-: মোঃ আরিফ ঊল্লাহ :-
রোহিঙ্গা শরণার্থীর আগমনের পর থেকেই দেশি বিদেশী শতশত এনজিও সংস্থা মানবিক সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে পাড়ি জমায় কক্সবাজারে। এই পর্যন্ত প্রায় আট (৮) লক্ষাধিক রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় আশ্রয় নিয়েছে ও ক্রমাগত এ সংখ্যা বেড়েই চলেছে, শুধুমাত্র বিগত কয়েক দিনে ভারত থেকে বিতাডিত হয়ে আরো প্রায় ১৩০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এই রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০০০ একর জমি দেয়া হয় যেখানে প্রকৃত পক্ষে প্রায় ৪০০০ একর জমি দখল করা হয়েছে। যারফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও অনেক পরিবার হারিয়েছে তাদের ফসলী জমি এবং সেই সাথে কষ্টকর হয়ে পড়েছে স্থানীয়দের চলাচল, বাড়ছে স্কুল– কলেজ থেকে ঝড়ে পড়া কিশোর কিশোরীদের সংখ্যা। এখানেই শেষ নয়, দিন দিন বেড়ে চলেছে চুরি ডাকাতিসহ বিভিন্ন প্রকারের সামাজিক ব্যাধি। তা সত্ত্বেও স্থানীয়দের প্রতি এনজিও সংস্থাগুলির এমন বিরূপ আচরণ খুবই দুঃখজনক।
বছরের শেষ দিকে লক্ষ্য করা যায় এনজিও সংস্থাগুলি প্রকল্প সংকটের অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয়দের চাকরীচ্যুত করছে। যেখানে স্থানীয়রাই সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই আবস্থা নিরসনে স্থানীয় চাকরীচ্যুত বাসিন্দারা আন্দোলনে নামে এবং মাননীয় জেলা প্রশাসকের পক্ষথেকেও ইতিবাচক সাড়া লক্ষ্য করা গেছে। সুতরাং এইপ্রেক্ষিতে আমরাও ইতিবাচক ফলাফল আশা করতে পারি যে স্থানীয় চাকরীচ্যুতরা আবার তাদের কর্মস্থলে যোগ দিতে পারবে। কিন্তু স্থানীয়দের চাকরীতে ফিরিয়ে নেয়া ও নতুন চাকরীর ক্ষেত্রে স্থানীদের আগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করা হলে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় সামাজিক ব্যাধি হ্রাস ও কিশোর কিশোরীরা পুনরায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুখী হবে। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে যেমন, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুসারে চাকরিতে অগ্রাধিকার দেয়া, ১৮ বছরের নিচে স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থীদের চাকরীর ক্ষেত্রে অনুৎসাহিত করা। বেকার যোবকদের ক্ষেত্রে সিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা। তাহলে হয়তো এই উপজেলার শিক্ষিত বেকারদের ওপর বেকারত্ব নামক যে অভিশাপ তা মুছে যাবে এবং কোনো পাবলিক পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত এমন কোনো সংবাদ কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত হবেনা এবং শ্রেণী কক্ষগুলী পূর্বের ন্যায় কাণায় কাণায় পূর্ণ থাকবে।
বর্তমান সরকার প্রধান আমাদের মাননীয় প্রধান ন্ত্রী ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিচক্ষণতার প্রমান দিয়েছেন, তাই আমরা বলতে পারি রোহিঙ্গা সংকট স্থায়ী নয়, যেকোনো সময় এ সমস্যার সমাধান বেরিয়ে আসতে পারে। তাই আমাদের এটাও মাথায় রাখা দরকার যে, আজ যেই শিক্ষার্থী মোটা অংকের বেতনের জন্য তার লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের পর সে তার স্বল্প যোগ্যতা দিয়ে চাকরীর বাজারে কতখানি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে, তাও ভেবে দেখা উচিৎ।তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে উক্ত বিষয় বিবেচনা করে আরো কৌশলী পন্থা অবলম্বনের অনুরোধ করছি যাতে করে উক্ত উপজেলার তরুণ প্রজন্ম কক্ষনো থমকে না যায় ও পিছিয়ে না পড়ে।
শিক্ষানবিশ আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা জজ আদালত।
Email: arifcbiu@gmail.com
You must be logged in to post a comment.