সাম্প্রতিক....
Home / জাতীয় / ঐক্যফ্রন্ট: বিএনপি আউট, বামফ্রন্ট ইন?

ঐক্যফ্রন্ট: বিএনপি আউট, বামফ্রন্ট ইন?

বিএনপির ব্যাপারে আরো কঠোর হচ্ছে কূটনৈতিকরা। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে বিএনপিকে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে শর্তগুলো দিয়েছে, তা পূরণ না হওয়ায় উল্টো বিএনপির উপর অসন্তুষ্ট কূটনৈতিক মহল। ঈদের ছুটিতে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে অন্তত তিনটি দেশের রাষ্টদূত সাক্ষাৎ করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ঐ সাক্ষাতে ড. কামাল হোসেনকে ঐক্যফ্রন্টকে শক্তিশালি এবং পুনর্গঠনের ব্যাপারে তাগদা দেওয়া হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন।

ঐক্যফ্রন্টের বিএনপিতে থাকা না থাকা নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারেও ড. কামাল হোসেনের মনোভাব জানতে চেয়েছে কূটনৈতিকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে জামাতকে না ছাড়ে এবং বিএনপিতে যেসমস্ত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসে বিশ্বাসি নেতৃত্ব আছে তাদেরকে যদি সরিয়ে না নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিএনপিকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এরফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা নতুন মেরুকরণ তৈরী হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিএনপিকে বাদ দিয়ে বামফ্রন্ট, ১৪ দলীয় শরিকদের নিয়ে একটা বৃহত্তর সেকুলার গণতান্ত্রিক মোর্চা গড়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছেন। এ ব্যাপারে ড. কামাল হোসেন উদ্যোগ শুরু করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বাম মোর্চার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে বাম মোর্চা থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা উদার গণহতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্য করতে আগ্রহী কিন্তু কোন সাম্প্রদায়িক বা মৌলিক ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে কোন অবস্থাতেই ঐক্য করবে না। এই প্রেক্ষিতেই ঐক্যফ্রন্টের মেরকরণের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি, যেহেতু ২০ দলীয় ঐক্যজোট এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়নি। সেই জন্য বিএনপি শেষ পর্যন্ত যদি ঐক্যজোটের সঙ্গে থাকে এবং জামাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ না করে, তাহলে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিএনপিকে সরে যেতে হবে। ড. কামাল হোসেন ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন বলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসি একটি সেকুলার রাজনৈতিক মোর্চা হিসেবে বিকশিত হতে চায়।

আমরা ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনেও সুস্পষ্টভাবে বলেছিলাম, স্বাধীনতা বিরোধী জামাত শিবিরের সঙ্গে আমরা জোট করবো না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা হয়েছে সেটাতে আমাদের কোন হাত ছিল না। এখন বিএনপিকে বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটা দীর্ঘ মেয়াদি আন্দোলনের পরিকল্পনা আটছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বোধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অন্যদিকে বামফ্রন্ট থেকে বলা হচ্ছে যে, দেশ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তারা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে চায়, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ব্যাপারে তাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু রাজনৈতিক আদর্শ এবং চিন্তাচেতনার ঐক্য ছাড়া শুধুমাত্র ক্ষমতা বদলের জন্য ঐক্যে বামফ্রন্ট বিশ্বাসী নয়।’ মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, বামফ্রন্ট তাদের সঙ্গেই ঐক্যবদ্ধ হবে।

তাদের নীতি এবং আদর্শের মিল রয়েছে। এক্ষেত্রে যদি শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিএনপি চলে যায়, তাহলে বামফ্রন্ট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ১৪ দলীয় জোট থেকে আওয়ামী লীগ বাদে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সাম্যবাদী দলসহ আরো কয়েকটি দল ঐক্যফ্রন্টে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ১৪ দলের যে শরিকরা অবহেলিত হচ্ছেন, যারা আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় ঠাই না পেয়ে হতাশায় ভুগছে, তারা সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা বা বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রতিবাদ জানানোর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এর অংশ হিসেবেই ১৪ দলের শরিকরা একটা ভিন্ন মেরুকরণের বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ১৪ দলের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ১৪ দর বিলুপ্তির কোন সম্ভাবনা নেই। ১৪ দল সক্রিয় করার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের। আমরা আশা করি আওয়ামী লীগ যে সেটা করবে। মুখে এমন কথা বললেও ১৪ দলের মধ্যে চাওয়া না পাওয়ার কষ্ট যে তীব্র হচ্ছে, সেটা বোঝা যায়। যদি শেষ পর্যন্ত ১৪ দলের শরিকদের মর্যাদা এবং সম্মান না দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে ১৪ দলের ভাঙ্গন খুব দূরে নয় বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো, বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট এবং ১৪ দলের উদার গণতান্ত্রিক সেকুলার রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে বাংলাদেশে নতুন একটি মেরুকরণের সম্ভাবা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তবে ঠিক কবে কিভাবে এটি হবে, সেটি দেখার বিষয়। যদিও অনেকে মনে করছেন, ঈদের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বাজেটকে ঘিরে গণতান্ত্রিক প্রগৌতশীল রাজনৈতিক দলগুলোর একটি ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে ঐক্যফ্রন্টের কলেরবর বাড়তে পারে। বেড়ে একটা নতুন রুপে ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ করতে পারে বলে একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে।

সূত্র:deshebideshe.com-ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

চলতি বছরের ফিতরা কত, জানাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন https://coxview.com/islam-zakat-2/

চলতি বছরের ফিতরা কত, জানাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  অনলাইন ডেস্ক :এ বছর দেশে ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/