সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / আন্তর্জাতিক / বাংলাদেশিদের শুধু ঠেকাবো না, ফেরতও পাঠাবো

বাংলাদেশিদের শুধু ঠেকাবো না, ফেরতও পাঠাবো

Modi

আসামের নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যথারীতি বাংলাদেশি অভিবাসী নিয়ে সরব হয়েছেন। শনিবার আসামের লখিমপুর জেলার নারায়ণপুরে এক নির্বাচনী জনসভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে নতুন করে অভিবাসী আসা বন্ধ করতে যেমন তার সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে তেমনি আসামে থাকা অভিবাসীদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্যও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মোদি অভিযোগ করেছেন, আসামের কংগ্রেস সরকার সব সময়ই বাংলাদেশিদের চেয়েছে। তারা বাংলাদেশিদের জন্য সোনার প্লেট এগিয়ে দিয়েছেন অথচ আদিবাসী মানুষদের যেটুকু ছিল সেটিও কেড়ে নিয়েছেন।

মোদির মতে, বাংলাদেশি অভিবাসীদের প্রতি কংগ্রেসের অফুরান ভালোবাসা রয়েছে। এদিন মোদি আসামের আরও দুই জায়গায় ভাষণ দেন। আসামের সব জায়গায় সমান উন্নতি না হওয়ার জন্য তিনি কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেছেন, কংগ্রেস সরকার এক জায়গার উন্নতি করলেও অন্য জায়গাকে অবহেলা করেছে। আসামের আগামী ভোটে বিজেপির জয় নিশ্চিত জানিয়ে তিনি বলেছেন, আসামের মানুষ ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন। মোদি আরও বলেন, সারা দেশে সমস্ত অসুখের জন্য দায়ী কংগ্রেস। তাই একে হারাতেই হবে।

এদিকে আসামের উন্নয়নের কথা ভেবেই শুধু নয়, আসামকে বাঁচানোর স্বার্থে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তবে নির্বাচনী প্রচারে জেটলির মুখে শোনা গেছে মোদির ঠিক উল্টো কথা। জেটলি আশ্বাস দিয়েছেন, বিজেপি-অগপ জোট ক্ষমতায় এলেও বাঙালিদের ভয় নেই। তাদের নিরাপত্তার ভার নেবে বিজেপি। বিজেপি-অগপ জোট হওয়ায় বাংলাভাষিদের ঘর হারানোর আশঙ্কা দেখা দেবে কি না সেই প্রশ্নে জেটলি বলেন, এমন আশঙ্কাঅমূলক। আমরা বাংলাভাষিদের পূর্ণ সুরক্ষা দেব। আদতে কংগ্রেসের ভ্রান্ত ও স্বার্থসিদ্ধির নীতির কারণেই রাজ্যের জনবিন্যাসে বদল এসেছে। আসামকে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত রাজ্যের তালিকা থেকে বাদ দেয়া ও কেন্দ্রীয় সাহায্য কমানোর অভিযোগে কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের জবাবে জেটলি বলেছেন, কোন রাজ্য কোন খাতে কত টাকা পাবে তা কেন্দ্র বা দল নয় পরিকল্পনা কমিশন ঠিক করে দেয়।

তিনি জানান, ত্রয়োদশ কমিশনের আমলে রাজ্য পাঁচ বছরে মোট ৫৭ হাজার ৮৫৪ কোটি রুপি পেয়েছিল, সেখানে চতুর্দশ পরিকল্পনা কমিশনের আমলে তা ১৪৮ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৩৯ কোটি রুপি হবে। জেটলি জানান, বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত রাজ্যগুলো বিভিন্ন প্রকল্পে ৯০ ও ১০ অনুপাতে কেন্দ্রীয় সাহায্য পায়। নীতি আয়োগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসাম ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো সিংহভাগ প্রকল্পে ওই হারেই কেন্দ্রীয় সাহায্য পেতে থাকবে। মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন গগৈ।

করিমগঞ্জে আজ ভাষণ দেবেন মোদি

অবৈধ ‘বাংলাদেশি’র মৃত্যু নিয়ে

ভোট রাজনীতিতে উত্তেজনা

সিলেট সীমান্ত থেকে মাত্র কিছুক্ষণের দূরত্বে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ করিমগঞ্জে আসছেন। সেখানে তিনি আসামের উত্তেজনাপূর্ণ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিজেপি আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। আর এই নির্বাচনে সন্দেহভাজন বাঙলাদেশি হিসেবে এক লাখ ৩৬ হাজার ভোটার অংশ নিতে পারবেন কিনা সেটাই একটি জ্বলন্ত প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন ১৯৯৭ থেকে এসব ভোটারকে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে। অথচ তাদের অধিকাংশই হিন্দু হিসেবে বিজেপির ভোট ব্যাংক বলে মনে করা হয়। এদের একটি ক্ষুদ্র অংশই কেবল ভোটারের মর্যাদা ভোগ করছে।

এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি আসামের শিলচরের একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে সন্দেহভাজন ‘বিদেশি’ হিসেবে এক দিনমজুরের মৃত্যুর বিষয়টি উঠতে পারে বলে গতকাল হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপি এবারে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আসামে সরকার করার স্বপ্ন দেখছে।

শিলচর হলো আসামের বরাক উপত্যকার মূল প্রাণকেন্দ্র, যার তিনটি জেলারই রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদি ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিজেপি যদি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে তাহলে আসামের ডিটেনশন ক্যাম্প বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি বাংলাদেশি হিন্দুদের নাগরিকত্ব প্রদানের ঘোষণাও দিয়েছিলেন।

বুলু শব্দকার নামের ওই দিনমজুর শিলচরের এমন একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে বসবাস করতেন, মোদি যেখানে দাঁড়িয়ে তার ওইসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেখান থেকে ওই ক্যাম্পটি খুব কাছেই। ধারণা করা হচ্ছে, ৬৮ বছর বয়স্ক বুলুর অকাল মৃত্যুর বিষয়টি মোদির সফরকালে এনজিও এবং মানবাধিকার কর্মীদের কাছে বিশেষ ক্যাম্পেইনের হাতিয়ার হয়ে উঠবে। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘ভারতীয় বিদেশিদের’ দুঃখ-দুর্দশা তুলে ধরবেন। এই বিদেশিরা ‘ডি-ভোটার’ হিসেবে পরিচিত। যার অর্থ হলো যেসব ভারতীয় বাসিন্দা ভারতীয় নাগরিকত্বের সনদ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। যারা আসামে অবৈধভাবে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন কিংবা আসাম প্রশাসন যাদেরকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করেছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, ১৯৭৮ সালে মাঙ্গালদোই নামের একটি বিধানসভা নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারদের তালিকায় আকস্মিক বিরাট বৃদ্ধি দেখে তদন্ত শুরু হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা থেকে সকল ‘অ-নাগরিকদের’ বাদ দেয়ার নির্দেশ প্রদান করে। জরিপের পরে যারা নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে পারেনি তাদের নামের আগে একটি ডি অক্ষর বসানো হয়। এর অর্থ হলো ‘ডিসপিউটেড’। ২০০৭ সালে বুলু শব্দকারকে ২০০৭ সালে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে রায় দিলে ২০১০ সালে পুলিশ তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠায়। গত ১৭ই মার্চ তিনি মরা যান। তার বাড়ি বরাক ভেলির হৈলাকান্দি জেলায়।

অল ইন্ডিয়া ডিসপিউটডে বেঙ্গলি সমন্বয় কমিটি বলেছে, ডি-ভোটারদের সংখ্যা হবে ৬ লাখ হিন্দু। ইসি ৩ লাখ ৭০ হাজার ডি ভোটারকে কালো তালিকাভুক্ত করে। কিন্তু ১ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩১ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করে। তখন তাদের অনেকেই বৈধতা লাভ করে। তবে শেষ পর্যন্ত ১ লাখ ৩৬ হাজার ডি ভোটার হিসেবে টিকে যায়।

২০০৪ সালে গৌহাটি হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দেন, সকল ডি-ভোটার তাদের বৈধতা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকবে। কংগ্রেস সরকার ২০১১ সালের আদালতের আদেশে ডি ভোটারদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বিরুদ্ধে আপিল করেছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে ২০১১ সালের হাইকোর্টের আদেশ উল্টে দিয়ে বলেছেন, ডি-ভোটারদের মধ্যে যারাই তাদের কাগজপত্র দাখিল করতে পারবে তারাই ভোটার হতে পারবে।

বরাক ভেলির কালচারাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট তৈমুর আর চৌধুরী বলেন, বুলু মারা গেছেন। কারণ, বর্তমান কংগ্রেসী মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর মতো মোদিও তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বরাক ভেলিতে হিন্দু কার্ড খেলেই ১৫টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসন আনতে পেরেছিল।

মি. চৌধুরী বলেন, ২০১১ সালের আদেশ বাস্তবায়নে তরুণ গগৈর সরকার যদি আন্তরিক হতো, তাহলে অনেকেই ইতিমধ্যে ভোটার হতে পারতেন। আর পুলিশ ও প্রশাসন যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের আদেশের ব্যাপারে অন্ধকারে, তাই সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অকার্যকর রয়ে গেছে। তার কথায়, কোনো সরকার যদি সত্যিই ডি-ভোটারের কলঙ্ক থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে চায় তাহলে ১৯৫৫ সালের ভারতের নাগরিকত্ব আইনের ৬-ক ধারাটা বাতিল করতেই হবে।

সূত্র: শীর্ষনিউজডটকম,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/05/Election-Sagar-6-5-24.jpg

ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাচনে চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ের আভাস

  এম আবু হেনা সাগর;ঈদগাঁও : অবশেষে বহুল প্রত্যাশিত কক্সবাজারের নবসৃষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চারজন ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/