মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ছয় ইউপিতে শনিবার অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে সবকটিকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংশ্লিষ্ঠরা। আর এসব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা।
বিএমচর ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তাঁর ইউনিয়নে ছয়টি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। কেন্দ্র গুলো হল ছৈনম্মারঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বহদ্দারকাটা মাদ্রাসা, বহদ্দারকাটা উচ্চ বিদ্যালয়, বেতুয়াবাজার আল ইমাম মাদ্রাসা ও জাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব কেন্দ্রে নিরাপত্তা বাড়াতে প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।’
বদরখালী ইউপিতে আওয়ামীলীগের ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আ.ন.ম হেফাজ সিকদার বলেন, বদরখালী কলেজ কেন্দ্রসহ ৬টি ভোটকেন্দ্র চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এসব কেন্দ্রে নিরাপত্তা বাড়াতে না পারলে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এ ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী আহসানুল কাদের চৌধুরী বলেন, তাঁর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হামেদিয়া কাদেরিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জব্বরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বদরখালী কলেজ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনকে এসব কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে।
ঢেমুশিয়া ইউপির বিএনপির প্রার্থী নুরুল আলম বলেন, ‘আওয়ামীলীগের লোকজন পাঁচটি ওয়ার্ডের ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছেন। তাঁর ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মুছারপাড়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, ২ নম্বর ওয়ার্ডের জিন্নাত আলী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হীড বাংলা সাইক্লোন সেল্টার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৎস্যজীবী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আম্মারডেরা মহসনিয়া দাখিল মাদ্রাসা। এসব কেন্দ্রে সকাল ১০টার মধ্যে ভোট শেষ হয়ে যাবে বলে প্রচার করছেন আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা।’
পূর্ব বড় ভেওলা ইউপির বিএনপির প্রার্থী আনোয়ারুল আরিফ বলেন, তাঁর ইউনিয়নের সব ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এলাকায় টহল দিচ্ছেন। এতে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে ভোটারেরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
বিএমচর ইউনিয়নের বেতুয়াবাজার এলাকার ভোটার সোয়াইবুল ইসলাম বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে এলাকা ভর্তি করছেন। একারণে অন্যান্য প্রার্থীসহ ভোটারদের মনে ভোটের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শনিবার চতুর্থ দফায় চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলা, ঢেমুশিয়া, পূর্ব বড় ভেওলা, বদরখালী, কোনাখালী ও বিএমচর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৫৪টি। এরমধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১০টি। অন্য ৪৪টি কেন্দ্রকে শুধু ঝুঁকিপূর্ণ দেখানো হয়েছে।
কক্সবাজারের সহকারি পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল-চকরিয়া) মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবে, তাতে কারও মনে শঙ্কা থাকার কথা নয়। প্রার্থীরা যেসব ভোটকেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, সেসব কেন্দ্রে বাড়তি নজরদারি থাকবে।’
You must be logged in to post a comment.