সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / আন্তর্জাতিক / ২৪ বছর পর হারিয়ে যাওয়া কন্যার সন্ধান

২৪ বছর পর হারিয়ে যাওয়া কন্যার সন্ধান

চীনে ২৪ বছর পর এক বাবা তার হারানো কন্যাকে খুঁজে পেয়েছেন। মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

১৯৯৪ সালে মাত্র তিন বছর বয়সে হারিয়ে যায় ওয়াং মিংকিংয়ের কন্যা কিফেং। অনেক চেষ্টার পরেও খোঁজ না পেয়ে কোনো একদিন পথে মেয়ের সাথে দেখা হয়ে যেতে পারে এই আশায় তিনি বেছে নিয়েছিলেন ট্যাক্সিচালকের পেশা। ওয়াং স্বপ্ন দেখতেন, চেংডু শহরে গাড়ি চালাতে চালাতে হয়তো একদিন তিনি হারিয়ে যাওয়া কন্যাকেই যাত্রী হিসেবে তুলে নিয়েছেন।

শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের প্রথম দিকে কন্যার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। তবে রাস্তায় গাড়ি চালানোর সূত্রে নয়, যোগাযোগ হয় ইন্টারনেটের কল্যাণে। অনলাইনে পিতার একটি পোস্ট দেখে মেয়েটি নিজেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

ওয়াং জানিয়েছেন, তিনি ও তার স্ত্রী লিও দেংগিং রাস্তায় ফল বিক্রি করতেন। একদিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তারা রাস্তার পাশে একটি দোকান বসিয়ে ফল বিক্রি করছিলেন। একজন ক্রেতার কাছে ফল বিক্রি করা শেষে তিনি হঠাৎ দেখলেন যে তাদের মেয়ে কিফেং সেখানে নেই।

মেয়ের খোঁজে তারা নিজেদের শহরে ও আশেপাশের এলাকায় বছরের পর বছর ঘুরে বেড়িয়েছেন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, পোস্ট দিয়েছেন অনলাইনে। মেয়েকে খুঁজে পাওয়ার আশায় তারা কখনো চেংডু শহর ছেড়ে যাননি। ওয়াং-লিও দম্পতি ভেবেছিলেন কিফেং পথ খুঁজে হয়তো বাড়ি ফিরে আসতে পারে। তবে বাস্তবে আর সেটা হয়নি।

মেয়ের খোঁজে ২০১৫ সালে ওয়া যোগ দেন দিদি শুয়াজিং নামের একটি ট্যাক্সি কোম্পানিতে। গাড়ির গ্লাসে তিনি মেয়ের সন্ধান চেয়ে একটি বিজ্ঞাপন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। যেখানে যেতেন সেখানেই তিনি কিফেংয়ের ব্যাপারে কিছু তথ্য লেখা কার্ড বিতরণ করতেন। যেসব যাত্রীকে তিনি তার গাড়িতে তুলতেন তাদের কাছেও এই কার্ড বিলি করতেন ওয়াং।

ওয়াং-লিও দম্পতির আরো একটি কন্যা সন্তান আছে। তাদের কাছে কিফেংয়ের কোনো ছবি ছিলো না। দুই কন্যার চেহারায় মিল থাকায় কিফেংয়ের লিফেলটে অপর কন্যার ছবি ব্যবহার করতেন ওয়াং। এরই মধ্যে চীনা পুলিশ কিফেং হতে পারে ধারণা করে বেশ কয়েকজন নারীকে চিহ্নিত করে। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় নমুনার কোনো মিল পাওয়া যায়নি।

গত বছরের শেষ দিকে এই সন্ধানে বড় ধরনের অগ্রগতি ঘটে। পুলিশ বিভাগের একজন চিত্রশিল্পী ওয়াংকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। বড় হয়ে যাওয়ার পর কিফেং দেখতে কেমন তার একটা ছবি এঁকে দেন তিনি। তারপর সেই ছবিটি ছড়িয়ে দেওয়া হয় অনলাইনে।

পরবর্তীতে চীনেরই হাজার মাইল দূরের একটি জায়গায় কাং ইং নামের এক নারী এই ছবিটি দেখতে পান। তার সাথে ছবিটির এতো মিল দেখতে পেয়ে চমকে যান কাং। চলতি বছরের প্রথমদিকে তিনি ওয়াংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওয়াং তার কাছে এমন কিছু চিহ্নের কথা বলেন যার সাথে তার হারিয়ে যাওয়া কন্যার দেহে থাকা চিহ্নের সঙ্গে মিলে যায়, যেমন- তার কপালের ছোট্ট একটি দাগ এবং কিফেং যখন কাঁদতো তখনই তার বমি হতো।

এরপর দ্রুত ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়।ওয়াং য়ের শেষ পর্যন্ত ২৪ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো। সোমবার ওয়াং ও কিফেং প্রথমবারের মতো একটি ভয়েস ম্যাসেঞ্জার অ্যাপসের মাধ্যমে কথা বলেন। ওয়াং তার মেয়েকে বলছিলেন, ‘এখন থেকে বাবা তোমার সাথে। কোনো কিছু নিয়ে আর তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। বাবা তোমাকে সাহায্য করবে।’

মঙ্গলবার সত্যিকারার্থে মিলিত হলেন ওয়াং ও তার হারিয়ে যাওয়া কন্যা। উত্তরের ঝিলিন প্রদেশ থেকে বিমানে করে চেংডুতে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে উড়ে এলেন কিফেং।

কান্নাজড়িত স্বরে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কিফেং বললেন, ‘সবাই বলতো আমার কোনো মা নেই। কিন্তু আমি বিশ্বাস করতাম আছে।’

সূত্র:globetodaybd.com;ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

দৈনিক যুগান্তরের কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিম উদ্দিনের পিতার মৃত্যু : বিভিন্ন মহলের শোক

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : দৈনিক যুগান্তরের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি জসিম উদ্দিনের পিতা হাজী নূর ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/