দক্ষিণ কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সকলের প্রিয় আলহাজ্ব এ.কে.এম জাকের আলমের (৫৭) নামাজে জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার বিকাল ৫ টায় উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক রুমখাঁ পল্লনপাড়া কবর স্থান মাঠে মরহুমের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জানাযায় উপস্থিত থেকে স্মৃতিচারণ করেন, জেলা আ’লীগের সভাপতি এডভোকেট আলহাজ্ব একে আহমদ হোছাইন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহামুদুল হক চৌধুরী, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী, হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল হক আমিন। তাছাড়া অশ্রুজড়িত কণ্ঠে স্মৃতি চারণ করেন, মরহুমের ছোট ভাই মোজাম্মেল হক, দীর্ঘদিনের সহকর্মী পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ইদ্রিস মিয়া, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক রফিক মাহামুদ। নামাজে জানাযায় ইমামতি করেন, মাওঃ হাফেজ রফিক উল্লাহ।
জানাযা শেষে মরহুমকে স্থানীয় কবর স্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এসময় মরহুমের নামাজে জানাযায় হাজারো মানুষের ঢল নামে।
সকলের প্রিয় শিক্ষক জাকের স্যারের অকাল মৃত্যুর খবর শুনে সহকর্মী, হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরা শেষ বারের মত দেখার জন্য মরহুমের বাড়ীতে ছুটে আসেন। প্রিয় মানুষটির মৃত্যুতে পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
জানা যায়, জাকের স্যার ছিলেন একজন সাদা মাটা সরল মনের শিক্ষক। তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি ছিলেন অনুরাগী। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে যেমন প্রিয় তেমনি সহকর্মীদের কাছেও ছিল একজন অমায়িক মানুষ। শিক্ষা জীবন শেষে করে তিনি পবিত্র মক্কা নগরীতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। সেখানে হজ্বব্রত পালন শেষে দেশে ফিরে ১৯৯৫ সালে পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্য্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। দীর্ঘদিনের কর্মদক্ষতার নজির সৃষ্টি করে ১৯৯৯ সালে বিদ্যালয়ের ক্রান্তিকালিন সময়ে হাল ধরেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে। ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শেষ মুহুর্তেও পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় জড়িত ছিলেন এবং পশ্চিমরত্না সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
জাকের স্যার ১৯৫৮ সালে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক রুমখাঁ পল্লানপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি মৃত হাজী আবুল হোসেনের পুত্র। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তিনি মাতা, স্ত্রী, তিন ছেলে, এক ভাই, চার বোন, সহকর্মী, হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী, অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে যান। তাঁর অকাল মৃত্যুতে দীর্ঘ জীবনের কর্মস্থল পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের আজ সকালে শোক র্যালী ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়া নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। তিনি ১১ জানুয়ারী সোমবার সকাল সাড়ে ৬ ঘটিকার সময় মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়ীতে ইন্তেকাল করেন।
You must be logged in to post a comment.