যে কোন সময় সেতু ধসে বিচ্ছিন্ন হতে পারে লামা-চকরিয়া সড়ক যোগাযোগ
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বান্দরবান :
সেতুর মুখে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাইনবোর্ড, “ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, ৩ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ”। কিন্তু এসব কিছুই না মেনে চলছে ২২টনের অধিক ভারী তামাক, পাথর ও কাঠবাহী ট্রাক গুলো। লামা-চকরিয়া সড়কের ইয়াংছা বাজার ও কুমারী এলাকায় অবস্থিত বেইলী সেতু ২টি যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম কষ্টে পড়তে পারে লামা আলীকদম উপজেলার ৩ লাখ মানুষ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, নতুন ব্রিজের ছাড়া উপায় নেই। আপাতত কোন রকম জোড়াতালি দিয়ে চলছে সেতু ২টি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বান্দরবানের জেলা প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম খান জানান, বেইলী সেতু ২টি অনেক পুরাতন এবং ধারন ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩টন। কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তামাক, পাথর ও কাঠের ১৮ থেকে ২২ টন ওজনের গাড়ি গুলো চলছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, লামা-চকরিয়া সড়কের ইয়াংছা খাল ও ফাঁসিয়াখালী খালের ওপর স্টিলের বেইলী সেতু ২টি নির্মিত হয় ১৯৮৩ সালে। এরপর বড় কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। বিভিন্ন সময় ছোটখাটো সংস্কার করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর দুইটির পাশে গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। সেখানে লোহার পাটাতন দিয়ে সেতুর সঙ্গে সড়কের সংযোগ রক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া কিছুটা অংশ দেবে গেছে সেতু ২টির। তামাকবাহী ২২টন ওজনের ট্রাক গুলো ব্রিজে উঠলে সেতু কাঁপতে থাকে। মাঝে মধ্যে সেতু স্টিলের পাটাতন উল্টে ঘটে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় লোকজন জানান, ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কেউ তা মানে না। যে কোনো মুহুর্তে ভেঙে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ২টি পার হওয়ার সময় ছোট গাড়িও প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। গত ৪ মাস আগে কুমারীস্থ সেতুটি পড়ে যাওয়ার সময় সওজ বিভাগ মাঝখানে বড় ইটের ওয়াল তুলে কোন রকম টিকিয়ে রেখেছে ব্রিজটি। সে সময় লামা ও আলীকদম উপজেলার সাথে সারা দেশের ৩দিন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। সড়কের কুমারী বাজার এলাকার মোঃ কবির মিয়া জানান, গত ৭ দিন আগে কুমারী ব্রিজের পাটাতন ভেঙ্গে পড়ে যাওয়ায় ১ বেলা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। ইয়াংছা বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম (৩৮) বলেন, সেতু ২টি দ্রুত সংস্কার জরুরী হয়ে পড়েছে।
লামা-চকরিয়া সড়কের বাস চালক গুরা মিয়া বলেন, এই রোড দিয়ে প্রতিদিন অন্তত দুই সহস্রাধিক ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে। ব্রিজ ২টি অবস্থা খুব খারাপ। আমরা আশংকায় আছি, যে কোন সেতু ভেঙ্গে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সড়ক যোগাযোগ।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বান্দরবানের জেলা প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম খান বলেন, আপাতত দুর্ঘটনা এড়াতে ওই স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৩টনের অধিক যানবাহন চলতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত সংস্কার করে কোনভাবে সেতু ২টি চালু রাখা হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.