তীব্র খর তাপে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ যখন অস্থির ঠিক সেই মুহূর্তে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পেলো নতুন ছবি ‘আইসক্রিম’। একেবারেই নতুন তিনটি মুখ নিয়ে ‘চোরাবালি’ খ্যাত নির্মাতা রেদওয়ান রনির এ ছবিটি মুক্তি পেতে না পেতেই একপশলা বৃষ্টি এসে প্রকৃতিকে অনেকটাই স্নিগ্ধ করে তুললো। তাতে কী, শীত কিংবা গ্রীষ্ম বারো মাসই আইসক্রিমের কদর আছে। এ কারণেই আমরাও হাজির হয়েছিলাম রাজধানীর বলাকা প্রেক্ষাগৃহে, ‘কেমন চলছে আইসক্রিম’-তা দেখতে।
শুরু থেকেই বলা হচ্ছিলো আইসক্রিম তারুণ্যের ছবি। সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহূর্তে বলাকার সামনে পৌঁছেও তার প্রমাণ মিললো। ৩ টার শো তখনও শেষ হয়নি। টিকেট কাউন্টারের সামনে বেশ কয়েকজন তরুণ তরুণীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলাম। কারো কারো হাতে ‘আইসক্রিম’ এর টিকেট। তাদেরই একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান। বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে ছবি দেখতে এসেছেন। কিন্তু আইসক্রিম কেন? উত্তরে বললেন, ‘হলে এসে সাধারণত খুব একটা ছবি দেখা হয় না। কালে ভদ্রে আসি। এ ছবির পোস্টার দেখে ভালো লেগেছে। মনে হলো আমাদের মতো তরুণ-তরুণীদের কথা ভেবেই হয় তো এ ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে। তাই ক্লাস শেষে চলে আসলাম। ’
রায়হানের সঙ্গে কথা শেষ হতে না হতেই ৩ টার শো তখন শেষ হলো। গুটিগুটি পায়ে বেরিয়ে আসছেন দর্শক। সংখ্যায় খুব বেশি না হলেও, সবার চোখেমুখে ছিলো তৃপ্তির বর্ণচ্ছটা। এরই মধ্যে ছয়জনের একটি দলের দিকে এগিয়ে গেলাম। সবাই রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী। তাদের একজন আসিফ আইসক্রিম প্রসঙ্গে বলেলেন, ‘ছবিটা মূলত সাইকোলজিকাল প্রেমের গল্প। যা আমাদের দশটা বাংলা ছবিতে দেখা যায় না। আর একারণেই হয় তো ছবিটি আমার ভালো লেগেছে।’
পাশ থেকে তার আরেক বন্ধু আনিস বললো, ‘ছবিতে নাদিম নামে চরিত্র আছে। ওর অভিনয় দেখে মুখ থেকে সয়ংক্রিয় ভাবেই গালি চলে এসেছে। আর এটা হয়েছে ওর অভিনয় দক্ষতার জন্যেই।’
মিরপুর থেকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন নাদিয়া ও তার বন্ধু শরিফ। কাজ শেষে বলাকায় ঢুঁ মেরে দেখলেন ‘আইসক্রিম’ নামের ছবিটি চলছে। অমনি টিকেট কেটে বসে গেলেন। বেরিয়ে এসে নাদিয়া বললেন, ‘সময়টা মন্দ কাটেনি। অনেকদিন বাংলা ছবি দেখা হয় না। ছবিতে নায়ক উদয়ের একটি কান্নার দৃশ্য রয়েছে। ও টয়লেটে বসে কাঁদছে। যা দেখে আমার অতি পরিচিত একটি ঘটনা মনে হয়েছে। আসলে বাস্তব জীবনেরই গল্প।’
এদিকে বলাকা প্রেক্ষাগৃহের টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা আব্দুল হালিম জানান, আইসক্রিম দেখতে মূলত তরুণ তরুণীরাই বেশি আসছে। সেই সংখ্যাটা খুব বেশি নয়। তবে অনেক বাণিজ্যিক ছবির তুলনায় ভালো।’
অন্যদিকে ছবি প্রসঙ্গে নির্মাতা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘যারাই ছবিটি দেখছে, তারাই প্রসংশা করছে। আর এটাই আমার প্রাপ্তি।’
তিনি আরো বলেন, ‘গত কয়েকদিন আমরা বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দর্শকদের সঙ্গে বসে ছবিটি দেখেছি। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী যখন দর্শকরাও চিৎকার আর কড়তালি দিয়ে ছবির বিভিন্ন দৃশ্য উপভোগ করেছে। যার অধিকাংশই তরুণ। এরা যখন প্রেক্ষাগৃহে আসবে, তখনই বাংলা ছবির চেহারা পাল্টে যাবে।’
সূত্র:banglamail24.com
You must be logged in to post a comment.