিলেছে।
এনআইডি তথ্য মতে আরও জানা যায়, ভুয়া নিবন্ধনের মাত্র এতটাই বেশি যে শুধু একটি এনআইডি দিয়েই ৬ হাজার ৮৫৮টি সিম নিবন্ধন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এনআইডি নম্বরটি হলো ‘১৯৮৪৪৪২৫৮৮৩৬৯৮৭১২’। এর বাইরে ৫০টি জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে গড়ে ২,০০০টি সিম নিবন্ধিত হয়েছে। আর এই অবৈধ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ফেঁসেছে গ্রামীণফোন।
আর এমন তথ্যে রীতিমত ভরকে গেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, আইন শৃঙ্খলা সংস্থা এবং মন্ত্রণালয়। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নতুন করে সিম নিবন্ধনের পক্রিয়া হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার।
জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য ব্যবহারে অপারেটর ও এনআইডি কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিদ্যমান জটিলতা দূরিকরণের মাধ্যমে সমস্যা নিরসনে জন্য মঙ্গলবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এর সাথে বৈঠকে বসবেন টেলিকম অপারেটরদের প্রধান নিবার্হী বা কর্মকতারা। প্রতিমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত বা জটিলতা নিরসন করা হবে।
এদিকে বর্তমান মোবাইল নম্বর অপরিবর্তিত রেখেই অপারেটর বদলের সুবিধা চালুর নীতিমালায় অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানিয়েছে অনুমোদনের কপি রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এসে পৌঁছেছে। এই সুবিধার ফলে পছন্দ না হলে বা প্রয়োজন অনুযায়ী নম্বর ঠিক রেখে পরিবর্তন করে নেয়া যাবে অপারেটর।
দেশে মোট ১২ কোটি ৮৭ লাখ ৬৯ হাজার মোবাইল ফোন গ্রাহক রয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি সিমগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চলবে। বর্তমানে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়াতে প্রথম পর্যায়ে গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে না। প্রথমে বাল্ক ভেরিফিকেশন করা হবে। অপারেটরগুলোর তথ্য এনআইডি কর্তৃপক্ষ মিলিয়ে কোন সিম সঠিকভাবে নিবন্ধিত এবং কোনটি সঠিকভাবে নয়, তা মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসিকে জানাবে। একটি এনআইডির তথ্য গ্রাহককে এসএমএস করে জানানো হবে। গ্রাহক রেসপন্স করলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। রেসপন্স না এলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মোট ২৭ লাখ ১১ হাজার ৩১৬টি সিম কার্ডের তথ্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগকে সরবারাহ করে ছয় মোবাইল অপারেটর। এরমধ্যে গ্রামীণফোন ২ লাখ ৭৫ হাজার, বাংলালিংক ২ লাখ ৫৫ হাজার, রবি ১ লাখ ১১ হাজার ৬৮৬টি, এয়ারটেল ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৯৩৮টি, সিটিসেল ১ লাখ ৫৫ হাজার এবং টেলিটক ১ লাখ ৫৫ হাজর ৬৯২টি সিমের তথ্য সরবরাহ করে।
– বিবিসি/নতুনবার্তাডটকম,ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.