সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / প্রাকৃতিক ও পরিবেশ / আলীকদমে পাহাড় কেটে ও বনের কাঠ পুঁড়িয়ে ইটভাটা

আলীকদমে পাহাড় কেটে ও বনের কাঠ পুঁড়িয়ে ইটভাটা

আলীকদমে ইটভাটায় পুড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ।

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় নির্বিচারে পাহাড় কেটে ও বনের কাঠ পুঁড়িয়ে তিনটি ইটভাটায় ইট তৈরীর প্রক্রিয়া চলছে। ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩’ না মেনে ইটের জন্য পাহাড় কেটে মাটি নেওয়া হচ্ছে এবং ইটপোড়ানোর জন্য সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের কাঠ কাটা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, আলীকদমে স্থাপিত তিনটি ইটভাটার কোনটারই বৈধতা নেই। তারপরও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে চলছে প্রতিবছর অবৈধ ইটের ভাটায় লাকড়ি পোড়ানো ও পাহাড় কেটে ইট তৈরী। ইতোপূর্বে উপজেলা পরিবেশ ও বন কমিটির সভায় ব্রিকফিল্ডগুলোতে কাঠ পোড়ানোর বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন হয়নি।

পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, উপজেলার পূর্ব পালং পাড়া ও আমতলী এলাকায় ২টি ভাটায় ড্রামসিট চিমনী দিয়ে ইটভাড়া গড়ে তোলেছে।

অপরদিকে, তারাবুনিয়ায় আরেকটি ইটের ভাটা রয়েছে। এসব ইটের ভাটায় লাকড়ি পরিবহনের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো সারাবছরই ক্ষতবিক্ষত থাকে। ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট ভেঙ্গে জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগ চরমে উঠে। রাস্তাঘাট ধূলায় একাকার হয়ে সর্বসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

ইটের ভাটায় অবৈধভাবে আহরিত লাকড়ির যোগান দিতে গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠা হয়েছে কথিত ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি। এ সমিতির মাধ্যমে প্রতি মণ লাকড়ি প্রতি নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তোলা হয়। সে চাঁদার ভাগ যায় বিভিন্ন ঘাটে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ এর ৬ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানী হিসেবে কোন জ্বালানী কাঠ ব্যবহার করতে পারবেন না’। এ আইন অমান্য করলে ‘অনধিক ৩ বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দন্ডিত হইবেন’ মর্মে এ আইনের ১৬ ধারায় বলা হয়েছে।

একই আইনের ৪ ধারায় উল্লেখ আছে ‘জেলা প্রশাসকের নিকট হতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করতে পারবেন না’। ৫নং ধারায় বলা আছে, ‘কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা হতে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল ব্যবহার করা যাবে না’। এছাড়াও ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা বা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাঁচামাল পরিবহন করা যাবে না’ মর্মে আইনে উল্লেখ আছে।

আইন অনুযায়ী পার্বত্য জেলায় ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে, পার্বত্য জেলার পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্যকোন স্থানে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে ১ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে এবং ইউনিয়ন সড়ক হতে আধা কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবেনা।

লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বন বিভাগের অনুমতি ব্যতীত সরকারী বনাঞ্চলের সীমারেখা হতে ২ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করার সুযোগ নাই কিন্তু তা না মেনে ইটভাটা তৈরি করা হয়েছে।

আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজিমুল হায়দার বলেন, আলীকদমে কোন ইট ভাটার লাইসেন্স নেই। শীঘ্রই অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/05/Election-Sagar-16-5-24.jpeg

ঈদগাঁওতে প্রজাপতি প্রতীকের মেহেনূর আক্তার পাখির প্রচারণা চলমান

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও : কক্সবাজারের নবসৃষ্ট ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে মহিলা ভাইস ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/