সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি বেশি রপ্তানি কম : কমে যাচ্ছে দেশীয় পণ্যের চাহিদা

টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি বেশি রপ্তানি কম : কমে যাচ্ছে দেশীয় পণ্যের চাহিদা

Teknaf Bondar

গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে আসছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যে হারে কোটি কোটি রাজস্ব দিয়ে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রকার পণ্য আমদানি করে দেশের বাজার গুলোতে চাহিদা বৃদ্ধি করছে। অথচ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকার নিত্য প্রযোজনীয় পণ্য গুলো মিয়ানমারের  পণ্যের চেয়ে গুলগত মানে অনেক উন্নত।

টেকনাফ স্থলবন্দর পর্যবেক্ষণ করে আরো জানা যায়, প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকার পণ্য এসে বন্দর ভরে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের পণ্য চার ভাগের এক ভাগও চোখে দেখা যায় না। এইভাবে প্রতিনিয়ত চলছে বন্দর ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম। এদিকে বর্তমান সরকার মিয়ানমারের পণ্য আমদানি বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশে পণ্য গুলোর রপ্তানি আরো বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। সেই ধারাবাহিকতায় ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও বন্দর কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে মিয়ানমারের ৮ সদস্যের একটি বানিজ্যিক প্রতিনিধিদল টেকনাফ স্থল বন্দরে আগমন করে। দীর্ঘদিন পর পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে আসায় দু-দেশের ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও আমদানি-রপ্তানি আরো বাড়াতে দু-দেশের  সম্পর্ক আরো গভীর করার জন্য সেই কাজ করে যাচ্ছে।

এদিকে দু-দেশের ব্যবসায়ীদের উক্ত বৈঠকে মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরা দু:খ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দেশে দীর্ঘ দিন সামরিক শাসন বলবত থাকার কারনে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যোগাযোগ ও সম্পর্ক তেমন ভাল ছিলনা। বর্তমানে আমাদের দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসায় সীমান্ত বাণিজ্য আরো সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন প্রকার জটিল সমস্যা গুলো দূর করতে পারব। তার পাশাপাশি দু-দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক আরো গতিশীল করার জন্য দৃ-দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সততা ও ঐক্য স্থাপন করতে হবে।
এবং বাংলাদেশের নিত্য প্রয়োজনীয়ও মূল্যবান পণ্য গুলো আমদানি আরো বৃদ্ধি করতে জোর প্রচেষ্টা চালানো হবে।

স্থলবন্দর সূত্রে আরো জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সরকারকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা রাজস্ব দিতে সক্ষম হয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে ১৫ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ৪৫১ টাকার পণ্য আমদানি করা হয়। আর বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা হয় ১ কোটি ১০ লাখ ৩২ হাজার ৯৯ টাকার বিভিন্ন প্রকার পণ্য। দু-দেশের এই পণ্য গুলো আমদানি-রপ্তানি করে ব্যবসায়ীরা ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৩৮ হাজার ৩১৩ টাকা রাজস্ব দিতে সক্ষম হয়েছে। অথচ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক এক মাসে ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার মাসিক লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করে। কিন্তু এই সেপ্টেম্বর মাসে ব্যবসায়ীরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭৬ লাখ ৩৮ হাজার ৩১৩ টাকা রাজস্ব বেশী আদায় করতে সক্ষম হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এব্যাপারে টেকনাফ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা যেভাবে প্রতিনিয়ত মিয়ানমারের কোটি কোটি টাকা পণ্য আমদানি করে দেশের বাজারে মিয়ানমারের পণ্যের চাহিদা বাড়িয়ে দিচ্ছে এইভাবে চলতে থাকলে এই সোনার বাংলাদেশে তৈরী হওয়া মূল্যবান পণ্য গুলোর চাহিদা আরো কমে যাবে। তাই আমাদের দাবি মিয়ানমারের পণ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের তৈরী করা মূল্যবান পণ্য গুলো রপ্তানি বৃদ্ধি করে দেশের সুনাম বয়ে আনতে হবে।

স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা মো. আব্দুল মন্নান জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে ঈদের বন্ধ ও বৈরী আবহাওয়া থাকলেও মিয়ানমার থেকে পণ্য বেশি আমদানী হওয়ায় মাসিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছি। তার পাশাপাশি যদি দেশীয় পণ্য গুলো আরো বেশি রপ্তানী করতে পারলে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পেত। সীমান্ত বানিজ্য ব্যবসাকে আরো গতিশীল করতে দু-দেশের মধ্যে গভীর ভাবে কাজ চলছে। টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবসায়ী ও বন্দর সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতা ও আন্তরিকতা থাকলে আমদানীর পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানী সংখ্যা আরো গতিশীল হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁও উপজেলা নিবার্চন থেকে ২ চেয়ারম্যান ও ১ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন

নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : নানান কল্পনা ঝল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/