সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / গুণের আগুন, গুণের জল

গুণের আগুন, গুণের জল

Nirmalendo Gun

-: সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম :-

গুণ বেড়ে উঠেছেন বাংলাদেশের জেগে ওঠার সময়টাকে নিজের ভেতরে নিয়ে। এ জন্য তাঁর কবিতা চলে এ দেশের ইতিহাসের সমান্তরালে। বাংলাদেশে সত্তরের একটা অভিঘাত ছিল। একইভাবে পঞ্চাশের, বাহাত্তরের, এবং পুরো আশির দশকের—তার পরের সময়কালের আলাদা আলাদা অভিঘাত ছিল। এই সময় মানুষের চিন্তাচেতনা, আদর্শ-সংগ্রাম, জীবনযাপন—সবখানেই ঘটে গেছে অনেক পরিবর্তন। মাঝখানে পশ্চিমা দৃশ্যসংস্কৃতির ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছে আমাদের জীবনে। প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগের প্রভাবে বদলে গেছে মানুষের চিন্তাভাবনা। সত্তরে যে দ্রোহ, ঝাঁজ, ও প্রত্যয় ছিল তারুণ্যের, তা কি আশিতে এসে অটুট থেকেছে?

গুণের আগুন, গুণের জল

কিছু কবি আছেন, যাঁরা কবিতার মুহূর্ত তৈরি করেন, তারপর বর্তমানের পটে আর ভবিষ্যতের মুকুরে আঁকা হয়ে যান। এই মুহূর্তগুলো কোনো এক সময়ের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে একটা ভাষা দেয়, যে ভাষা জাগায় মানুষকে। গত শতকের পঞ্চাশ-ষাটের দশকে এ রকম কিছু মুহূর্ত এসেছিল আমাদের কবিতায়, আর কিছু অবাক সৌধ দাঁড়িয়েছিল মাথা তুলে, কিছুকাল আগেও যে জমি বিরান ছিল তাতে। এই সৌধের কারিগরেরা বিশ্বটাকে জানতেন, পৃথিবীকে পড়তেন, কিন্তু তাঁদের চোখজুড়ে ছিল স্বদেশ।

ষাট গিয়ে সত্তরে ঠেকল, দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হলো, মানুষ পথে নামল। স্কুলের শিশুও জানল, সামনে পরিবর্তন। কবিতাকে ছুটি দিয়ে এই সময় মানুষের তো সংগ্রামের মিছিলে নামারই কথা। কিন্তু ছুটি কী দেবে মানুষ, উল্টো কবিতাকে তারা হাতে তুলে নিল ঝান্ডার মতো। একটা মুহূর্ত বটে। এই মুহূর্তটা প্রেমাংশুর রক্ত চাই-এর অথবা অন্যভাবে বললে, প্রেমাংশুর রক্ত চাই—আরও কিছু কবিতার বই এবং কবিতার সঙ্গে নিয়ে এল মুহূর্তটা। নভেম্বরে বইটি বেরোল, তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। বন্ধুরা মিলে বই কিনি, পড়ি। গুণের বই কেনা হলো, পড়া হলো। মনে হলো, কবিতার ভেতরে এ রকম আগুনের জন্য আমরা অনেক দিন ধরে বসে ছিলাম। সেই থেকে নির্মলেন্দু গুণ আমাদের হয়ে গেলেন। আমাদের মানে যারা চোখে, পকেটে স্বপ্ন নিয়ে ঘুরতাম, যেসব স্বপ্ন ছিল দিনবদল আর স্বাধীনতা নিয়ে, শ্রেণিসংগ্রাম আর বিপ্লব নিয়ে।

আর দুদিন বাদে (২১ জুন), গুণের বয়স যখন সত্তর হচ্ছে, তাঁর প্রেমাংশুর রক্ত চাই পড়ে আবার ফিরে গেলাম সেই মুহূর্তটায়। এখনো এই বইয়ের কবিতাগুলোতে দেখি আগুন, সেই ‘জীবনের ফুল’, সেই ‘উদ্ধত পথে উন্নত হাত’ আর ‘শাণিত দিনের সোনারঙ’, এবং বুঝতে চেষ্টা করি, মাত্র ছাব্বিশ বছরের এক তরুণ কবি কীভাবে একটি প্রজন্মকে নাড়িয়ে দিলেন, গোড়াসুদ্ধ?

