সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / শরণার্থী সমাচার / ভাড়াবাসা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে : ঈদগাঁওতে অবস্থান নেওয়া নতুন-পুরাতন রোহিঙ্গাদের মাঝে গ্রেফতার আতংক

ভাড়াবাসা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে : ঈদগাঁওতে অবস্থান নেওয়া নতুন-পুরাতন রোহিঙ্গাদের মাঝে গ্রেফতার আতংক

ফাইল ফটো

এম আবুহেনা সাগর; ঈদগাঁও :

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানের উপর নির্মম নির্যাতন, নিপীড়ন, গণহত্যার পর দেশত্যাগ করে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা টেকনাফ, উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়িসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে জেলা সদরের বৃহৎ এলাকা ঈদগাঁওর প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের ভাড়াবাসায় কৌশলী হয়ে দীর্ঘকাল ধরে অবস্থান করছে। তারা বিশাল এলাকাজুড়ে বাড়ীঘরে অনেকটা ছড়িয়ে ছিড়িয়ে রয়েছে। যাদের কারণে দেশীয়রা কোণঠাসা হয়ে পড়ার মত অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেন এলাকার সুশীল সমাজ। বর্তমানে শ্রম বাজার তাদের দখলে বললেই চলে। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির পেছনের কারন হচ্ছে ওরা।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁওর পাড়া মহল্লায় নানা ভাবে আশ্রয় নিয়েছে ওপার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। তবে বহুপূর্বে চলে এসে এলাকায় ছড়িয়ে ছিড়িয়ে অবস্থান করা রোহিঙ্গা আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীঘরে সাম্প্রতিক সময়ে নির্যাতন সহ্য করত না পেরে পালিয়ে আসা নতুনরা ও হরেক রকম কৌশল অবলম্বন করে অবস্থান করছে।

অন্যদিকে এরা ঈদগাঁও বাজার, তেলীপাড়া, বাশষ্টেশন সংলগ্ন বিভিন্ন ভাড়া কলোনী, ঈদগাঁও নদীর পাড়ে নির্মিত টিনের বেড়াযুক্ত কলোনীসহ পাশ্ববর্তী উপ বাজারের যত্রতত্র এলাকায় অবস্থান করছে। ঈদগাঁও এলাকায় প্রথম বারের মত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ্যাকশানে যাওয়ায় নতুন ও পুরাতন রোহিঙ্গাদের মাঝে দেখা দিয়েছে গ্রেফতার আতংক। এমনকি অনেকে ভাড়াবাসা ছেড়ে নিজ নিজ উদ্যোগে ক্যাম্পে চলে যাচ্ছে বলে এক সূত্রে প্রকাশ। আবার ১৬ নভেম্বর রাতে জালালাবাদের তেলীপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার পূর্বে খবর পেয়ে ভাড়াবাসায় অবস্থান নেওয়া এরা বাসা ছেড়ে পালিয়েছে। অনেকে আবার বাসাতে গোপনে থাকার চেষ্টা করেও প্রসাশনের কাছ থেকে রেহায় পায়নি।

এদিকে বৃহত্তর ঈদগাঁওর ভাদিতলা,হাসিনা পাহাড়, শিয়াপাড়া, দরগাহ পাড়া, মেহেরঘোনা, ভুতিয়ার পাড়া, চান্দেঁরঘোনা, পূর্ব নাপিতখালী, করাছী পাহাড়, ভাবীর দোকান, কাঞ্চনমালাসহ নানা পাড়া গাঁয়ে এদের অবস্থান ও রয়েছে শক্ত ভাবে।

অপরদিকে কলেজ গেইট এলাকার কলোনীগুলোতে ও তাদের অবস্থান পরিলক্ষিত। রোহিঙ্গাদের কারণে সামাজিক সংকট সহ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত হওয়ার আশংকা ও প্রকাশ করেন অনেকে। এলাকাতে বর্মী রোহিঙ্গাদের অবস্থানের ফলে মাদকের ছড়াছড়ি, আইন শৃংখলার চরম অবনতি হওয়ার শংকা ও প্রকাশ করেন সচেতন এলাকাবাসী। তবে গ্রামাঞ্চল থেকে ওদেরকে সনাক্তকরণ পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন এখন সময়ের দাবীতে পরিনত হয়ে পড়েছে ।

