মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় যাত্রীবাহি ইউনিক পরিবহণের একটি বাসের সাথে ম্যাজিক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ ৫জন নিহত ও শিশুসহ ৯জন আহত হয়েছে। ফাঁসিয়াখালী সেনা ক্যাম্পের নিকটবর্তী সেগুন বাগান এলাকায় মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ম্যাজিক গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।দুটি গাড়ি জব্দ ও মরদেহ উদ্ধার করেছে মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ। বাস চালক মুঠোফোনে কথা বলায় দুর্ঘটনা হয় বলে বাস যাত্রীরা পুুলিশকে অভিযোগ করেন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ ছগিরশাহ কাটার বাহাদুর আলমের স্ত্রী নুরুন নাহার(৪২), তার মেয়ে নুর আয়শা বেগম (১২), রংমহল এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে তারেক জিয়া (১৮), সাহারবিলের মাইজঘোনার আহাদুল করিম (১৮) ও কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার মৃত মিয়া আজমের ছেলে আবু ছৈয়দ (৬০)। নিহত ৫ জনের লাশ প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট করার পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: জামাল হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন-চকরিয়ার কাকারা ইউনিয়নের মারুফ হোসেনের স্ত্রী সানজিদা খানম (৩০), তার ৬ মাস বয়সি ছেলে আবদুল্লাহ, ডুলাহাজারার পূর্ব ডুমখালীর গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৩০), তার ১বছর বয়সি শিশু মেয়ে জন্নাতুল মাওয়া, মালুমঘাট চা-বাগান এলাকার মৃত আমির আলীর ছেলে আবদুল মতলব (৫৫), সোয়াজানিয়া এলাকার কামাল হোসেনের স্ত্রী পারভিন আক্তার (৩০), সাহারবিলের বাটাখালী এলাকার হাজী আহমদ কবিরের ছেলে কপিল উদ্দিন (৪৫), লামা উপজেলার হায়দারনাশী এলাকার মৌলভী জকরিয়ার মেয়ে তাসকিনা বেগম (১৮), মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ার আবু ছিদ্দিকের স্ত্রী মোরশিদা বেগম (৩৫)। আহতদের মধ্যে মুমুর্ষূ অবস্থায় চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, তিনজনকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খৃষ্ট্রান হাসপাতাল ও দুইজনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
চকরিয়া হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সহকারী মেডিকেল অফিসার রশিদুন্নবী বলেন, রেফার করা আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। অন্যরা ঝুঁকিমুক্ত।
হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জামাল উদ্দিন বলেন, ম্যাজিক গাড়িটি ডুলাহাজারা থেকে যাত্রী নিয়ে চকরিয়া সদরে যাচ্ছিল। সেগুন বাগান এলাকায় পৌছলে কক্সবাজারমুখি যাত্রীবাহি বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে চারজন ও হাসপতালে নেয়ার পথে একজন মারা যায়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালে হতাহতদের আনার পর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। আহাজারি করে অনেকে। এসময় দুটি ভ্যানেটি ব্যাগ, ১টি মোবাইল ও ৫ হাজার টাকা পাওয়া গেলে তা হাইওয়ে পুলিশের এসআই জামাল হোসেনের কাছে হস্তান্তর করেন সেনা সদস্য শিমুল।
হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট আনোয়ার হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় পতিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে।এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
দুর্ঘটনায় পতিত বাস যাত্রীদের উদ্বৃতি দিয়ে কক্সবাজার সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো: মাসুদ আলম বলেন, ইউনিক পরিবহণের বাসের চালক গাড়ি ড্রাইভিংয়ের সময় মুঠোফোনে কথা বলছিলো। এসময় বিপরীত দিক থেকে লোকাল ম্যাজিক গাড়ি সড়কের পাশ দিয়ে আসলেও ইউনিক পরিবহণের চালক অন্যমনস্ক থাকায় সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
You must be logged in to post a comment.