বিশ্বের প্রথম ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ হোটেল তৈরি করলো চীন। একটি পরিত্যক্ত গর্তের মধ্যে নির্মিত হয়েছে বিলাসবহুল বহুতল এ হোটেল। ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল সাংহাই ওয়ান্ডারল্যান্ড’ নামে হোটেলটিতে রয়েছে ৩৩৬টি কক্ষ। ১৭তলা হোটেলের ১৫ তলাই মাটির নিচে। ৮৮ মিটার গভীর এবং থিম পার্ক সমন্বিত হোটেল নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।
চীনের সাংহাই শহরের কাছে পরিত্যক্ত পাথর কোয়ারিতে নির্মাণ করা হয়েছে মনোমুগ্ধকর বিলাসবহুল হোটেল ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল সাংহাই ওয়ান্ডারল্যান্ড’ চীনে সাহসী স্থাপত্য নকশার ক্রমবর্ধমান সংখ্যাগুলির মধ্যে এরইমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে হোটেলটি।
জলপ্রপাতের খাদের মধ্যে হোটেলের একটি পাশ খাদের দেয়ালের সঙ্গে মেশানো, আর অপর দিকটি জলপ্রপাতের দিকে উন্মুক্ত। ১৭তলা এই হোটেলে সাংহাই থেকে সড়কপথে প্রায় এক ঘন্টায় পৌঁছানো যাবে। বিস্ময়কর হোটেলটিতে থাকতে হলে খরচ শুরু হবে ৪৯০ ডলার থেকে।
শেশান মাউন্টেন রেঞ্জ, শেশান ন্যাশনাল ফরেস্ট পার্ক ও চেনশান বোটানিক গার্ডেনের কাছে অবস্থিত ৬১ হাজার বর্গমিটার দৈর্ঘ্যের রিসোর্টটি পরিবেশবাদী ভ্রমণকারীদের প্রাধান্য দিয়ে তৈরি হয়েছে। পরিবেশের ওপর যেন প্রভাব না পড়ে সেভাবেই হোটেলটির স্থাপত্যের পরিকল্পনা করা হয়। তাই বেশিরভাগ নির্মাণকাজ হয়েছে পরিত্যক্ত খাদের ভেতর। হোটেলতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয় নিজস্ব ভূ-তাপীয় ও সৌরশক্তি থেকে।
পাঁচ তারকা এ হোটেলটির মাঝখানে রয়েছে কৃত্রিম জলপ্রপাত। এছাড়া, নিচের দুটি তলা তৈরি করা হয়েছে পানির নিচে। যার বাইরেরটা দেখে মনে হবে বিশাল এক অ্যাকুরিয়াম। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে খাদের চারদিকে নির্মাণ করা হয়েছে বাঁধ। পানির স্তর নিয়ন্ত্রণে বসানো হয়েছে পাম্প হাউস। হোটেলটিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হলেও কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্যটকদের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে সব ব্যবস্থা।
শিমাও গ্রুপের আঞ্চলিক পরিচালক কেনেথ চান বলেন, ‘আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করবে। বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে যেন ভেতরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে সে দিকটি আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়েছি। এছাড়া, বন্যা ও ভূমিধস থেকে হোটেলটিকে রক্ষা করতে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।’
ইন্টারকন্টিন্যান্টাল সাংহাই ওয়ান্ডারল্যান্ড হোটেলের প্রধান স্থপতি মার্টিন জচম্যান বলেন, ‘কেন আমরা বলি যে কোয়ারি হোটেল প্রজেক্টের তুলনায় পৃথিবীতে আর কিছুই নেই? এটি একটি এমন প্রকল্প যা পুরোপুরি নতুন, এমন একটি প্রকল্প যা আমরা আগে কখনও সম্মুখীন হইনি। ভুলে যাওয়া, অব্যবহৃত কোনও সাইটে নতুন কী এমন করা যায় এবং একে নতুন জীবন দিতে কীভাবে কী করা যায় তা ঠিক করার ধারণাটাই অনবদ্য।’
এটি নির্মাণ করতে গিয়ে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে প্রকৌশলীদের। ২০১৩ সালে নির্মাণ শুরু হওয়ার আগে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি খাদে চলে আসে। এতে খাদের অর্ধেক পানির নিচে তলিয়ে গেলে হোটেল নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
সূত্র:somoynews.tv;ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.