পরিবহন শ্রমিক-শিক্ষার্থী উত্তেজনার জের- পেকুয়ায় ছাত্রদের সড়ক অবরোধ : লাঠিচার্জে পুলিশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ

ফাইল ফটো

এম. ছগির আহমদ আজগরী; পেকুয়া :

কক্সবাজারের পেকুয়ায় পরিবহন শ্রমিক শিক্ষার্থীদের উত্তেজনার জের ধরে সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ভাড়া না দেয়া নিয়ে পেকুয়া জিএমসি স্কুলের এক শিক্ষার্থীকে সিএনজি চালকের পিটুনির জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। এসময় শিক্ষার্থী পিটানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে পেকুয়া জিএমসি’র শিক্ষার্থীরা পরদিন চৌমুহনী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে। পেকুয়া-মগনামা-বানিয়ারছড়া সড়কের সদর ইউনিয়নের কলেজ গেইট চৌমুহনী চৌরাস্তায় শতশত শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় প্রায় এক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পেকুয়া থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জে বাধ্য হয় বলে থানা সূত্র জানায়।

১৮জুন রবিবার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশের তাৎক্ষণিক উপস্থিতি ও হস্তক্ষেপে বড় ধরনের সংঘাতের দিকে যায়নি পরিস্থিতি। পুলিশ সদস্যরা উত্তেজনা প্রশমিত করতে পরিবহন শ্রমিক ও ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করেছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে গত শনিবার দুপুরে সাজ্জাদুল ইসলাম নামের জিএমসি স্কুলের নবম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী স্কুল থেকে সিএনজি যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। টইটং হাজিবাজারে ভাড়া নিয়ে সিএনজি চালকের সাথে শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলামের বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় সিএনজি চালক তাকে শারীরিক লাঞ্ছিত করে। রবিবার সকাল ১০টার দিকে জিএমসি’র প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীসহ অপর অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চৌমুহনী কলেজ গেইট সিএনজি ষ্টেশনের লাইন ম্যানের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে মারমূখী হয়ে তারা চৌমুহনী মোড়ে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সরানোর চেষ্টা করে। ছাত্ররা পুলিশের উপস্থিতি দেখে আরো অধিক ক্ষিপ্ত হন। এ সময় পুলিশ বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করে ছাত্রদের হঠিয়ে দেন।

পেকুয়া জিএমসি’র প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম জানায়, আমাদের স্কুলের একজন ছাত্র কম ভাড়া দেয়ায় সিএনজি চালক তাকে মারধর করে। বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য প্রশাসন ও সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা আমাদের সাথে বৈঠক করেছেন। পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। স্কুল পরিচালনা কমিটিকে বিষয়টি অবহিত করেছি। সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারী মো. বারেক জানায় খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আমি আসি। স্কুল ছাত্রকে লাঞ্ছিত করা খুবই দুঃখজনক। ছাত্র ও শিক্ষকদের কাছে আমি গিয়েছি। শিক্ষক ও ছাত্রদের আশ্বস্থ করেছি বিষয়টি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে।

পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনজুর কাদের মজুমদার জানায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। ছাত্রদের পক্ষে লিখিত অভিযোগ পেলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অপরদিকে, ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকালে ছবি তোলার সময় বিনা উস্কানীতে পেকুয়া প্রেসক্লাবের সদস্য দৈনিক সু’প্রভাত বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদদাতা সাংবাদিক মুহাম্মদ জুবাইদকে পুলিশের লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (প্রশাসন) মোঃ জহিরুল ইসলাম ও ও.সি(তদন্ত) এম. মনজুর কাদের মজুমদারের দৃষ্টি আকর্ষন করলে তারা অভিযোগটি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, জেলার একমাত্র পেকুয়ায় সাংবাদিক পুলিশ সৌহার্দপূর্ণ সহাবস্থানে যেখানে স্ব স্ব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করছে সেখানে গণমাধ্যমকর্মীকে পুলিশের লাঞ্ছিতের প্রশ্নই উঠেনা বলে মন্তব্য করেন।