গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
দীর্ঘ কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর টেকনাফ সাগর উপকূল ব্যাবহার করে মানবপাচারকারী দালাল চক্রের সদস্যরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের সেই অপচেষ্টার গোপন সংবাদ সংগ্রহ করে অবৈধ পথে মানবপাচার প্রতিরোধ করতে সীমান্ত প্রহরী টেকনাফ ২ বিজিবি সৈনিকেরা কঠোর ভূমিকা হাতে নিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতার সূত্র ধরে ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়াগামী ১৪ রোহিঙ্গাকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে বিজিবি।
তথ্য সূত্রে জানা যায় গত সোমবার রাতে তাদের শাহপরীরদ্বীপ গোলার চর হতে আটক করা হয়। পরে আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবি তথ্য অনুযায়ী আরো জানা যায়, গত ৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ শাহপরীরদ্বীপ বিওপিতে কর্মরত সুবেদার মোঃ নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি টহলদল শাহপরীরদ্বীপস্থ গোলারচর দক্ষিণপাড়া সাগর উপকূল হতে মালয়েশিয়াগামী ১৪ জন ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা আটক করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ৫ জন মহিলা।
উক্ত রোহিঙ্গারা দালালের মাধ্যমে গত ২ নভেম্বর রাত ১১ টার সময় সাবরাং কচুবুনিয়া এলাকা দিয়ে মালয়েশিয়া গমনের জন্য নৌকাযোগে রওয়ানা করে এবং পরবর্তীতে গত ৫ নভেম্বর রাত সোয়া ১১ টার সময়র দালালচক্র তাদেরকে গোলারচরে নামিয়ে দিয়ে অতিদ্রুত গভীর সমুদ্রে চলে যায়। এ সব তথ্য নিশ্চিত করেন বিজিবি ২ ব্যাটলিয়ান অধিনায়ক লে.কর্ণেল আছাদুদ জামান চৌধুরী।
আটককৃতরা হচ্ছে জামতলী শরণার্থী ক্যাম্পের মৃত নুরুল আলমের ছেলে মোঃ ইয়াছিন (২২), বালুখালী শরণার্থী ক্যাম্প মোঃ সালামের ছেলে মোঃ ইসলাম (২৬), মৃত আব্দুর গফুরের মেয়ে মোছাঃ বিবি খতিজা (১৮), থ্যাইংখালী শরণার্থী ক্যাম্পের মোঃ শফিকের ছেলে মোঃ খায়রুল আমীন (১৮), মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোঃ রহিমুল্লাহ (১৬), মৃত ইমান হোসেনের ছেলে মোঃ জাকের আহাম্মেদ (১৯), মোঃ আব্দুর রবের মেয়ে মোছাঃ নুর বাহার (১৮), সৈয়দ কালামের মেয়ে মোছাঃ আনোয়ারা বেগম(১৮), কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের মৃত আবুল কাসেমের মোঃ ছাইদুল আমীন (১৯), মৃত আবুল কাসেমের ছেলে মোঃ সুলতান (৪৫), মৃত কামালের ছেলে মোঃ ফরিদুল আলম (১৮), মধুছড়া শরণার্থী ক্যাম্প (কুতুপালং) মৃত-আবুল কাশেমের মেয়ে মোছাঃ খোরশিদা (১৬), মোঃ নুর ছালামের মেয়ে মোছাঃ রফিজা (১৮) ও টেকনাফ নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্প মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোঃ হোসেন (১৭)।
আটককৃতরা জানান, ঘোলার চরে নামানোর পূর্বে তাদেরকে বলে যে, মালয়েশিয়া চলে এসেছি এখন তাড়াতাড়ি নেমে যাও। এসব রোহিঙ্গারা থেংখালী, বালুখালী, কুতুপালং, নয়াপাড়া, জামতলী ও মধুছড়া (কুতুপালং) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করতো এবং তাদের নিবন্ধন কার্ড রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি/৫ নম্বর ব্লকের জনৈক মোঃ আইয়ুব আলী (৪০) (মোবাইল নম্বর-০১৮৫০-৪৮৮১৭৬) জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা নিয়ে মালয়েশিয়া নিয়ে যাচ্ছিল। আটককৃত রোহিঙ্গা নাগরিকদেরকে ৬ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিজিবি।
You must be logged in to post a comment.