কবিতা নিয়ে সত্তরে আমাদের তর্ক হতো। মার্ক্স, অ্যাঙ্গেলস আর লেনিন তখন আমাদের প্র্যাক্সিসের পথ দেখাচ্ছেন—তত্ত্ব ছেড়ে নামতে বলছেন চর্চায়। মার্ক্স লিখেছিলেন, দার্শনিকেরা অনেক ভালো কথা বলেছেন, এখন দরকার দুনিয়াটা বদলানো। বা এ রকম কিছু। আমরাও ভাবতাম, দর্শন ছেড়ে দিনবদলের পথে নামাটা অনেক জরুরি। তর্ক আরও হতো কবিতার আধুনিকতা নিয়ে। চোখের সামনে তখন আদর্শ হয়ে আছেন টি এস এলিয়ট, এজরা পাউন্ড, বুদ্ধদেব বসু। নভেম্বরের পর আমাদের তর্কে ঢুকল গুণের কবিতা, দেখলাম, গুণ তো দুনিয়াটা বদলানোর পথেই আছেন, নিজের কবিতা নিয়ে; এবং তিনি তো সব সংজ্ঞাতেই আধুনিক। তাঁর চিন্তা মানুষ নিয়ে, সময় নিয়ে, মানুষের সংগ্রাম নিয়ে। তাঁর কবিতায় প্রেমও আছে, তবে সেই প্রেম সমর্পিত বিপ্লবে। তাঁর ভাষা ঝকঝকে, দীপ্ত; যা বলার তিনি স্পষ্ট করেই বলেন; শরীর নিয়ে—নারীর শরীর নিয়ে ভোগেন না কোনো দ্বিধায়; তাঁর উতপেক্ষা-উপমা ঋজু, সেগুলোতে হঠাত্-আবিষ্কারের একটা আনন্দের পাশাপাশি কল্পনার দার্ঢ্যটা ফুটে ওঠে খুব; তিনিও মার্ক্স-লেনিন থেকে পাঠ নেন, কিন্তু তাঁর মন পড়ে থাকে গ্রামের চাষি, খেটে খাওয়া মানুষের দিকে। ‘হুলিয়া’ কবিতায় আমরা প্রত্যেকে নিজেদেরই আবিষ্কার করতাম, যেন মাথায় হুলিয়া নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি আমরাও, সেই বিল্পবীর বেশ ধরে আমরাও মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে পৌঁছে গেছি গ্রামের বাড়িতে, এবং ‘মা আমাকে ক্রন্দনসিক্ত একটি চুম্বনের মধ্যে/ লুকিয়ে রেখে অনেক জঙ্গলের পথ অতিক্রম করে/পুকুরের জলে চাল ধুতে গেলেন…’।

আগুন ও জলকে গুণ একসঙ্গে মেলালেন। তবে তাঁর আগুন শুধু বিপ্লবের নয়, তাঁর জলও কান্নার নয়—বস্তুত গুণের কবিতায় কান্না নেই; আবুল হাসান, শামসুর রাহমান অথবা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা তাঁর এলিজিতেও কোনো কান্না নেই—তবে জল আছে। সেই জল নরম ভালোবাসার, অনুভবের, হারানো একটি গান মনের ভেতর ঘুরেফিরে বাজলে যে কোমলতা জাগে, সেই কোমলতার। সেই জল প্রেমের নিমগ্নতার, বিপন্ন মানুষের কষ্টের। প্রথম বইয়ের ‘অসমাপ্ত কবিতায়’ ‘সুনন্দার চোখে’ তিনি জল দেখেছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি আর নেহাত ব্যক্তিগত থাকে না, বরং মিশে যায় ‘বাংলার ভাগ্যাকাশে—দুর্যোগের ঘনঘটা’র সঙ্গে।

