সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / তথ্য ও প্রযুক্তি / অনুসন্ধানী প্রতিবেদন- আমরা মা-বাবা যেন সত্যি সন্তানের কাছে জিম্মি হয়ে আছি

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন- আমরা মা-বাবা যেন সত্যি সন্তানের কাছে জিম্মি হয়ে আছি

 

হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :

স্কুল কলেজ পড়ুয়া টিনেজদের হাতে এখন স্মার্ট ফোন। ফেসবুক ব্যবহার করতে করতে এখন নেশায় পরিনত হয়েছে তাদের। মোবাইলে থাকে বিভিন্ন ধরনের অফার। অনেক সময় টিনেজরা আবার ইন্টারনেটের বিভিন্ন মেগাবাইট অফারও গ্রহণ করে বিভিন্ন প্রকার ভিডিও ডাউনলোড করার জন্য। এক ব্যাংক কর্মকর্তা শাহ হোসেন আফসোস করে বলেন, আমার এক মেয়ে ফারহানা। ক্লাস সেভেনে পড়ে। বাসায় এলে আমার ফোনটি নিয়ে সে গাছের আড়ালে চলে যায়। মোবাইলে টাকা ঢোকানোর সাথে সাথে দেখি টাকা নেই। পরে খোঁজ নিয়ে দেখি আমি নাকি অফার গ্রহণ করেছি। অথচ আমি জানি না।

শাহ হোসেন জানান, আমার আরেক ছেলের ফেসবুক একাউন্ট আছে। প্রযুক্তির আসক্তির কারণে তাদের পড়াশোনার মনোযোগ তো গেছেই, এখন দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। নানা ধরনের অদ্ভুত আচরণ তারা করে। স্মার্টফোন, টাচস্ক্রিণ মোবাইল ঘরে ঘরে প্রবেশের পর টিভির প্রতি আকর্ষণ কমেছে অনেক শিশুর। স্মার্টফোন আর টাচস্ক্রিণ মোবাইলের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছোট্ট শিশুদের। দুই বছরের শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী শিশু-কিশোর ও তরুণদের কাছেও তীব্র আকর্ষণীয় স্মার্টফোন ও টাচস্ক্রিন মোবাইল। বাসায় থাকা বড়দের এসব ফোনের মাধ্যমে শিশুরা আকৃষ্ট হয় এসব ফোনের প্রতি। বাস্তবে দেখা গেছে, তারা এসব ফোনের মালিক না হলেও বাসায় থাকা এসব ফোন অধিকাংশ সময় তাদের দখলেই থাকে।

উখিয়াসহ কক্সবাজার শহরের বন্দি বাসায় দুষ্টু শিশুদের শান্ত রাখতে অনেক সময় মা বাবা নিজেই ছোট্ট শিশুদের হাতে তুলে দেন মোবাইল। মোবাইল হাতে পেলে বন্ধ হয়ে যায় তাদের সব ছোটাছুটি আর দুষ্টুমি। এক মনে শান্ত হয়ে মোবাইল নিয়ে তারা পার করে দিতে পারে ঘন্টার পর ঘন্টা। আর ব্যস্ত মা-বাবাও অনেকটা হাঁফ ছেড়ে রক্ষা পায় এবং করতে পারেন তাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাজ। কিন্তু শিশুদের শান্ত আর ব্যস্ত রাখতে গিয়ে তাদের হাতে মোবাইল তুলে দেয়াই একপর্যায়ে কাল হয়ে দাড়াঁয় তাদের জন্য। ধীরে ধীরে মোবাইলের প্রতি আসক্তি গড়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে তা তীব্র আকার ধারণ করে। পরবর্তীতে এটি ছাড়া আর চলে না তাদের। হাত থেকে কেড়ে নিলেই শুরু করে কান্নাসহ আক্রমাণাত্মক আচরণ। এরপর এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে মা-বাবা বাধ্য হয়ে আবার তাদের হাতে তুলে দেন মোবাইল। এভাবে কখন যে মা-বাবা ছোট্র সন্তানের কাছে নিজেকে জিম্মি করে ফেলেন তা তারা টেরও পান না।

শামীমা নামের এক প্রবাসির স্ত্রী জানান, আমার বড় ছেলে ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। বায়না ধরে দামি মোবাইল কিনে দিতে। ছেলের আবদার রাখতে মোবাইল কিনে দেয়া হলো। এখন সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে থাকে। মোবাইল রেখে পড়াশুনার কথা বললে বিরক্ত হয় সে। এক পর্যায়ে ছেলেকে বকা দিলে রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আর বাড়ি ফিরবে না বলে হুমকি দেয়। উপায়ান্তর না দেখে বিদেশে ফোন করে তার বাবাকে ছেলের এই অবস্থার কথা জানায়। বাবা বিদেশ থেকে ছেলেকে ফোন করে অনেক বুঝিয়ে বাড়ি ফেরায়। আমরা মা-বাবা যেন সত্যিই ছেলের কাছে জিম্মি হয়ে আছি। এই অবস্থার পরিত্রাণের উপায় খোঁজে বের করতে হবে।

 

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/05/Khorshida-Jannat-Sagar-14-5-224.jpeg

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফাহমিদা বেগমের সাথে ঈদগাহ হাই স্কুল প্রধান শিক্ষকের সাক্ষাৎ 

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, কক্সবাজারের উপ-পরিচালক ফাহমিদা বেগমের সাথে ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/