মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা। কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় শুদ্ধি লাভের এই ধর্মীয় উৎসব। প্রবারণা পূর্ণিমাকে ঘিরে এবার নানা ধর্মীয় উৎসবের আয়োজন করে লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ভদ্রসেন পাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের পরিচালনা কমিটি।
এবারের প্রবারণা পূর্ণিমায় ভদ্রসেন পাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় ছিল বান্দরবান জেলার সকল বৌদ্ধ বিহারের চেয়ে অধিক সংখ্যক ফানুস উড়ানো। বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সীতারঞ্জন বড়ুয়া বলেন, আমরা এবার উক্ত বিহারের পক্ষ থেকে ৩৫০টি ফানুস উড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রোববার বিকেল থেকে ফানুস উড়ানো শুরু করি। বান্দরবান জেলার সর্বাধিক ফানুস উড়ানো রেকর্ড এবার আমাদের। গৌতম বৌদ্ধের স্মরণে আমরা আকাশে প্রদীপ প্রজ্বালনের প্রতীক হিসেবে ফানুস উড়াই।
উৎসবকালীন সময়ে উপস্থিত ছিলেন, ভদ্রসেন পাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ বিমলানন্দ ভিক্ষু, অধ্যক্ষ শ্রীমহৎ জ্ঞানদর্শী ভিক্ষু, বিহারের সভাপতি সীতারঞ্জন বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক সাবুল বড়ুয়া, কোষাধ্যক্ষ লিটন বড়ুয়া, উক্ত এলাকার কৃতি সন্তান ও ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের সচিব মানিক বড়ুয়া, বিশ্বজিৎ বড়–য়া সহ প্রমূখ। এছাড়া আশপাশের শতশত বৌদ্ধ ধর্মালম্বী লোকজন উৎসব দেখতে বিহারে ভিঢ় জমায়।
প্রসঙ্গত, প্রবারণা পূর্ণিমার অন্য একটি উৎসবময় দিক হলো ফানুস উত্তোলন। বৌদ্ধ শাস্ত্রমতে, বুদ্ধদেব আধ্যাত্মিক শক্তির বলে দেবলোকে গিয়ে মা’কে ধর্মদেশনা করে এদিন স্বর্গ থেকে মর্ত্যে অবতরণ করেন। সেই ঘটনার স্মরণে প্রবারণা পূর্ণিমায় আকাশে প্রদীপ প্রজ্বালনের প্রতীক হিসেবে ফানুস ওড়ানো হয়।
অন্য একটি কাহিনী অনুযায়ী, সিদ্ধার্থ গৌতম কোনো একসময় মাথার একগুচ্ছ চুল কেটে বলেছিলেন, তিনি যদি সিদ্ধিলাভের উপযুক্ত হন, তাহলে এই কর্তিত চুল যেন নিচে না পড়ে ঊর্ধ্বে উঠে যায়। তার ইচ্ছানুযায়ী সেই চুলগুচ্ছ আকাশে উঠে গিয়েছিল। সেই ঘটনার প্রতিকী রূপ হিসেবেও আকাশে ফানুস ওড়ানো হয় প্রবারণায়।
You must be logged in to post a comment.