গুণ বেড়ে উঠেছেন বাংলাদেশের জেগে ওঠার সময়টাকে নিজের ভেতরে নিয়ে। এ জন্য তাঁর কবিতা চলে এ দেশের ইতিহাসের সমান্তরালে। বাংলাদেশে সত্তরের একটা অভিঘাত ছিল। একইভাবে পঞ্চাশের, বাহাত্তরের, এবং পুরো আশির দশকের—তার পরের সময়কালের আলাদা আলাদা অভিঘাত ছিল। এই সময় মানুষের চিন্তাচেতনা, আদর্শ-সংগ্রাম, জীবনযাপন—সবখানেই ঘটে গেছে অনেক পরিবর্তন। মাঝখানে পশ্চিমা দৃশ্যসংস্কৃতির ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছে আমাদের জীবনে। প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগের প্রভাবে বদলে গেছে মানুষের চিন্তাভাবনা। সত্তরে যে দ্রোহ, ঝাঁজ, ও প্রত্যয় ছিল তারুণ্যের, তা কি আশিতে এসে অটুট থেকেছে?

গুণের কবিতায় আছে এই পরিবর্তনের নিবিষ্ট উপস্থাপন। প্রেমাংশুর বিপ্লবী সরাসরি তাকায় পৃথিবীর দিকে, ‘আমাকে থাকতে হবে, আমাকে থাকতেই হবে/ লালশালু ঘেরা স্টেজে, বক্তৃতায়’—ও রকম একটি প্রত্যয় ঘোষণা করে, এবং বলে বটে ‘সার্ট খুলে বুকে করে নিয়েছি বৃষ্টিকে’ কিন্তু তার দৃষ্টিতে সে নিজে নয়, প্রধান পক্ষ হচ্ছে মানুষ। না প্রেমিক না বিপ্লবীতে তার দৃষ্টি যায় নিজের দিকে, নিজেকে ও জগতকে মেলায় সে। ‘সহবাস’ কবিতায় সে জিজ্ঞেস করে, ‘কী দেখো অমন ক’রে আমার ভিতরে?’ এই প্রশ্ন আসলে বিপ্লবী ও কবির আত্মদর্শনেরই জিজ্ঞাসা।

একাত্তরের যুদ্ধ শেষ হলে বাঙালির আত্মদর্শন শুরু হয়েছিল, অথবা শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সে কাজে ইস্তফা দিয়ে অচিরেই আমরা ডুবে গিয়েছিলাম আত্মাদরে। বিপ্লব তখনই বেপথু হয়েছে। গুণ তাতে ব্যথিত হয়েছেন, কিন্তু না-বিপ্লবীর আড়ালে বিপ্লবের আগুনই জ্বালিয়ে রেখেছেন (এবং অবাক, এখনো রেখেছেন, যদিও তা বুঝে নিতে হলে তাঁর কবিতার ভেতরে যেতে হয়)।

রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি ‘অকর্মণ্য’ হবে বলেছিল নারী, সে জন্য প্রেমাংশুর সাক্ষ্য অনুযায়ী, এর পরিবর্তে লেনিন, মাও সে তুংকে নিয়ে রঙিন-প্ল্যাকার্ড সাজিয়েছিলেন কবি, কিন্তু ‘রবীন্দ্রনাথের বাঁশিতে’ সব কুণ্ঠা ঝেড়ে লিখছেন, ‘তোমার জন্য বন্দুকের নল আজ আমারো হাতের বাঁশি।’

গুণের কবিতা পড়ার একটা আনন্দ: তিনি মাঝেমধ্যে পাঠকের পা ধরে টান দেন। কোন কথাটা যে কিসের আড়ালে একটা বক্রোক্তি হয়ে দাঁড়ায়, তা না বুঝলে বিপদ। এই সকৌতুক বুদ্ধির খেলাটা তাঁর কবিতার একটা বৈশিষ্ট্য: তাঁর শেষের দিকের কবিতায় এটি বেশ প্রকাশ্য।

