সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / শিক্ষা-দিক্ষা / চকরিয়ায় মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ্ পৌর দাখিল মাদরাসা

চকরিয়ায় মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ্ পৌর দাখিল মাদরাসা

প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও এমপিও না হওয়ায় মানবেতর দিন কাটছে শিক্ষক-কর্মচারীদের

 

মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ্ পৌর দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছর অতিবাহিত হলেও সরকারী নিবন্ধন পায়নি। গ্রামীণ জনপদের পাঁচ শতাধিক ছেলে-মেয়ে এই মাদারাসায় পড়াশোনা করলেও পর্যপ্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মাদারাসাটি এমপিওভুক্ত করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গরীব ও অসহায় পরিবারের সন্তানদের পড়ালেখার সুবিধার্তে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারী মাদারাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদারাসার প্রতিষ্ঠা বয়স ৩৫ বছর অতিবাহিত হয়েছে। প্রথমে ইবতেদায়ী পর্যন্ত চালু হলেও পরে দাখিল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা পায় মাদারাসাটি। গত ১৫ বছর ধরে অন্য মাদারাসার সহায়তায় দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে আসছে মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ্ পৌর দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার মান ও ফলাফল সন্তোষজনক।

শিক্ষা অধিদপ্তরের সকল শর্ত পূরণ করার পরও এমপিও না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা হতাশায় ভুগছে। বিনা বেতনে চাকরি করে ধৈর্য্য হারিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের অনেকেই এই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে গেছেন। কয়েক জন শিক্ষকের চাকরি শেষের পথে। তবুও তারা আশায় বুক বেঁধে আছে হয়তো একদিন এমপিও ভুক্ত হবে মাদারাসাটি।

মাদরাসা সুত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে ১জানুয়ারি বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক নবম শ্রেণির পাঠদানের অনুমতি পায়। ওই অনুমতি নেয়ার পর পরবর্তীতে দেয়া সরকারি সকল শর্তাবলী পূরণের ক্ষেত্রে সন্তোষজনক হওয়ায় ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি দাখিল একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। সেই দাখিল একাডেমিক স্বীকৃতির মেয়াদকাল ৩১ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত সরকার পুনরায় নবায়ন করেন।

মাদরাসা সুপার মাওলানা মো.নূরুল আবছার ছিদ্দিকী জানান, ২০০২ সাল হতে মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও পরিবর্তনসহ সরকারি অনুমতি ও স্বীকৃতির পেছনে শ্রম দিয়ে আসছেন সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা মো.নূরুল আবছার ছিদ্দিকী। তিনি ২০০২ সাল থেকে অধ্যাবদি মাদরাসা সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই মাদারাসায় প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষক এবং ২জন কর্মচারী রয়েছেন।

মাদারাসার সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা নুরুল আবছার ছিদ্দিকী আরো বলেন, এখান থেকে পাস করে অনেক শিক্ষার্থী চাকরি করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। তারা ভাল বেতন ও নানা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। অথচ আমরা বেতন পাচ্ছিনা। সরকার অন্যখাতে অর্থ বরাদ্দ দিলেও এমপিও’র জন্য তেমন অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। সর্বশেষ দাখিল পরীক্ষায় এই মাদরাসা থেকে ৪০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। তন্মধ্যে ৩৮জন শিক্ষার্থী ভাল ফলাফল করেন।

মো.রহুল আমিন নামের ৭ম শ্রেণী পড়ুয়া মাদারাসা ছাত্রীর বাবা বলেন, আমার মেয়েকে ইবতেদায়ী থেকে এখানে ভর্তি করিয়েছি। এখানের শিক্ষকরা খুব যত্ন সহকারে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করাচ্ছেন। পড়ালেখার মান নিয়ে আমরা খুব সন্তুষ্ট। কিন্তু মাদারাসাটি প্রতিষ্টার ৩৫ বছর পরও শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত না হওয়া খুব দু:খজনক।

মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউলিন্সর মো.মুজিবুল হক মুজিব বলেন, মাদরাসার কাংখিত উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। মাদারাসাটি এমপিও ভুক্তির জন্য মন্ত্রণালয়ে অপেক্ষমান রয়েছে। এব্যাপারে সব কিছু করা হয়েছে। দীর্ঘদিনেও এমপিও না হওয়ায় শিক্ষাক-কর্মচারীরা একট হতশায় রয়েছেন।

চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার রতন বিশ্বাস বলেন, স্কুল-মাদারাসা নিবন্ধনটি আমাদের হাতে নেই। তাছাড়া বর্তমানে সারা বাংলাদেশে স্কুল-মাদারাসা নিবন্ধন বন্ধ রেখেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যখন নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে তখন যদি মন্ত্রণালয় আমাদের সহযোগীতা চাই তবে সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চকরিয়া মজিদিয়া দারুচ্ছুনাহ দাখিল মাদারাসাটি জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, আমি কিছু দিন আগে যোগদান করেছি। তাই এ ব্যাপারে আমি অবগত নই। আমার দপ্তরের পক্ষ থেকে মাদারাসাটির এমপিও ভুক্তির জন্য সব ধরনের সহযোগীতা দেয়া হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁও উপজেলা নিবার্চন থেকে ২ চেয়ারম্যান ও ১ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন

নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : নানান কল্পনা ঝল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/