কক্সবাজারের উখিয়ায় একের পর এক এনজিও সংস্থার কৃষি কাজের নামে অর্ডার দিয়ে তৈরি করা দেশীয় অস্ত্র জব্দের ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয়দের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের মুখোমুখি করাতেই কৃষি উপকরণের নামে এসব দেশীয় অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা জানালেন, রাম দা, হাতুড়ি, বেলচা ও ছুরি কৃষি যন্ত্রপাতির আওতায় পড়ে না। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, নজরদারি বাড়ানো না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এনজিওদের কাজ কঠোরভাবে তদারকি করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালিয়ে উখিয়ায় এনজিও ‘শেড’ এর গুদামে পাওয়ায় যায় বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র। যা জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন। যার মধ্যে রয়েছে রামদা, ছুরি, বেলচা, লাঠি, করাত ও প্লায়ার্স। সব মিলিয়ে এসব দেশীয় অস্ত্রের সংখ্যা ৮ হাজারের বেশি।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট রোহিঙ্গাদের সরবরাহের জন্য এনজিও সংস্থা মুক্তি’র অর্ডার দিয়ে তৈরি করা বিপুল পরিমাণ নিড়ানির নামে দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় মুক্তি এনজিও’র ছয়টি প্রকল্প। তবে এনজিওগুলো স্থানীয়দের বিতরণের জন্য কৃষি উপকরণ তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করলেও তা মানতে নারাজ কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো. শামসুল আলম।
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত জিনিসগুলোকে আমরা ওইভাবে কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে ধরছি না। আর রোহিঙ্গাদের জন্য এসবের সহায়তার তো কোনো দরকারই নেই।
একের পর এক এনজিওগুলোর দেশীয় অস্ত্র জব্দের ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। আর এনজিওরা রোহিঙ্গাদের হাতে এসব দেশীয় অস্ত্র তুলে দিয়ে স্থানীয়দের প্রতিপক্ষ করে তুলছে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, এনজিওগুলোর এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য স্থানীয়রা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রয়েছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে. কর্ণেল ফোরকান আহমেদ বলেন, তাদের অবশ্যই এখন কন্ট্রোলের মধ্যে রাখতে হবে।
অবশ্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এনজিওদের কার্যক্রম কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দেন।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, যেসব এনজিওর বিরুদ্ধে সাধারণের এমন ধারণা যে তারা প্রত্যাবাসনবিরোধী, সেসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা। আর এই দুই উপজেলায় স্থানীয় বাসিন্দা রয়েছে ৫ লাখ।
সূত্র: somoynews.tv- ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.