সাম্প্রতিক....
Home / জাতীয় / আজ বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস 

আজ বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস 

অনলাইন ডেস্ক :

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস আজ। হেপাটাইটিস মূলত যকৃতের প্রদাহকে বুঝায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। জনসাধারণের মাঝে ‘ভাইরাল হেপাটাইটিস’ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালিত হয়। ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স’ বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে হেপাটাইটিস দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়। এরপর থেকে প্রতিবছর ২৮ জুলাই দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিবসটির স্বীকৃতি দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে- এই দুই ভাইরাস প্রধানত রক্তের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির মাঝে ছড়ায়। এ ছাড়া জন্মের সময় সংক্রমিত মায়ের শরীর থেকে বাচ্চার শরীরে, অনিরাপদ যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এবং একজনের টুথব্রাশ, নেইল কাটার, রেজর আরেকজন ব্যবহার করলে একজন থেকে আরেকজনের মাঝে ছড়ায়। খাবার, পানি এবং স্পর্শ অথবা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাস ছড়ায় না।

নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী বারুচ স্যামুয়েল ব্লুমবার্গ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের আবিষ্কার করেন, এই রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করেন এবং টিকাকরণ শুরু করেন। চিকিৎসাবিদ্যায় তার এই অবদানকে স্বীকৃতি জানাতে ২৮ জুলাই তার জন্মদিনে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হয়।

হেপাটাইটিস এক নীরব ঘাতক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে প্রায় ১ কোটি মানুষ আক্রান্ত। বেসরকারি হিসাবে হেপাটাইটিসে প্রতি বছর ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় দেশে। হেপাটাইটিস নিয়ে উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সারা বিশ্বে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে সংক্রমিত ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই জানেন না যে তার শরীরে এই ভাইরাস আছে। এমনটা চলতে থাকলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটসজনিত রোগে বিশ্বের জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান করেছে। যাদের হেপাটাইটিস ধরা পড়েছে তাদের জীবন রক্ষার জন্য দ্রুত পরীক্ষা করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত এবং গর্ভবতী মায়েদের হেপাটাইটিস চিকিৎসা করা ও নবজাতকদের সঠিক সময় টিকা দেওয়া জরুরি বলছে।

লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, জন্ডিস নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের শতকরা ৭৬ ভাগ হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত।

হেপাটাইটিস হলো যকৃতের এক প্রকার প্রদাহ। দু’প্রকারের হেপাটাইটিস রয়েছে- তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী। দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বেড়ে গেলে, পরবর্তীকালে তা থেকে লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সার হতে পারে। পাঁচ প্রকারের হেপাটাইটিস ভাইরাস হয়- হেপাটাইটিস এ ভাইরাস (এইচএভি), হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (এইচবিভি), হেপাটাইটিস সি ভাইরাস (এইচসিভি), হেপাটাইটিস ডি ভাইরাস (এইচডিভি) এবং হেপাটাইটিস ই ভাইরাস (এইচইভি), সারা বিশ্ব জুড়ে হেপাটাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো এই ভাইরাসগুলো।

এই হেপাটাইটিস বি এবং সি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ তৈরি করে, দীর্ঘ সময় কখনো কখনো বছর বা দশক ধরে এর কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় না এবং তারপরে এটাই লিভার ক্যান্সারের মূল কারণে পরিণত হয়। সর্বজনীন স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তির প্রেক্ষাপটে বলা যেতে পারে, হেপাটাইটিস প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ফলে হেপাটাইটিস বি এবং সি’র কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যু হ্রাস পাবে।

হেপাটাইটিস বি এবং সি একসঙ্গে মৃত্যুর সর্বাধিক সাধারণ কারণ হিসাবে পরিচিত, প্রতি বছর ১.৩ মিলিয়ন মানুষের প্রাণহানি ঘটে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সময়ে, ভাইরাল হেপাটাইটিসের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

লিভার সিরোসিসের লক্ষণগুলো (হেপাটাইটিস) প্রায়শই কোনো উপসর্গ থাকে না। যদি উপসর্গ দেখা দেয় তাবে সেগুলো হতে পারে:

– পেশি এবং অস্থিসন্ধিতে ব্যথা
– উচ্চ তাপমাত্রা / অসুস্থ অনুভব করা
– শরীর দুর্বল লাগা / অস্বাভাবিকভাবে ক্লান্তি
– ক্ষুধামান্দ্য বা অরুচি
– পেটে ব্যথা
– গাঢ় প্রস্রাব
– ফ্যাকাশে, ধূসর রঙের মল
– ত্বকে চুলকানি
– বমি হওয়া
– জন্ডিস হওয়া
– পেটে এবং পায়ে পানি এসে ফুলে যাওয়া

পরীক্ষা এবং চিকিৎসার প্রাপ্যতা প্রসারিত করতে হবে। সময়মতো ভাইরাল হেপাটাইটিসের পরীক্ষা ও চিকিৎসা করালে যকৃতের ক্যানসার এবং লিভারের অন্যান্য গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করা যাবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/04/Sagar-23-4-2024.jpeg

ফরেস্ট রেঞ্জার’স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন কমিটি ঘোষণা : রিয়াজ সহ-সভাপতি মনোনীত

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :বাংলাদেশ ফরেস্ট রেঞ্জার’স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/