যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের পেছনে ৪০ বিলিয়নের বেশি অর্থ খরচ করেছেন বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। তিনি বলেন, আমরা সিরিয়ান শরণার্থীদের জন্য ৪০ বিলিয়নের বেশি অর্থ খরচ করেছি। জাতিসংঘের শরণার্থী সংক্রান্ত হাইকমিশনার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের কথা রাখেনি।
বৃহস্পতিবার কুয়ালালাপুর সামিটে এ কথা জানান তিনি।
এরদোগান বলেন, এখন, ৫০ হাজার মানুষ ইদলিব থেকে পালিয়ে আমাদের দেশে এসেছে। আমরা ইতিমধ্যে ৪০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছি। এরমধ্যেই অতিরিক্ত ৫০ হাজার মানুষ এসেছে। সম্ভবত এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
কুয়ালালামপুর সামিটে মালয়েশিয়ান প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে এক বৈঠকে এরদোগান মুসলিম বিশ্বের উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা করেন।
এরদোগান এ সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করে বলেন, সিরিয়ার শরণার্থীদের সমর্থন ও তাদের দেখাশোনা করছে তুরস্ক।
আরব লিগের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনায় এরদোগান
আরব লিগের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে সামরিক দিক দিয়ে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, আরব লিগ কীভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলে যে, তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করুন?
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা কাদের থাকার ব্যবস্থা করেছি? আমরা (মুসলিম বিশ্ব) আমাদের পৌনে ৪০ লাখ সিরিয়ান আরব ভাই-বোনদের কোথায় জায়গা দিয়েছি? আমরা তাদের তুরস্কে নিয়ে গিয়েছি।
তুরস্কের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের (অপারেশন পিস স্প্রিং) বিরুদ্ধে আরবলিগের নিন্দা ও আঙ্কারার সঙ্গে সম্পর্ক অবনতি ঘটানোর আহ্বানের সমালোচনা করেন এরদোগান।
তিনি বলেন, কেন আমরা তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছি? তারা পিপা বোমা (ব্যারেল বোম্ব) থেকে পালাচ্ছিল।
এ সময় প্রেসিডেন্ট এরদোগান বিশ্ব নেতাদের প্রতি ‘ন্যায় দিয়ে বিচার পরিচালনার’ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এর জন্য আমাদের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থাকা দরকার। শুধু কথা বললে কিছুই হয় না।
শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল গঠনের পরিকল্পনায় সমর্থন না পাওয়ায় তিনি মুসলিম বিশ্বের সমালোচনা করে বলেন, মুসলিম বিশ্ব কি দরিদ্র? তারা কেন এটির সমর্থন করেনি?
এরদোগান বলেন, আমরা বলছি, আসুন আমাদের শরণার্থী ভাই-বোনদের তাদের নিজেদের জমিতে বসবাসের জন্য বসতি তৈরি করি। আমরা মুসলিম বিশ্বসহ পুরো বিশ্বকে এ বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছি। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন দেয়নি।
নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশকে অবহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। সন্ত্রাস দমনে সৌদি আরবের পরোক্ষ সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, তবে আমাদের অস্ত্রশস্ত্র আসছে। কাদের জন্য অস্ত্রশস্ত্র আসছে? যারা সন্ত্রাসী সংগঠন তাদের জন্য। সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই নিয়ে অনেক দেশ বলেছে এটি করা উচিত, তারা কাজের চেয়ে বেশি প্রকাশ করে।
সূত্র: deshebideshe.com – ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.