মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়নের কম্পনিয়া এলাকায় জনৈক হাজী দেলোয়ার হোসেন নামে প্রভাবশালী ব্যক্তি এস্কেভেটর দিয়ে অবাধে পাড়ার কাটছে। ইতিমধ্যে ৩টি পাহাড় কেটে উজাড় করলেও স্থানীয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেনা।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মকবুল হোসেন বলেন, বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করুন। ঊনারা ব্যবস্থা না নিলে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
অভিযোগ উঠেছে উক্ত দেলোয়ার হোসেন কিছু অসাধু ভুমি দস্যুদের মাধ্যমে এলাকার লোকজনের জাতীয় পরিচয়পত্র জাল জালিয়াতি করে ভুয়া জমির ক্রয় বিক্রয় রেজিষ্ট্রি দলীল করে অনেককে ভিটে মাটি ছাড়া করছে। সরই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে সে ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েক হাজার একর পাহাড়ি জমি রয়েছে। হাজী দেলোয়ার হোসেন চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীরহাট সিটি সেন্টারস্থ আর.এফ বিল্ডার্স এর ব্যবস্থাপক ও মৃত এয়াজুর রহমানের ছেলে।
সরজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন সরই কম্পনিয়া এলাকা সহ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় কয়েকশত পাহাড়ি বাঙ্গালীদের বসতভিটা হতে উচ্ছেদ করে জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার একর জমির মালিক হয়েছে। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায়। পূর্বপুরুষ পার্বত্য এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা না হলে পাহাড়ে ভূমি ক্রয়ের আইনী সুযোগ না থাকলেও সে কিভাবে পাহাড়ে জায়গার মালিক হল তা কারোই জানা নেই। অন্য ব্যক্তিকে পিতা সাজিয়ে বা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়েছে বলে এলাকাবাসি জানায়।
সরই ইউনিয়নের কম্পনিয়া এলাকায় গত একমাস যাবৎ এস্কেভেটর ও ড্রোজার দিয়ে সমানতালে পাহাড় কেটে উজাড় করলেও স্থানীয় প্রশাসন কিছুই বলছেনা।
কম্পনিয়া পাড়ার মো. মনিরুল ইসলাম, পিতা আলতাফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দেলোয়ার হোসেন লামা উপজেলধীন ৩০৩ নং ডলুছড়ি মৌজার সরকারী পুর্নবাসিত লোকজনের জায়গার হোল্ডিং কাগজ সংগ্রহ করে কিছু অসাধু ভূমিদস্যু ও দালালের মাধ্যমে উক্ত জায়গা নিজের নামে করে নিয়েছে। তেমনি তার স্ত্রী, ছেলে ও নিজের নামের রেকর্ডভুক্ত জমি বিক্রয় রেজিষ্ট্রির বায়নানামা দলিল করে ভূমিহীন বানিয়ে ভিটে মাটি ছাড়া করেছে। অপরদিকে আইনকে তোয়াক্কা না করে কম্পনিয়া পাড়ায় ডোজার ও এস্কেভেটর মেশিনের সাহায্যে পাহাড় কেটে বন, পরিবেশ ধ্বংস করছে। যাহাতে করে পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাছির উদ্দিন বলেন, হাজী দেলোয়ার হোসেন কারো কথা শুনে না। কেউ তার কাজে বাধা দিলে তাকে হুমকি ধমকি দেয়। স্থানীয় লোকজনের উপর জুলুম না করতে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাকে অন্য মামলায় জড়িয়ে আসামী করে কষ্ট দিচ্ছে। তার কারণে অতিষ্ট এলাকাবাসি। সে অবাধে পাহাড় কাটছে।
অবাধে পাহাড় কাটা ও স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে (০১৯১৯৩২৫৭০৯) একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি জানতাম না। এখন প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হলে সরজমিনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা করছি।
You must be logged in to post a comment.