উখিয়ার পূর্বরত্নায় সরকারী কর্মচারী কর্তৃক বসতবাড়ী ভাংচুর ও হামলা চালিয়ে এক পরিবারের ৩ সদস্যকে আহত করেছে। ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে স্থানীয় মৃত বুচারাম বড়ুয়ার পুত্র শিশু বড়ুয়ার বসত বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এতে শিশু বড়ুয়ার স্ত্রী মুন্নী বড়ুয়া (২৫) ও তার দুই পুত্র রাহুল বড়ুয়া (৭) এবং সূর্য্য বড়ুয়া (২) আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, উখিয়ার পূর্বরত্না গ্রামের মৃত বোচারাম বড়ুয়ার পুত্র শিশু বড়ুয়া রত্নাপালং মৌজার বিএস ১৯১০নং খতিয়ানের বিএস ৩৮১৭ দাগের ১২ শতক জমি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে বসতভিটি করতঃ ভোগ দখল করে আসছিল। বর্তমানে জমি-জমার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় মৃত শীতল মিস্ত্রীর দূর্লোভী পুত্র মনখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মচারী অনিল বড়ুয়া কয়েক মাস ধরে শিশু বড়ুয়ার বসতবাড়ি জবর দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মহান বিজয় দিবস’১৫ উপলক্ষ্যে বিশেষ সাময়িকী ‘কৃষকের বাংলা’ প্রকাশনার সহযোগী সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে শিশু বড়ুয়া ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট কাজে চট্টগ্রাম যায়। তার অনুপস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শুক্রবার সকাল ৮টায় অনিল বড়ুয়া (৪৫) ও তার ভাই দুলাল বড়ুয়া (৪৮), হরেন্দ্র বড়ুয়া (৫০), চাচাত ভাই মেশু বড়ুয়া (৩৫) সহ ভাড়াটিয়া একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে একযোগে শিশু বড়ুয়ার বসতবাড়ি জবর দখল করতে গেলে শিশু বড়ুয়ার স্ত্রী মুন্নি বড়ুয়া বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা মুন্নি বড়ুয়াকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে দৌড়ে নিয়ে গেলে নিজেকে আত্ম রক্ষার্থে দুই শিশু সন্তানদের নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে নিরাপদে আশ্রয় নেয় মুন্নি বড়ুয়া। এ সময় সন্ত্রাসীরা শিশু বড়ুয়ার বসতবাড়ীর ঘেরা টেংরা ভাংচুর করে। এতেও শান্ত না হয়ে সন্ত্রাসীরা বাড়ির দরজা লাথি মেরে লক তালা ভেঙ্গে শিশু বড়ুয়ার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে টানা হেঁচড়া করতঃ আহত করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা শিশু বড়ুয়ার পরিবারকে বসতভিটি ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়।
তাছাড়া এ ব্যাপারে কাউকে অভিযোগ করলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় জনৈক এক ব্যক্তি জানান, উক্ত অনিল বড়ুয়া গং বিগত ১৫/২০ বছর পূর্বে জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে স্থানীয় একটি পরিবারের উপর নির্মম ভাবে হামলা চালিয়েছিল। এতে একজন ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় অনিল বড়ুয়া গং’রা দিনের পর দিন বেপরোয়া হতে থাকে। তারা প্রভাবশালী ও খুনী প্রকৃতির হওয়ায় তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।
তিনি আরো জানান, দিন দুপুরে যদি এভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলতে থাকে দেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে। শিশু বড়ুয়া জানান, হামলাকারীরা সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও খুনি প্রকৃতির লোক। তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, এখনো লিখিত ভাবে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিল বড়ুয়ার মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইলে সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে শিশু বড়ুয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
You must be logged in to post a comment.