মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
বান্দরবানের আলীকদমে অসহায় কৃষক আব্দুল হাকিম (৫০)কে ভূমি বিরোধের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মারধর করেছে প্রতিপক্ষ লোকজন। মারধরের একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ লোকজন গুরুতর আহত আব্দুল হাকিমকে মৃত ভেবে ফেলে গেলে তার স্ত্রী আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে আলীকদম হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতের অবস্থা
আশংকাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতারে রেফার করা হয়।
সোমবার (০২ মার্চ) দিবাগত রাত ১০টা ১৫মিনিটে আলীকদম উপজেলার ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের মগপাড়া রাস্তার মাথায় শফি মেম্বারের মার্কেটের সারোয়ারের চায়ের দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে। আহত আব্দুল হাকিম চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সিরাজ কারবারী পাড়ার মৃত মো. হোসেন এর ছেলে।
আলীকদম থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ কাজী রকিব উদ্দীন বলেন, খবর পেতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। রাতে আহতের স্ত্রী ইসমত আরার বেগম (২৮) বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। আলীকদম থানা মামলা নং ০১, তারিখ- ৩ মার্চ ২০২০ইং। রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মামলার ২য় আসামী মো. শফি আলমকে গ্রেফতার করে। বাকী আসামীদের খুজছে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিরোধীয় জায়গায় প্রায় ৪০ বছর যাবৎ বসতবাড়ি নির্মাণসহ চাষাবাদ করে ভোগদখলে আছে কৃষক আব্দুল হাকিমের পরিবার। সিরাজ কারবারী পাড়ার আব্দুল হাকিমের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জায়গা ২৮৯নং চৈক্ষ্যং মৌজার খতিয়ান ৭৪ এর দাগ নং- ১১৪৫ এর আন্দর ২ একর জমি নিয়ে পার্শ্ববর্তী মো. শাহ আলম গংদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এই নিয়ে থানা আদালতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। আইনে আদালতে না পেরে সোমবার দিবাগত রাতে পরিকল্পিতভাবে সংঘবদ্ধ গ্রুপ নিয়ে আব্দুল হাকিমকে মেরে ফেলার জন্য হামলা করে ছিদ্দিক কারবারী পাড়ার মৃত তাহের মিয়ার ছেলে মো. শাহ আলম গং।
আব্দুল হাকিমের স্ত্রী ইছমত আরা বলেন, মো. শাহ আলমের নেতৃত্বে মো. শফি আলম, সামছুন্নাহার, মানিক মিয়া সর্ব পিতা- মৃত তাহের মিয়া, ছায়েরা খাতুন স্বামী- মো. সেলিম, দিলদার বেগম স্বামী- সোনা মিয়া, মো. রানা প্রকাশ ননাইয়া পিতা- মো. সেলিম, মো. সেলিম পিতা- অজ্ঞাত, মো. সোনা মিয়া পিতা- অজ্ঞাত ও শাহজাহান বেগম স্বামী- মৃত তাহের মিয়া সংঘবদ্ধ হয়ে আমার স্বামীর উপর হামলা চালায়। আমার স্বামীতে মারার পরে আজ মঙ্গলবার দিনে কয়েকদফা তারা আমাদের বাড়িতে হামলা করে। বিষয়টি আমরা আলীকদম থানাকে জানিয়েছি।
পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, সোমবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে বিবাদী শাহ আলমের দোকানে তারাবনিয়া এলাকার গোলাম সোবাহান ও নুর হোসেন সহ মামলার সব আসামীরা একসাথে মিলিত হয়ে আব্দুল হাকিমকে হামলার পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা আমি দেখে ফেলি। তারাবনিয়া এলাকার গোলাম সোবাহান ও নুর হোসেন ঘটনার মূল ইন্দনদাতা। স্থানীয় মো. ইউনুচ, সাহাব উদ্দিন, গোলাম কাদের ও জাহেদ এই মারধরের ঘটনার প্রত্যেক্ষদর্শী ছিল।
এই বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আসামী মো. শাহ আলমের সাথে। তিনি বলেন, আব্দুল হাকিমের সাথে আমাদের কথা বার্তার কাটাকাটি হয়। মামলার করে আমাদের ফাঁসাতে তারা এই কাল্পনিক ঘটনার সৃষ্টি করেছে।
You must be logged in to post a comment.