দেখা যায়, রোহিঙ্গারা ঈদগাঁওর পাহাড়ী এলাকা কিংবা সমতলে স্থান নিলেও দিনের বেলায় ভিক্ষা করে পরিবার পরিজনের ভরণ পোষন চালাতে। জনবহুল স্থান ত্যাগ করে এবার গ্রামমুখী রোহিঙ্গারা। ওপার থেকে আসা নর নারীরা এখানে বিষফোঁড়া হয়ে দাড়াবে বলে মনে করেন অসহায় মানুষজন । তারা এখানে এসে দেশীয়দের সাথে মিশে গিয়ে হরেক রকম কাজে কর্মে সুযোগ করে নিচ্ছে। বৃহত্তর এলাকায় নতুন-পুরাতন রোহিঙ্গারা কৌশলে অবস্থান করে সুযোগ পেলে অপরাদ অপকর্ম সংগঠিত করে নিরবে পালিয়ে যাওয়ার আশংকাও প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের সিনিয়র এক শিক্ষক জানান, ওপার থেকে আসা রোহিঙ্গারা আসলেই ঈদগাঁও এলাকার প্রায় গ্রামে প্রবেশ করছে কৌশলে। তাদের কারনে এলাকাজুড়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চুরি, ডাকাতিসহ অপরাদ অপকর্ম বৃদ্বি পাবে। স্ব স্ব এলাকার সচেতন মানুষ আর জনপ্রতিনিধি মিলে যদি এলাকায় দীর্ঘসময় ধরে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদেরকে শরণার্থী ক্যাম্পে প্রেরন করা হলে ভাল হয়। তবে এলাকাবাসীর মতে, প্রসাশন যদি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, তাহলে এলাকা থেকে এদের সরানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।

অন্যদিকে এসব রোহিঙ্গাদের অবাদ বিচরনের ফলে যানবাহনসহ স্থানীয় বাজার ও জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এদেশীয় মধ্যবিক্তসহ গরীব খেটে খাওয়া পরিবারগুলো। এখন মরার উপর খাঁড়ার ঘা এর মত উদ্বেগ উৎকন্ঠায় আর চরম আতংক বিরাজ করছে সাধারন মানুষের মাঝে। কারন উপজেলা প্রসাশনসহ আইনশৃংখলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে যত্রতত্রে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে। ভূমি মালিক, ভাড়াবাসায় আশ্রয় এবং ভাড়া দেওয়া মালিকদের মধ্য নতুন করে অজানা আতংক বিরাজ করতে শুরু করেছে।

এদিকে রোহিঙ্গারা নানাভাবে মোটা অংকের কালো টাকার বিনিময়ে এদেশীয় আইডি কার্ড তৈরি করে চলছে। যা দেখিয়ে ক্ষনিকের জন্য হলেও আশ্রয় খুঁজে পেতে চান তারা। তবে এসব জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) যাচাই বাচাই না করে কিছু এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গাদের মাঝে লোন দিচ্ছে। যার সত্যতা সরুপ ঈদগাঁওতে এক এনজিও কর্মকর্তাকে এক সপ্তাহের বিনাশ্রমে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

ঈদগাঁও বাজার ও পাশ্বর্বতী উপ বাজার সমুহের বিভিন্ন কম্পিউটার দোকানগুলোতে নজরদারী বাড়ানোর দাবী সচেতন মহলের।

এ ব্যাপারে ককসবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নোমান হোসেন রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

গত দেড়মাসে ৩টি পাহাড় কেটে সাবাড় : পাহাড়খেকো আহসান উল্লাহ’কে ঠেকাবে কে ?

  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলেও এসবের কোনো কিছুই ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/