অনলাইন ডেস্ক :
শেরি রেহমান, হিনা রব্বানী খার, শাজিয়া মারী, ড. আয়েশা গাউস পাশা ও মরিয়ম আওরঙ্গজেব
অবশেষে মন্ত্রিসভা গঠন করলেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্ট হাউজে ৫ জন নারী মন্ত্রীও শপথ নেন। তাদের মধ্যে তিন জন ফেডারেল মন্ত্রী এবং দুইজন প্রতিমন্ত্রী। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) মোট ৩৭ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন।
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণ করার আট দিন পর মন্ত্রিসভা গঠন করলেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এত সময় নেওয়ার কারণ, তিনি চেয়েছিলেন মিত্রদের নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করতে। বিশেষ করে যারা পিটিআই জোট সরকার থেকে বের হয়ে বিরোধী দলে যোগ দিয়েছে।
মন্ত্রিসভায় এবার কিছু নতুন মুখ ও দলের প্রতিনিধি জায়গা পেয়েছে। তবে হতাশ করেছে নারী প্রতিনিধির সংখ্যা। মাত্র ৫ জন নারীকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন শাহবাজ শরিফ। তারা হলেন- তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব, জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শেরি রেহমান, তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রাদেশিকমন্ত্রী শাজিয়া মারী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানী খার ও প্রতিমন্ত্রী ড. আয়েশা গাউস পাশা।
মরিয়ম আওরঙ্গজেব : তিনি লন্ডনে চলে যান এবং সেখানে তিনি কিংস কলেজ লন্ডন থেকে পরিবেশ ও উন্নয়ন নীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৩ সালে তিনি পিএমএল-এন দলে যোগ দেন। নারী সংরক্ষিত আসনের এমপি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মন্ত্রিসভায় তিনি সম্প্রচার, তথ্য ও জাতীয় ঐতিহ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে তিনি ডাব্লিউডাব্লিউএফ পাকিস্তানে কর্পোরেট সম্পর্কের প্রধান হিসাবে কাজ করেছিলেন।
শেরি রেহমান : পাকিস্তানের প্রথম নারী সিনেটের বিরোধীদলীয় নেতা ও পিপিপির (পাকিস্তান পিপলস পার্টি) ভাইস প্রেসিডেন্ট শেরি রেহমান। তার মা স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনিও যুক্তরাজ্য থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে দ্য হেরাল্ডের প্রধান সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। সাংবাদিক হিসেবে ২০ বছর কাজ করার পর ২০০২ সালে পিপিপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন শেরি রেহমান। ২০০৮ সালে তিনি তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এরপর সিনেটে প্রথম নারী বিরোধীদলীয় নেতাও নির্বাচিত হন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক ও আইনী গবেষণা সংস্থা জিন্নাহ ইনস্টিটিউটের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শাজিয়া মারী : ২০১৩ সালে পিপিপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি নির্বাচিত এবং তিনি পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ২০১৮-এ পিপিপির প্রার্থী হিসাবে জাতীয় সংসদে পুনরায় নির্বাচিত হন। শাজিয়া মারী। তার দাদা আলী মোহাম্মদ মারী ছিলেন ভারত ভাগের আগে সিন্ধু পরিষদের এমপিএ। বাবা আতা মোহাম্মদ মারী একজন এমএনএ এবং সিন্ধু বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। মা পারভীন আতা মারীও এমপিএ ছিলেন।
হিনা রব্বানী খার : ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল মেয়াদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন হিনা রব্বানি খার। তিনি পাকিস্তানের ২১তম এবং প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তার আগে ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ৪৪ বছর বয়সী এ রাজনীতিক। রাজনীতিতে প্রবেশের পূর্বে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন।
ড. আয়েশা গাউস পাশা : পাঞ্জাবের সাবেক অর্থমন্ত্রী এবং পিএমএল-এন এমপি আয়েশা ঝাউস পাশা। তার স্বামী অর্থনীতিবিদ হাফিজ পাশা। অতীতে হাফিজ পাশা পিপিপি এবং পিএমএল-এন সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
প্রসঙ্গত: বিরোধী জোটের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে ৯ এপ্রিল ক্ষমতাচ্যুত হয় ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকার। এরপর ১১ এপ্রিল পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বিরোধীদলীয় নেতা ও পিএমএল-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ। আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
You must be logged in to post a comment.