হামিদুল হক; ঈদগড় :
জীবন রক্ষায় ঔষধের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ সুযোগকে শতভাগ কাজে লাগাচ্ছে এক শ্রেণীর ঔষধ সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট। কক্সবাজার ঈদগড়ের অধিকাংশ ফার্মেসীতে এখন ভূঁয়া কোম্পানীর ভেজাল ঔষধে সয়লাব। ঔষধগুলো কোথায় তৈরি হয়, কোথা থেকে সরবরাহ হয় তা কারো জানা নেই। সরবরাহকৃত ঔষধগুলির প্যাকেটে লেখা নেই সঠিক ঠিকানা ও তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান সমূহের নাম। নামী দামী কোম্পানীর প্যাকেটের সাথে হুবহু মিল রেখে বাজারজাত করা হচ্ছে এসব প্রাণঘাতী ভেজাল ঔষধ। কতিপয় অসাধু ফার্মেসীর মালিক ও ভূয়া কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা অজ্ঞাত স্থান থেকে ঔষধগুলো প্যাকেটজাত করে জীবন রক্ষাকারী এন্টিবায়োটিক, ভিটামিন এবং যৌন ঔষধ দোকানে দোকানে ফর্মে থাকা ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও সিরাপ জাতীয় ঔষধগুলো সরবরাহ করে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঈদগড়ে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধির মাধ্যমে স্বঘোষিত হাতুড়ে ও অসাধু ডাক্তারদের সিন্ডিকেট চক্র নিম্নমানের ভেজাল ঔষধ সেবন করতে বাধ্য করছে রোগীদের। ঐ হাতুড়ে ও অসাধু ডাক্তারদের ব্যবস্থাপত্রেও থাকে এসব ঔষদের নাম। কারণ নামী দামী ব্র্যান্ডের কোম্পানীগুলোর মত দেখতে একই হলেও ঔষধগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সচেতন মহল। এ ভেজাল ঔষধের তালিকায় রয়েছে প্রাণঘাতী এন্টিবায়োটিক, ভিটামিন ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিরাপ। এসব ঔষধ নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজী নন ফার্মেসীর মালিক এবং ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা।
অপরদিকে ঔষধ প্রশাসনের নিরবতার সুযোগে বিভিন্ন স্থানের মত ঈদগড়েও অনেক ঔষধ ব্যবসায়ী জিরো থেকে হিরো বনে গেছেন বলে জানা যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফার্মেসীর এক মালিক জানান, প্রতারক কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি ও ঔষধ ব্যবসায়ীরা কিছু চিকিত্সককে মাসিক চুক্তিতে উতকোচ দিয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে এসব ভুঁয়া কোম্পানীর নাম সর্বস্ব ভেজাল ঔষধগুলি লিখিয়ে নেন। এছাড়াও নিম্নমানের ঔষধ কিনতে রোগীদের বিভিন্ন রকম মগজ ধোলাই করে ফার্মেসীগুলোর নিয়োজিত চাটুকার ঔষধ বিক্রেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক ফার্মেসীর মালিক জানান ভুঁয়া কোম্পানীর ঔষধগুলো গোপনে সরবরাহ হলেও অনেক সময় রোগীদের ব্যবস্থা পত্রে ঐসব ঔষদের নাম লেখা থাকে। এজন্যই তারা ভেজাল না আসল কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। তবে ঐ ঔষধ বিক্রিতে লাভ বেশি হওয়ায় এবং ব্যবস্থাপত্র ফেরত যাওয়ার আশঙ্কায় তারা ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঔষধগুলি দোকানে রাখে। তিনি আরো জানান, ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই হাতে বিক্রি হয় যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও বিভিন্ন আইটেমের সিরাপ।
ঔষধ বিশেষজ্ঞ কমিটির মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুসরণ না করে ঔষধ উত্পাদিত হলে সে ঔষধ মান সম্পন্ন হয় না। এ ঔষধ ব্যবহারকারীর অসুখ না সেরে বরং শরীরে মারাত্মক ক্ষতিসহ প্রাণহানীরও সম্ভাবনা থাকে। সচেতন মহলের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের ঔষধ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় প্রতারক সিন্ডিকেট চক্র এ সুবিধা নিচ্ছে।
You must be logged in to post a comment.