গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
মানবিক বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ২ টায় মিয়ানমারের নেপিদোতে দুই দেশের মধ্যে এই সমঝোতা চুক্তি সই করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে সে দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে এখনো দলে দলে পালিয়ে আসছে শত শত রোহিঙ্গা। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চলছে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা। গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমার রাখাইনে সহিংস ঘটনার পর থেকে নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। তবে দিন দিন রোহিঙ্গা আগমন অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে নতুন ও পুরনো মিলে কক্সবাজার জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে দশ লাখ মত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এসব রোহিঙ্গাদের কারনে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছেন।
গত বুধবার মিয়ানমারের নেপিদোতে দুই দেশের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের ফেরতের বিষয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতা চুক্তি সইয়ের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে। তবে সমঝোতা চুক্তির শর্ত সমূহ ঠিক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই দেশের মধ্যে চুক্তির সই হতে পারে বলেও জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এইচ মাহমুদ আলী। অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে মিয়ানমারের নেপিদোতে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে বলে জানা গেছে। একদিকে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে সরকার আর্ন্তজাতিক ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে সহায় সম্বল ফেলে এখনো রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুই দফায় টেকনাফের নাফ নদী থেকে ৪৩ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর সংলগ্ন এলাকা থেকে ১১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। এতে ২ জন পুরুষ, ২ জন নারী ও ৭ জন শিশু রয়েছে।
এছাড়া ভোরে নাফ নদীর একই এলাকা থেকে ৩২ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। তাদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ, ১৩ জন নারী ও ১০ জন শিশু রয়েছে। সব মিলিয়ে নাফ নদী থেকে ৪৩ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে ঘোলার চরে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে একদল রোহিঙ্গা জারিকেন, বাঁশ ও কাঠের বিশেষ কায়দায় তৈরি করা ভেলায় চড়ে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে আসছিল। এসময় ভেলাটিতে ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত লোক বহন করায় জোয়ারে তোড়ে ডুবে যায়। এতে নাফ নদীতে কোস্টগার্ডের টহলরত একটি দল তাদের দেখতে পেয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে দু দফায় ৪৩ জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষ, নারী ও শিশুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
কোস্টগার্ড হেডকোয়ার্টারের গোয়েন্দা পরিদপ্তরের এল এস (মিডিয়া উইং) আবুল কালাম আজাদ নাফ নদী থেকে রোহিঙ্গা উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন জানান, উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে কক্সবাজার রোহিঙ্গা সেনা ক্যাম্পে হস্তান্তর করার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
You must be logged in to post a comment.