সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / আন্তর্জাতিক / কাতার সংকট: আল জাজিরার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে!

কাতার সংকট: আল জাজিরার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে!

কাতারের আল জাজিরা টিভি নেটওয়ার্ক নি:সন্দেহে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষুদ্র এই দেশটিকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে জায়গা করে দিয়েছে। তেল এবং গ্যাস সম্পদে ভরপুর দেশটির অর্থনৈতিক শক্তিকে বৈশ্বিক প্রভাবে রূপান্তর করার একটি বড় নিদর্শন হচ্ছে এই গণমাধ্যম। খবর বিবিসির।

দুই দশকব্যাপী প্রচেষ্টার ফলাফলের মধ্যে রয়েছে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন। তবে কাতারের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সংকটের ফলে এই হাই প্রোফাইল নেটওয়ার্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দানা বাঁধছে।

আল জাজিরার সংবাদ বিভিন্ন আরব দেশে বিতর্ক এবং ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম মিশর। হোসনি মোবারকের পতন, আরব বসন্ত এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ মোরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়ে সংস্থাটির সংবাদ মিশরের বর্তমান কর্তৃপক্ষ ভালোভাবে নেয়নি।

অবশ্য বর্তমান সঙ্কটের উত্তাপ আগেই অনুভব করেছিল আল জাজিরা। মে মাসের শেষ নাগাদ তাদের ওয়েবসাইট ব্লক করে দেয় সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিশর এবং বাহরাইন।

এই সবগুলো দেশই গত ৫ই জুন জঙ্গিবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগে কাতারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। সৌদি আরব আল জাজিরার কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে এবং তাদের লাইসেন্স বাতিল করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন করার অভিযোগ এনেছে। আল জাজিরা দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের স্বাধীন এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম হিসেবে দাবী করে আসছে।

কাতার এখন নিজেদের বিচ্ছিন্ন এবং অরক্ষিত হিসেবে দেখছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠিদের সমর্থনের অভিযোগ তারা অস্বীকার করছে, কিন্তু উত্তেজনাকর পরিস্থিতির অবসানে তাদের ওপর ছাড় দেয়ার চাপ বাড়বে। সঙ্কটের ফলে তাদের ব্যস্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দৃশ্যত: জনশূন্য হয়ে পড়েছে এবং দেশটির বাসিন্দারা খাদ্যপণ্যের মজুদ করছেন।

দোহা থেকে বিবিসি আরবি বিভাগের ফেরাস কিলানি বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে গণমাধ্যমের সংস্কার করার জন্য কাতারের ওপর শর্ত দেয়া হবে। আল জাজিরা হয়তো বন্ধ হবে না, তবে তার সম্পাদকীয় নীতিমালায় পরিবর্তন আসবে। লন্ডনভিত্তিক কাতারি আল আল-আরাবি টিভি নেটওয়ার্ক হয়তো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

“অনেক বছর ধরে আল জাজিরা উপসাগরীয় দেশগুলো এবং মিশরের জন্য গলার কাঁটা হয়ে আছে”- আমিরাতি ভাষ্যকার সৌদ আল কাশেমি তার কলামে লেখেন।

তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০০২ সালে আল জাজিরায় সৌদিদের ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি পরিকল্পনার কভারেজ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে কাতার থেকে রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেয় সৌদি আরব। ২০০৮ সালে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত পাঠানো হয়।

২০১৪ সালে আবারো কূটনৈতিক বিবাদে সৌদি আরব, আরব আমিরাত এবং বাহরাইন তাদের রাষ্ট্রদূতদের ফিরিয়ে নেয়। সেসময় কাতার উপসাগরীয় প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে “হস্তক্ষেপ” না করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এবার কাতারের প্রতিবেশীরা “যেকোন ধরণের মধ্যস্থতার আগে আল জাজিরা টিভি নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার দাবী তুলবে” বলেন সৌদ আল কাশেমি।

এমনটাই যদি হয় তাহলে গণমাধ্যম জগতে কাতারের অবস্থান এবং আল জাজিরার বিশ্বজুড়ে তিন হাজারেরও বেশি কর্মীর ভাগ্যে বেশ খারাপ পরিণতি অপেক্ষা করছে।

মন্তব্যের জন্য আল জাজিরার সাথে যোগাযোগ করেছে বিবিসি। লন্ডনের কিংস কলেজের কাতার বিশেষজ্ঞ, ডেভিড রবার্টসও একমত যে উপসাগরীয় দেশ এবং মিশর আল জাজিরাকে কাতারের “খরচের খাতায়” চাইবে।

“তবে এটি একটি দেন-দরবারের বিষয় এবং এমুহূর্তে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই যে কাতার নতি স্বীকার করবে” ডেভিড রবার্টস বলেন।

তিনি বলেন, যদিও আল জাজিরা আরাবিক এখন তুলনামূলক নরম সুরে কথা বলছে “তবে তারা এখনো বিশেষ করে মিশরকে খোঁচা দিয়ে যাচ্ছে”।

“তবে চ্যানেলটি প্রায় এক দশক আগেই সৌদি আরবের সমালোচনা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে- প্রথমবার তাদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেয়ার পর থেকে”।

সূত্র:deshebideshe.com,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

চট্টগ্রামের পরিবেশ রক্ষায় শক্তিশালী কমিশন গঠন করার প্রস্তাব -এমএএফ’র সেমিনারে

  প্রেস বিজ্ঞপ্তি : প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আন্দোলন সংগ্রাম ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির চারণভূমি চট্টগ্রাম। নানা কারণে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/