সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / নারী ও শিশু / অসহায় পিতার সন্তানদের বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন- পেকুয়ায় থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত দুই শিশু মৃত্যু পথযাত্রী

অসহায় পিতার সন্তানদের বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন- পেকুয়ায় থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত দুই শিশু মৃত্যু পথযাত্রী

Mukul 16.07.16 news 1pic f1

মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :

কক্সবাজারের পেকুয়ার ইয়াছিন আরাফাত তামিম (৩) ও আসিফা নুর (৯)। আর দশটা শিশুর মত হৈই-হুল্লোড়, খেলা-ধুলা, শিশু-সুলভ দুষ্টুমি, বায়না সবই আছে তাদের মধ্যে। তবে,সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটি নেই তাদের মাঝে, বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা! নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে তাঁরা। হতদরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠা এই দুই শিশুর শরীরে বাসা বেধেছে থ্যালাসেমিয়া নামক কঠিন রোগ। রোগ যন্ত্রণায় অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করছে দু’টি কোমলমতি ছোট্ট শিশু। একই রোগে আক্রান্ত হয়ে সু-চিকিত্সার অভাবে তাদের বড় বোন সানজিদা সুলতানাও মারা গেছেন বছর খানেক আগে। এক মেয়েকে হারানোর পর আরো দুই সন্তানকে হারানোর ভয়ে কথা বলতেই হাউ-মাউ করে কেঁদে উঠলেন অসহায় পিতা গিয়াস উদ্দিন।

তিনি জানান, জন্মের পর থেকে শরীরে নিয়মিত রক্ত দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে আসিফা ও তামিমকে। আসিফা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রী। পড়ালেখায় খুব মনযোগী সে। তবে, তার পড়া লেখা এখন অনিয়মিত। রক্ত শূন্যতা দেখা দিলে বিদ্যালয়ে যাওয়া থেমে যায়। দরিদ্র পরিবারের তিন সন্তানের এমন কঠিন পরিণতিতে অসহায় হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার। নিরব অশ্রু জড়ানো ছাড়া আর কি করার আছে বলে আবারো অশ্রু ঝড়ালেন অসহায় পিতা।

তিনি আরো জানান, প্রতি মাসে একবার দু’শিশুকে রক্তের যোগান দিতে হয়। মাসের শুরুর দিকে রক্ত সঞ্চালনের জন্য তাদের নিয়ে যেতে হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একসময় রক্ত কেনা লাগতো। তবে, এখন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ তাদেরকে বিনা পয়সায় রক্তদান করছে। তবে, যাতায়াত ও রক্ত সঞ্চালনে প্রয়োজন হয় অনেক টাকা।

চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, যত বয়স বাড়ছে শিশুদের শরীরে রক্তের চাহিদাও বাড়তে থাকবে। বর্তমানে দু’জনকে প্রতিমাসে এক পাউন্ড করে রক্ত দিতে হচ্ছে। তাদের রক্তের গ্রুপ এ (পজেটিভ)। থ্যালাসেমিয়া জটিল রক্তশূন্যতা রোগ। শিশু দু’টিকে বাঁচাতে হলে আজীবন এভাবে রক্ত দিতে হবে। তবে অপারেশনের মাধ্যমে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এই অপারেশন ব্যয়বহুল। দেশে এই ধরনের রোগের সার্জারির ব্যবস্থা নেই। উন্নত দেশে এর অপারেশনের জন্য উত্তম স্থান।

সরেজমিনে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের মুহুরীপাড়া এলাকায় আসিফা ও তামিমদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানদের নিজের শরীর থেকে বেশ ক’বার রক্ত দিয়ে এখন রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছেন হতভাগ্য পিতা গিয়াস উদ্দিন। তিনি একজন দরিদ্র কৃষক। বর্গা নেওয়া জমিতে লবন চাষ ও কৃষি কাজ করে কোন রকমে সংসার চালান। এক সময় কঠোর পরিশ্রম করে নিজের মত সংসার সাজিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু সে সংসারে আজ ছন্দপতন। গিয়াস উদ্দিনই সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংসারে ঠিকমত জ্বলেনা চুলা। নিকট আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সাহায্য -সহযোগীতায় সংসার চলছে এখন।

জীবন জীবনের জন্য। শিশু দু’টিকে বাঁচাতে হলে সম্মলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। অর্থের জন্য প্রয়োজন তহবিল গঠন। তাঁদের বাচাতে এগিয়ে আসতে হবে বিত্তবান, বিবেক, সমাজ, সরকারকে। আমরা অবশ্যই পারি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে। শিশু দু’টি নিষ্পাপ। চিকিত্সার অধিকার তাঁদের আছে। তাই, সমাজের বিত্তবান, দয়ালু ব্যক্তি, সংস্থার কাছে আর্থিক সাহায্য-সহযোগীতা চেয়েছে আসিফা-তামিমের হত-দরিদ্র পিতা গিয়াস উদ্দীন।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

জালালাবাদে ফখরুদ্দিন ফরাজীর অটোরিক্সা নির্বাচনী জরিপে এগিয়ে

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : প্রচার প্রচারণার শেষ মুহূর্তে জালালাবাদ ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী (অটোরিক্সা ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/