সাম্প্রতিক....
Home / জাতীয় / প্রায় ৫০ টি আসনে লড়তে প্রস্তুত জামায়াত

প্রায় ৫০ টি আসনে লড়তে প্রস্তুত জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর লোগো। ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানীসহ সারা দেশের প্রায় অর্ধশত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী।

এর মধ্যে ২৪টি আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে জামায়াত। জোট থেকে ২৫টিতে টিকিট পেলেও রংপুরের একটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি দলটি।

এছাড়া আরও ২৫ থেকে ৩০টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে জামায়াত। তবে এখনও আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দরকষাকষি চলছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জামায়াতের নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ প্রতিবেদককে বলেন, ২৫টি আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে জামায়াত নেতারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে আরও চার-পাঁচটি আসনের বিষয়ে দরকষাকষি চলছে। এর বাইরে আরও কিছু আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জামায়াত নেতারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মোট কথা অর্ধশত আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে জামায়াতের। তবে জোটের সঙ্গে সমঝোতা হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হবে।

এর আগে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি জেনারেল ড. রেজাউল করিম এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘সারা দেশের অর্ধশত আসনে জামায়াত নেতারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন। ওইসব আসনে জোটগতভাবে নির্বাচন করার চেষ্টা করছেন তারা।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে সমঝোতা হয়েছিল ২৫ আসনে। এসব আসনে জামায়াত প্রার্থীরা বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করবেন। আসনগুলো হল- ঠাকুরগাঁও-২ (মাওলানা আবদুল হাকিম), দিনাজপুর-১ (মাওলানা মোহাম্মদ হানিফ), দিনাজপুর-৬ (মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম), নীলফামারী-২ (মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মন্টু), নীলফামারী-৩ (মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম), গাইবান্ধা-১ (মাজেদুর রহমান সরকার), সিরাজগঞ্জ-৪ (মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান), পাবনা-৫ (মাওলানা ইকবাল হুসাইন), ঝিনাইদহ-৩ (অধ্যাপক মতিয়ার রহমান), যশোর-২ (আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন), বাগেরহাট-৩ (অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ), বাগেরহাট-৪ (অধ্যাপক আবদুল আলীম), খুলনা-৫ (অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার), খুলনা-৬ (মাওলানা আবুল কালাম আযাদ), সাতক্ষীরা-২ (মুহাদ্দিস আবদুল খালেক), সাতক্ষীরা-৩ (মুফতি রবিউল বাশার), সাতক্ষীরা-৪ (গাজী নজরুল ইসলাম), পিরোজপুর-১ (শামীম সাঈদী), ঢাকা-১৫ (ডা. শফিকুর রহমান), কুমিল্লা-১১ (ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের), চট্টগ্রাম-১৫ (আ ন ম শামসুল ইসলাম), কক্সবাজার-২ (হামিদুর রহমান আজাদ), সিলেট-৫ (মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী), সিলেট-৬ (মাওলানা হাবিবুর রহমান) ও রংপুর-৫ আসনে (অধ্যাপক গোলাম রব্বানী)। এর মধ্যে রংপুর-৫ এ গোলাম রব্বানী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। আইনি ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জামায়াত সূত্র জানিয়েছে। ফলে জোটগতভাবে এখন জামায়াত ২৪টি আসনে লড়তে পারছে। এর বাইরে আরও ২৫ থেকে ৩০টি আসনে জামায়াত নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এসব আসন নিয়ে ২০ দলীয় জোটের এ দুই শরিকের মধ্যে চলছে দরকষাকষি। একই ভাবে জামায়াতকে দেয়া ২৫ আসনে বিকল্প প্রার্থী দিয়ে রেখেছে বিএনপি। জামায়াত স্বতন্ত্র হিসেবে যেসব আসনে প্রার্থী দিয়েছে, সেগুলোতে বিএনপি ও এর শরিক অন্য দলেরও প্রার্থী আছে।

জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান (রাজশাহী-১), ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন (পাবনা-১), প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক তাসনীম আলম (নাটোর-১), নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ (সাতক্ষীরা-১), নুরুল ইসলাম বুলবুল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), মাওলানা আফতাব উদ্দিন মোল্লা (দিনাজপুর-৪), অধ্যাপক মাজেদুর রহমান (গাইবান্ধা-১), মাওলানা আবদুস সাত্তার (নীলফামারী-১), ড. কেরামত আলী (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১), খ. ম. আবদুর রাকিব (নওগাঁ-৪), অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল (পাবনা-৪), মুহাম্মদ আবদুল গফুর (কুষ্টিয়া-২), মোহাম্মদ রুহুল আমিন (চুয়াডাঙ্গা-২), মাওলানা আজিজুর রহমান (যশোর-১), গাজী এনামুল হক (যশোর-৫), অধ্যাপক মুক্তার আলী (যশোর-৬), ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ (পটুয়াখালী-২), অধ্যাপক জসিম উদ্দিন (ময়মনসিংহ-৬), মাস্টার রুহুল আমীন (লক্ষ্মীপুর-২), ডা. আনোয়ারুল আজিম (লক্ষ্মীপুর-৩), ডা. ফখরুদ্দিন মানিক (ফেনী-৩), মাওলানা জহিরুল ইসলাম (চট্টগ্রাম-১৬) এবং সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী (কুমিল্লা-৯) অন্যতম। জামায়াতের এক কেন্দ্রীয় নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা না হলে এসব আসনে জামায়াত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে নামবে।

কারণ উল্লিখিত আসনগুলোতে জামায়াতের প্রচুর ভোটব্যাংক রয়েছে। অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো অবস্থা রয়েছে। ওই নেতা আরও জানান, মঙ্গলবার জোটের সঙ্গে আসন বণ্টনে সমঝোতা না হওয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, ধানের শীষে নয়, স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে। অথচ এ পরিস্থিতির জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না জামায়াত। বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে এক শতাংশ ভোটারের সই জোগাড়ের মতো সময় জামায়াত নেতাদের প্রায় কারোরই ছিল না।

তাই বাধ্য হয়ে ধানের শীষে নির্বাচন করতে হচ্ছে তাদের। তিনি আরও বলেন, জামায়াতকে যেসব আসন দেয়া হয়েছে, সেখানে বিএনপির প্রার্থীও রয়েছেন। প্রতীক বরাদ্দের সময় জামায়াত নেতাদের নামে বিএনপি চিঠি না দিলে তাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে। এতে জামায়াতের আসন আরও কমতে পারে।

১৯৮৬ সালের ৭ মের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ৭৬টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল। ওই নির্বাচনে দলটি ১০টি আসনে বিজয়ী হয়। ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে জামায়াত। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে জামায়াত ১৮টি আসনে বিজয়ী হয়। এ নির্বাচনে দলটি ২২২ প্রার্থী দিয়েছিল। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ৩টি আসনে জয়ী হয়। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে জামায়াত ১৭টি আসন পায়। মহিলা আসনগুলো থেকে ৪টি আসনে জয়ী হয় তারা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ২টি আসনে বিজয়ী হয়। ওই নির্বাচনে দলটি জোটগতভাবে ৩৯টি ও ৪টিতে এককভাবে নির্বাচন করে।

সূত্র:উবায়দুল্লাহ বাদল-deshebideshe.com;ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

লামায় জমি নিয়ে বিরোধে জের ধরে ১ জনকে কুপিয়ে খুন, আহত ৭

  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বান্দরবানের লামা উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষের ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/