মহেশখালীতে মোরা’য় নিহত ও নিখোঁজ জেলেদের সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন এমপি আশেক

মোহাম্মদ শাহাব উদ্দীন; মহেশখালী :

কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় উপজেলা মহেশখালীর পুটিবিলা, ঘোনাপাড়াসহ ঘূর্ণিঝড় মোরায় নিহত ও নিখোঁজ ৫২ জেলে পরিবারের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক নগদ টাকা বিতরণ করলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। এ সময় তিনি  বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ও নিখোঁজ জেলে সন্তানদের লেখার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের লেখাপড়ার বিষয়ে সার্বিক সহযোগীতা করে যাবেন। এছাড়াও আপনারা বিশ্বাস রাখুন ক্ষতিগ্রস্ত ও নিহত সকল জেলে পরিবারকে বাড়ী নির্মাণ করে দেওয়া হবে। পাশাপশি স্বামী হারাদের বিধবা ও পুত্রহারা মাদের বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আহতের চিকিৎসা সেবাসহ সরকারী যত সুবিধা রয়েছে তা তাদের দেওয়া হবে বলে জানান।

১০ জুন পৌরসভার দক্ষিণ পুটিবিলা প্রিজম হাই স্কুলে বিকাল ২টায় নিখোঁজ জেলেদের স্বজনদের নগদ টাকা বিতরণ কালে এ কথা বলেন ।

এসময় জেলে পরিবারের কান্নায় কেঁদে দিলেন মহেশখালী কুতুবদিয়ার সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম, মহেশখালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল আলম সাবিক। এছাড়াও উপস্থিত জনতার চোখেও পানি ধরে রাখা যায়নি। এ সময় হৃদয় বিধারক দৃশ্যর অবতরণ হয়।

মহেশখালী প্রেসক্লাবের জিএস আবুল বশর পারভেজ এর সঞ্চালয়নায় এতে বক্তব্য রাখেন- মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম, সহকারী কমিশনার ভূমি বিভীষণ কান্তি দাশ, পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মকছুদ মিয়া, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি এম আজিজুর রহমান বি.এ, মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা: মো: সাজ্জাদ হোসেন, মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ডা: মোহাম্মদ মাহাফুজুল হক আরএমও, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল আলম সাকিব, সাবেক চেয়ারম্যান শামশুল আলম, সমাজ সেবা অফিসার নাছরুল্লাহ আল মাহামুদ, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক আবু ছিদ্দিক, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজেদুল করিম, কুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক গোলাম কিবরিয়া সিকদার, আসাদ উল্লাহ সায়েম জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি, মোবারেক হোসেন বারেক উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক হালিমুর রশিদ পুতু।

ঘূর্ণিঝড় “মোরা”র কবলে পড়ে গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছধরা রত অবস্থায় মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র আব্দু শুক্কুর কাউন্সিলর এর মালিকানাধীন এফবি সায়েদ, এফবি ওয়ালিদ-১, এফবি ওয়ালিদ-০২ সহ ৩টি ট্রলারে ৬৩ জন, পুটিবিলা মোশরাফ আলী পাড়া গ্রামের মৃত আছদ আলীর পুত্র নুরুল আলম প্রকাশ বাঁশি মাঝি ও শামসুল আলম এর যৌথ মালিকানাধীন এফবি গাউছিয়ায় ২৫ জন ও পুটিবিলা দাসিমাঝি পাড়া গ্রামের মৃত সাধন আলীর পুত্র জামাল হোসেন ও নবাব হাসেন এর যৌথ মালিকানাধীন এফবি রেজাখান নামে ১টি ফিশিং ট্রলার ২৯ সহ মোট ৫টি ফিশিং ট্রলার ১১৭জন মাঝি মাল্লা সাগরে মাছ আহরণ করতে গিয়ে ৩০ মে ঘূর্নিঝড় “মোরা”র কবলে পড়ে সাগরে ডুবে যায়। ৫টি ট্রলারের ১১৭জন জেলের মধ্যে থেকে একাধিক পয়েন্টে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী, ভারতের ত্রাণ বাহী নৌ জাহাজ সুমিত্রা ও সোনাদিয়া চ্যানেলে ৬৪জন উদ্ধার হয়। ৩জন জেলে মৃত পাওয়া গেলেও এখনো পর্যন্ত আরো ৫০ জন জেলে সাগরে নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে ৪৬ জন পৌরসভার পুটিবিলা ও ঘোনাপাড়ার বাসিন্দা। অন্যন্যরা পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের অধিবাসী।

এদিকে মহেশখালী উপজেলার পুটিবিলা, ঘোনাপাড়াসহ মোরায় নিহত ও নিখোঁজ জেলে পরিবারের খোঁজ নিতে ১০ জুন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গেলেন ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরীর প্রধান সমন্বয়ক মহেশখালী সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিভিষন দাশের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের সদস্য সচিব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল আলম সাকিব তাদের তালিকা তৈরী করেন। তাদের তালিকানুযায়ী সরকারে পক্ষ থেকে সাবির্ক সহযোগীতা করা হবে বলে জানান।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, মোরা’য় নিখোঁজ জেলেদের প্রাধন্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের উপজেলা প্রশাসন ও সরকারের উপরি মহল থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।