অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সভিউ :
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর মুহসিনিয়াপাড়া হতে বাংলা বাজার ৩কি.মি. দূরত্বের এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০-১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত। কিন্তু ওই সড়কে সিএনজি-টমটম সমিতির নামে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা নূর আহমদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই সড়কে চলাচলরত সিএনজি ও টমটম গাড়ীর বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকায় প্রধান সড়কে চলাচল করতে পারেনা। ফলে ওই সড়কের সিএনজি ও টমটমের ড্রাইভাররা পরিবহন সমিতি গঠন করে স্থানীয় চেয়ারম্যানের ভাতিজা নুর আহমদের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট’ গড়ে তুলে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে আসছে বলে জানান স্থানীয়রা। যার বড় একটি অংশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পকেটে যায় বলেও জানান তারা।
এদিকে কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা হতে রামু চৌমহনী ষ্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিমি রাস্তায় সি.এন.জি ও টমটম ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা। বাংলাবাজার হতে খরুলিয়া প্রায় ৩ কিমি রাস্তার ভাড়া জনপ্রতি ৫টাকা হলেও মুহসিনিয়া পাড়া হতে বাংলা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিমি রাস্তার টমটম ও সি.এন.জি ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা হারে জোর পূর্বক আদায় করছে ওই সিন্ডিকেট।
অতীতে সড়কটি ইটের হলেও বর্তমানে পুরো সড়কটি পাকা হওয়ার কারণে পরিবহন খরচ কমলেও চালক সিন্ডিকেট তথা কথিত সমিতির নামে জোর পূর্বক জনপ্রতি ২০টাকা হারে ভাড়া আদায় করছে। এতে করে এলাকার শিক্ষার্থী ও সাধারন জনগণ যেমন হয়রানী শিকার হচ্ছে তেমনি সরকারের উন্নয়নের সুফল না পাওয়ায় সরকারের সুনামও ক্ষুন্ন হচ্ছে।
তাছাড়া প্রায় ৯০ শতাংশ গাড়ীর লাইসেন্স ও ফিটনেস না থাকায় ড্রাইভার ও গাড়ী সরকারী কর ফাঁকি দেওয়ার কারণে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অপর দিকে এই সড়কে সিএনজি ও টমটম পরিবহন সমিতির প্রভাব কাটিয়ে সমিতির অন্তর্ভুক্ত ছাড়া বাইরের অন্য কোন সিএনজি ও টমটম গাড়ী চলাচলে বাধা প্রদান করছে। ফলে এলাকার ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণ ওই সমিতির অন্তর্ভুক্ত গাড়ীতে যাতায়াত করতে এক প্রকার বাধ্য হতে হচ্ছে।
ওই সড়কের টমটম ও সি.এন.জি ভাড়া সরকারীভাবে নির্ধারণ করে দেয়ার দাবীতে ২৪ নভেম্বর এলাকাবাসী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আবেদন করেন। নির্বাহী অফিসার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নিদের্শও প্রদান করেন। কিন্তু ওই ইউ.পি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ নির্দেশ অমান্য করে তার ভাতিজা সিএনজি-টমটম সমিতির সভাপতি নূর আহমদের দ্বারা বশীভূত হয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে সাধারণ যাত্রী ও ড্রাইভারের মধ্যে ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়ত বাকবিতন্ডা এমনকি মারামারিও হচ্ছে বলে জানান।
এব্যাপারে স্থানীয় শিক্ষক ছলিম উল্লাহ জানান, মুহসিনিয়াপাড়া-বাংলা বাজার রাস্তায় প্রতিদিন ভাড়ার নামে এক প্রকার চাঁদাবাজি চলছে। প্রতিনিয়ত ভাড়া নিয়ে ড্রাইভারদের সাথে যাত্রী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কথা কাটাকাটি হচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের সংর্ঘষ সহ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশংকা ব্যক্ত করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ড্রাইভার জানান, গাড়ীর ভাড়া স্থানীয় চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। চেয়ারম্যান যেভাবে বলে আমরা সে ভাবে ভাড়া নিচ্ছি। এতে আমাদের বা সমিতির করার কিছুই নেই।
এই ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই অবস্থায় ওই সড়কে তথাকথিত অনিবন্ধিত সমিতির আওতায় চলাচল করা লাইসেন্সবিহীন গাড়ীর সিরিয়াল ভেঙ্গে দিয়ে ভাড়া নির্ধারণ পূর্বক সকল প্রকার যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
You must be logged in to post a comment.