কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ হাকিম রকিমা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় জড়িত সহকারি শিক্ষক মোস্তফা কামালকে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি মাথার চুল না কাটার অজুহাতে হুমায়ন রশিদ নামের মেধাবি শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে পিটিয়ে আহত করেন ওই শিক্ষক।
এ নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভায় তাকে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৫ অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে বিদ্যালয়ের বিতর্কিত এ শিক্ষককে বাঁচাতে একটি প্রভাবশালী চক্র মোটা অংকের মিশন নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য এবং অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য শাহ আলম সিকদার জানান, ওই সভায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া মাষ্টার, অভিভাবক সদস্য আবদুল খালেক, শাহ আলম সিকদার, রফিকুল আলম, মো. আলম, শিক্ষক প্রতিনিধি প্রনব বড়ুয়া, ওসমান গনি, মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি লুৎফুন্নাহার, শিক্ষানুরাগী সদস্য শহীদুল্লাহ সিকদার উপস্থিত ছিলেন।
প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সভাপতিসহ উপস্থিত সকলের মতামত ও সম্মতিক্রমে শিক্ষক মোস্তফা কামালকে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যা সকলের স্বাক্ষর করা রেজুলেশনে লিপিবদ্ধও করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কমিটির সভাপতি মাষ্টার হানিফ মিয়ার বড় ছেলে মামুন অভিযুক্ত শিক্ষক মোস্তফা কামালের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা শুরু করে। এরই জের ধরে পিতাকে রেজুলেশনে স্বাক্ষর দিতে দিচ্ছেন। এমনকি রেজুলেশনের স্বাক্ষর নিতে গেলে তাকে (শাহআলম সিকদার) শারীরিকভাবে নাজেহাল করেন এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির আরো তিন সদস্যকে লাঞ্ছিত করেন।
কাউয়ারখোপ হাকিম রকিমা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিশোর বড়ুয়া জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভায় সকল সদস্যদের সম্মতিক্রমে অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক মোস্তফা কামালকে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজুলেশনে উপস্থিতির স্বাক্ষর করার পরও অনুমোদন দিতে গড়িমসি করছেন।
উল্লেখ্য ২২ সেপ্টেম্বর মাথার চুল না কাটার অজুহাতে হুমায়ন রশিদ নামের মেধাবি শিক্ষার্থী পিটিয়ে আহত করেন, বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষক মোস্তফা কামাল। শ্রেণিকক্ষে প্রায় ৭০ জন ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতিতে ওই শিক্ষক হুমায়ন রশিদকে বেঞ্চে ফেলে কিল, ঘুষি সহ নানাভাবে মারধর করেন। এতে তার পিঠ, মুখমন্ডল, চোখে রক্তজমাট হয়ে অসহনীয় জখম হলে বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। নির্যাতনের শিকার মেধাবি ছাত্র হুমায়ন রশিদ নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার রোল নাম্বার ৬। সে বিগত জেএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস অর্জন করেছিলো। এছাড়া সম্প্রতি ঘোষিত এসএসসি পরীক্ষায় এ বিদ্যালয় থেকে তার বড় বোন জান্নাতুল বকেয়া এ প্লাস অর্জন করেছে।
You must be logged in to post a comment.