নিজস্ব প্রতিনিধি; লামা-আলীকদম :
বান্দরবানের লামায় অসহায় এক পান ব্যবসায়ীর ১৮ বছরের ভোগদখলীয় জায়গা জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২ মার্চ) সকাল ১০টায় এবং সন্ধ্যায় ভাড়াটিয়া ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে দুই দফায় হামলা চালানো হয়। আদালতে মামলা চলমান থাকার পরেও প্রতিপক্ষ লোকজন প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পরোক্ষ সহায়তায় বার বার জায়গা দখলের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত জায়গার মালিক আবুল হাসেম। এই বিষয়ে তিনি প্রতিকার পেতে ৫ জনকে বিবাদী ও ২০/২৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে শনিবার দুপুরে লামা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
থানায় দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আবুল হাসেম লামা বাজারের একজন পান ব্যবসায়ী। বিগত ২০০৬ সালের ১২ মার্চ মামলার ১নং বিবাদী মোঃ এরশাদ ও ২নং বিবাদী মোঃ ফরিদ এর পিতা মৃত আনু মিয়ার কাছ থেকে বায়নানামা দলিল নং- ১২২/২০০৬ মূলে লামা থানাধীন ২৯৩নং ছাগলখাইয়া মৌজায় খতিয়ান নং- ১৪৫ এর আন্দরে ৩০ শতক ১ম শ্রেণীর জমি এবং একই মৌজায় হোল্ডিং নং- ২৭০ এর আন্দরে ৩০ শতক ২য় শ্রেণীর জমি সর্বমোট ৬০ শতক ১ম ও ২য় শ্রেণীর জমি ক্রয় করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ সন সন খাজনা পরিশোধ করে তিনি ভোগদখলে আছেন। উক্ত ক্রয়কৃত জমির সীমানায় টিনের বেড়া নির্মাণ করেন। বিবাদীগণ দীর্ঘদিন যাবৎ আমার উক্ত জায়গার উপর লোভের বশবর্তী হয়ে জোরপূর্বক জবরদখল করতে পায়তারা করে আসছেন। বিবাদীগণ ইতিপূর্বেও আমার উক্ত জায়গা জবর দখলের অপচেষ্টা করে। তাদের বিরুদ্ধে গত ২০২২ সালে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় মামলা নং- ৩৩/২০২২ দায়ের করি, যাহা অদ্যবধি চলমান রহিয়াছে। এছাড়াও গত ২০২৩ সালে আমি বিজ্ঞ জেলা জজ আদালত, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় একটি মিস আপীল মামলা দায়ের করি, যাহার নং- ২১/২০২৩, উক্ত মামলাটিও বর্তমানে চলমান আছে। উক্ত মামলাগুলোর প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত উক্ত জমিতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
বিবাদীগণের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একাধিক মামলা চলমান থাকার পরেও আদেশ অমান্য করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাহুর জোরে বিবাদীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশনায় অন্যান্য বিবাদীগণসহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন্য বিবাদী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে হাতে দা, কোদাল, লোহার রড, খন্তাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়া আমার নিজ নামীয় জায়গায় অনধিকার প্রবেশ করিয়া আজ ২ মার্চ সকাল অনুমান ১০ টার সময় আমার জায়গার সীমানায় প্রদত্ত টিনের ঘেরা ভাংচুর করিয়া নিয়া যায় এবং উক্ত জমি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিয়ে আমার আনুমানিক ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করে। আমরা বাঁধা প্রদান করলে বিবাদীগণ আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে ২৫/৩০ জন ভাড়াটিয়া লোক তেড়ে আসে। আমরা কোনরকম পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করি। বিবাদীগণ বর্তমানেও উক্ত জমি জবরদখলের জন্য বিভিন্ন কার্যকলাপ চলমান রেখেছে এবং আমরা প্রাণভয়ে উক্ত জমিতে প্রবেশ করতে পারছি না।
বিবাদীগণ সুযোগে পেলে আমি সহ আমার পরিবারের লোকজনদেরকে হত্যা করবে, আমাদের সম্পূর্ণ জায়গা জোরপূর্বক দখল করে আমাদেরকে ভিটা ছাড়া করবে মর্মে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করছে। বিবাদীগণের এহেন বিষয়ে আমরা পুনরায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানালে বিবাদীগণ উশৃঙ্খল ও আইন অমান্যকারী লোক হওয়ায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। আইনী সহায়তা পেতে আমরা লামা থানায় অভিযোগ করি।
লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাদ্দাম হোসেন বলেন, অফিসার ইনচার্জ মহোদয়ের নির্দেশে আমি সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে বিরোধীয় জায়গা পরিদর্শন করি। আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উক্ত জায়গায় কাউকে প্রবেশ না করতে নিষেধ করে আসি। কেউ আইন না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
You must be logged in to post a comment.