জীবনে কোনো না কোনো সময়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে আপনাকেও নিশ্চয়ই লম্বা সময়ে প্রস্রাব চেপে রাখতে হয়েছে। লম্বা ভ্রমণে, সিনেমা দেখার মাঝখানে, মিটিং চলাকালীন বা নেহায়েত আলসেমি করেও অনেকে লম্বা সময় মুত্রত্যাগ করেন না। কাজটি আপাতত তেমন ক্ষতিকর মনে না হলেও একটা সময়ে এই অভ্যাস আপনার অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।
মুত্রত্যাগ যথেষ্ট জরুরী একটা কাজ। আমাদের কিডনি শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি এবং সেই সাথে রক্ত থেকে বর্জ্য বের করে দেয়। এই মূত্র এরপর আমাদের ব্লাডারে জমা হয়। ১-২ কাপ মূত্র এখানে জমা থাকে কোনো সমস্যা ছাড়াই। কিন্তু লম্বা সময় মুত্রত্যাগ না করলে ব্লাডার প্রসারিত হয়ে যেতে পারে অতিরিক্ত মূত্র ধারণের জন্য।
একটি গবেষণায় দেখা যায়, নার্সরা অতিরিক্ত কাজের চাপে অনেকটা সময় মূত্র চেপে রাখেন বলে তাদের ব্লাডার প্রায় দ্বিগুণ আকৃতি হয়ে যায়, এতে তাদের কোনো ক্ষতিও হয় না।
কিন্তু তারমানে এই নয় যে আপনি শুধু শুধু মূত্র চেপে রাখবেন। এতে ব্লাডার ছাড়াও অন্য কিছু জায়গায় চাপ পড়তে পারে, যেমন স্ফিংক্টার পেশী। আমাদের মুত্রত্যাগ ও চেপে রাখার কাজটা এই পেশীর ওপরেই নির্ভর করে। মূত্র চেপে রাখাটাকে অভ্যাসে পরিণত করলে এই পেশীর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন আপনি, যে কোনো মুহূর্তে আপনার অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুত্রত্যাগ হয়ে যেতে পারে। এর পাশাপাশি ইউরিনারি রিটেনশন নামের একটি সমস্যাও হতে পারে যেখানে ব্লাডারে অতিরিক্ত মূত্র জমা হলেও আপনি টের পান না। এ থেকে ব্লাডারে বিভিন্ন ধরণের জীবাণু জমে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
আর আপনার ভাগ্য যদি খুবই খারাপ হয়, তাহলে মূত্র চেপে রাখতে গিয়ে কিছু মূত্র উল্টো কিডনিতে চলে যেতে পারে। এ থেকে আপনার কিডনি ফেইলিওর এবং মৃত্যু হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, লম্বা সময় মুত্রত্যাগ না করাটা বিপজ্জনক। নেহায়েতই সুযোগ না পেলে মাঝে মাঝে কিছু সময়ের জন্য প্রস্রাব আটকে রাখা যেতে পারে। কিন্তু এটাকে অভ্যাসে পরিণত করবেন না যেন।
সূত্র:কে এন দেয়া-priyo.com;ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.