সত্তরের বিপ্লবীরা আশি-নব্বইতে এসে ক্লান্ত হয়েছেন, অথবা বিপ্লবের জমিটা সেচের অভাবে নিষ্ফলা হয়েছে। এ বাস্তবতা কবি বোঝেন। তিনি জানেন, প্রেমাংশুর মেজাজটা এই সময়ে ধরে রাখা সম্ভব নয়, কিন্তু আগুনটা জ্বালিয়ে রাখা যে তাঁর কর্তব্য—বিশ্বাস করেন সেটি। মেজাজ বদলালেও তাঁর ওই বিশ্বাসে চিড় ধরে না। ১৯৭৯ সালে তার আগে চাই সমাজতন্ত্র ও ১৯৮১-এর চাষাভুষার কাব্যতে বিশ্বাসটা মেলে ধরেন তিনি কিছুটা যেন ন্যারেটিভের আদলে। নিজেও আছেন এই দুই বইজুড়ে।

পৃথিবীজোড়ো গান (১৯৮২)-এ তিনি লিখলেন খেতমজুর নিয়ে, নজরুলকে নিয়ে, এক পঙ্গুকে নিয়ে, তবে এ কাব্যগ্রন্থজুড়েও তিনি বর্তমান। কবিতায় তাঁর থাকাটা যেন জরুরি, এটি কবির রোমান্টিকতার প্রকাশ। কিন্তু নিজেকে জীবন থেকে বড় করে দেখেন না তিনি; বরং দেখেন বাস্তবের মাপেই, নিত্যদিন আর চিরদিনের সংগ্রামের আলোতেই (‘আমাকে দিয়েছে জন্ম রক্তঝরা অমর একুশ’, ‘আমার জন্ম’)। এটি তাঁর আধুনিকতার একটি প্রকাশ। গুণের আধুনিকতা, এখানে বলে নেওয়া ভালো, কোনো নির্দিষ্ট ছকের বা উত্তরাধিকারের নয়, এটি কবির নিজস্ব অর্জন, এবং নিজস্ব নির্মাণ, যদিও এর সঙ্গে সাজুয্য আছে তিরিশের দশক থেকে চলে আসা আধুনিকতার নানা বর্ণনার। রবীন্দ্রনাথ ও আধুনিকতা গ্রন্থে আবু সয়ীদ আইয়ুব আধুনিকতার একটি সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে, ‘আধুনিকতার ধারণা স্বভাবতই গতিশীল, ধাবমান’; এবং বলেছেন, কোনো কবি হয়তো স্বকালে মান্য হতে অথবা নাও হতে পারেন; ‘পরবর্তীকালের বার্তা মর্মে নিয়ে আগাম’ জন্মাতেও পারেন কোনো কোনো কবি। গুণের কবিতা ও চিন্তা গতিশীল, ধাবমান; স্বকালে তিনি মান্য হয়েছেন, তবে পরবর্তীকালের নয়, স্বকালের বার্তগুলোই মানুষকে তিনি জানান তাঁর মতো করে।

প্রযুক্তিকে পছন্দ ও ব্যবহার করেন গুণ। ‘মুঠোফোন’ কথাটি তিনিই আমাদের উপহার দিয়েছেন, মুঠোফোনের কাব্যও। এ কবির দূর হে দুঃশাসন হাতে তুলে নিলে নিশ্চিতভাবেই মনে হবে এটি ১৯৮৩-এর আশপাশের সময়কে ধারণ করেছে। আর দুঃখ করো না, বাঁচো ধরে আছে ১৯৮৭-কে। প্রতিটি কাব্যগ্রন্থ তার রচনাসময়ের নিখুঁত প্রতিবিম্ব; কিন্তু সময়ের বড় ব্যবধানে পড়লেও তাদের প্রাসঙ্গিকতা এতটুকুও প্রশ্নের মুখে পড়ে না।

তার একটি কারণ কি এই, মানুষের কলধ্বনি ও কোলাহলে, কল্পকথা ও কলহে গুণ একটা কান পেতে রাখেন। মানুষের কণ্ঠ বদলায়। তিনিও সেই বদলানোর ইতিহাস, এর কার্যকারণটা ধরতে পারেন, এই বদলের পেছনে যে কিছু আশা, বিশ্বাস ও প্রত্যয় ধ্রুব হয়ে থাকে, তাকে তিনি পড়তে পারেন; এবং নিজের বিশ্বাস ইত্যাদির সঙ্গে মেলান?

