সাম্প্রতিক....
Home / জাতীয় / ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান: টেরাকোটার ম্যুরাল

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান: টেরাকোটার ম্যুরাল

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে টেরাকোটার ম্যুরলে।

স্বাধীনতার ঘোষণা, পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণসহ বিভিন্ন কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে সুপরিচিত। আর এই সকল ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এখানে গড়ে তোলা হয়েছে নানান স্থাপনা। তাৎপর্যপূর্ণ এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে শিখা চিরন্তন, স্বাধীনতা টাওয়ার, ঢাকা জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা ইত্যাদি। স্থাপনাগুলো দেখতে, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের টানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থীর ভিড় জমে।

ম্যুরাল; ভাষা আন্দোলনের চিত্র ফুটে উঠেছে এখানে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য কোনো টিকিট দরকার হয় না। তাই কত জন মানুষ প্রতিদিন আসছেন তার সঠিক সংখ্যা বলা কঠিন। তবে, কর্তব্যরত গার্ডদের প্রধানের সাথে কথা বলে আমরা জানতে পারি এই সংখ্যা কখনোই সারাদিনে হাজারের কম হয় না। আর ছুটির দিনগুলোতে এই সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

সেই ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে এখানে। কখনো রেসকোর্সের ময়দান হিসেবে জনপ্রিয় এই এলাকাটি যেন ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক ঘটনার মাইলফলকে। প্রতিটি ঘটনা, তার পেছনের ইতিহাস, গণমানুষের সম্পৃক্ততা এত গুরুত্ব বহন করছে যে সেই স্মৃতিকে অস্বীকার তো করা যায়ই না বরং আয়জনের প্রয়োজন পড়ে আরও বেশি ধরে রাখার। স্মৃতি ধরে রাখতে ভাস্কর্য বা ম্যুরালের বিকল্প নেই। সময়কে জীবন্ত করে তুলে ধরতে বিকল্প নেউ জাদুঘরের। এর কোনোটিই বাদ যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এখানে রয়েছে স্বাধীনতা টাওয়ার, প্লাজা চত্বর, টেরাকোটা ম্যুরাল, ঝরনাধারা, ভিআইপি ও সার্ভিস ব্লক, উন্মুক্ত মঞ্চ, ওয়াটার বডি, কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, সিসি টিভি, ফায়ার ফাইটিং, সাউন্ড সিস্টেম, শব্দনিরোধ ব্যবস্থা, শিখা চিরন্তন ও ওয়াকওয়ে।

ম্যুরাল; বঙ্গবন্ধুর কারাবাস।

এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করা হয় ১৯৯৬ সালে। যা বহুবার নকশা পরিবর্তন করে বেশ কয়েক ধাপে এখন প্রায় শেষ অংশে এসে পৌঁছেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ২৫শে মার্চ উদ্বোধনের পর ২৬শে মার্চ থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় স্বাধীনতা টাওয়ার, প্লাজা চত্বর, টেরাকোটা ম্যুরাল, ঝরনাধারা ইত্যাদি। বিজয়ের মাসে বিজয়ের সমস্ত প্রতীকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আজ চলুন জেনে নিই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খচিত টেরাকোটা ম্যুরালটি সম্পর্কে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্লাজা চত্বরের পূর্ব পাশের দেয়ালে স্বাধীনতা জাদুঘরের মূল প্রবেশ পথের উপরে ও দুই পাশে রয়েছে বিশাল অংশ জুড়ে সুনিপুণ টেরাকোটা শৈলীতে নির্মিত ম্যুরাল। ম্যুরালের প্রথম অংশে রয়েছে বাঙালির চিরচেনা প্রাণের বাক্য ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা। পর্যায়ক্রমে ৫ জন প্রখ্যাত শিল্পীর দক্ষতায় এই ম্যুরালে তেভাগা আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, পাকিস্তান বাহিনীর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল, বাঙ্গালির মুক্তি সংগ্রাম , বিজয় অর্জন এমনকি স্বাধীন বাংলার ছায়া সুনিবিড় গ্রামীণ জীবন সবই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এক কথায় এই ম্যুরালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পুরো ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।

ম্যুরাল; মুক্তিযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠগণ।

ম্যুরালের নির্মাতা: এই ম্যুরালটি বাংলাদেশের পাঁচ জন প্রখ্যাত শিল্পীর অনন্য প্রজ্ঞা আর শিল্পজ্ঞান দ্বারা তৈরি। এই পাঁচ জন হলেন মোহাম্মদ ইউনুস, মুকুল মকসুউদ্দীন, শিশির ভট্টাচার্য, ইফতেখারউদ্দিন আহমেদ এবং শ্যামল চৌধুরী।

চাইলে যে কোন দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে কোনো সময়ে ঘুরে আসতে পারেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। পাশাপাশি দেখে আসতে পারেন এ অনন্য নির্মাণ শৈলীর টেরাকোটার ম্যুরালটি। ইতিহাসকে ব্যাখ্যা করার এই অনন্য প্রয়াস আপনার অবশ্যই ভালো লাগবে।

* এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। দেখার জন্য কোনো টিকিট কাটতে বা ফি দিতে হয় না।

সূত্র:খন্দকার মহিউদ্দিন-priyo.com;ডেস্ক।

 

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/04/Sagar-23-4-2024.jpeg

ফরেস্ট রেঞ্জার’স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন কমিটি ঘোষণা : রিয়াজ সহ-সভাপতি মনোনীত

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :বাংলাদেশ ফরেস্ট রেঞ্জার’স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/