গুণের কবিতায় পুনরাবৃত্তি নেই—যতবার তিনি এই বিশ্বাস ও আশার কথা বলেন, নতুন একটি সুর বাজান সেগুলোর মধ্যে। এই সুরে একই সঙ্গে অনুরণিত হয় স্বকালের ও কালের যাত্রার ধ্বনি। তাঁর কবিতা তাড়াহুড়ো করে পড়ার বিষয় নয়, কারণ হঠাত্ হঠাত্ কিছু উচ্চারণ এক-একটা দ্যুতি ছড়ায় এপিফ্যানির মতো, ‘মৃত্যু আর রমণীরা যেন ঠিক সমান বয়সী’ অথবা ‘কেউ নয়, না রাজা না রাজ্য, শুধু রাজপথ চিনেছে আমাকে’ অথবা ‘মরাকাঠে আগুন, জেতাকাঠে ফাগুন’ অথবা ‘যখন আমি নগ্ন হই/ তখনই আমি কবি।’

মরাকাঠের আগুনের কথায় আগুনের প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক, তারপর জলের। যৌবনে গুণ শুনেছিলেন আগুনের ‘সর্বগ্রাসী ধ্বংসের আহ্বান’; কিন্তু একসময় বিপ্লবের আগুন থেকে তিনি গেছেন মানুষের ভেতরের আগুনের কাছে, যা তাঁকে পোড়ায়, তাঁকে খাঁটি করে। এটি এক দার্শনিক যাত্রা। তাঁর কবিতায় দর্শন আছে—যে দর্শন জীবনের মহিমাকে চিহ্নিত করে, যে দর্শনের কেন্দ্রে আছে মানুষ। গুণের ঈশ্বর দূরে থাকেন, কাছেও থাকেন হয়তো, কিন্তু তিনি মানুষের বিপন্নতার কোনো সমাধান দেন না, সেই সমাধান করতে হয় মানুষকেই; এবং তা করার জন্য মানুষকে ফিরতে হয় মানুষেরই কাছে।

মানুষের ভেতরের জলকে গুণ দেখেছেন—এ জল প্রেমের, চুম্বনের, অভিমানের, বিরহের, মঙ্গলের; এ জল চলেস রিসিল আর তমোহরের জন্য শোকের। এ জল যার ভেতরে আছে সে শুদ্ধ হয়।

২.

গুনণদার সঙ্গে একসময়, কুড়ি-পঁচিশ বছর আগে, প্রায় শুক্রবারে দেখা হতো ঢাকার নিউমার্কেটের ‘প্রগতি’ নামের একটি বইয়ের দোকানের পেছনের খুপরির আড্ডায়। একদিন তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন আড্ডার কেউ, ‘একজন কবির কতদিন বাঁচা উচিত?’ কিছুক্ষণ ভেবে গুণদা বলেছিলেন, ‘অ্যা পোয়েট ইজ নেভার ডেড।’ গুণদা তখন মাঝে মাঝেই ইংরেজি বলতেন, কৌতুক করতেন এই ইংরেজি নিয়ে। সেদিনও কৌতুকের ঢঙে কথাটি বলেছিলেন। তবে এত বছর পরে আজও কানে বাজে তাঁর ওই কথাগুলো। তাঁর বন্ধু আবুল হাসানের, শামসুর রাহমানের, হুমায়ুন আজাদের তো মৃত্যু হয়নি, তাঁরা শুধু দৃশ্যান্তরে গেছেন।

গুণদার সত্তর হচ্ছে, তবে আমি নিশ্চিত, সত্তরকে তিনি ধুত্তোর বলে কবিতা লিখেই যাবেন। আমরা চাইব, তিনি তাঁর বলা কথাটা মনে রাখবেন, এবং দীর্ঘ দীর্ঘজীবী হবেন।

শুভ জন্মদিন, গুণদা।

-দেশেবিদেশেডটকম,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/04/Election-Sagar-22-4-24.jpeg

ঈদগাঁওতে দুইদিন ব্যাপী নির্বাচনী প্রশিক্ষণ শুরু

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও : ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/