কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার বহু অপকর্মের মূলহোতা মোক্তার আহমদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের করিম সিকদার পাড়া এলাকার মৃত মোজাফফর আহমদের পুত্র বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীদের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ গত বছরের ২০ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর দায়ের করা হয়েছিল।
অভিযোগ সুত্রে প্রকাশ, অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার নিজেকে প্রাক্তন সৈনিক ও অবসর প্রাপ্ত সৈনিক দাবী করে শীল ব্যবহার করে যাচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে সে এক জন সাজা প্রাপ্ত চাকুরীচ্যুত সৈনিক। তিনি এলাকার সরল সহজ লোকজনের মাঝে নিজেকে প্রাক্তন অবসর প্রাপ্ত সৈনিক দাবী করে ভয় প্রদর্শন করে সরকারী ভাতা,ভিজিডি কার্ড দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নেয়, শালিসের জামানতকৃত টাকা আত্মসাত্ এবং ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। গত ১৪-১৫ অর্থ বছরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের জুন নুরাইন মসজিদের উন্নয়নের জন্য ১১ মেঃ টন চাউল (যার আনুমানিক মূল্য ১লাখ ৫০ হাজারন টাকা) বরাদ্দ দেওয়া হয় অভিযুক্ত ইউপি মেম্বারকে প্রকল্পের সভাপতি করে। উক্ত মেম্বার চাউল গুলো উত্তলন করে বিক্রী করার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত মসজিদ উন্নয়নে কোন কাজ করেনি দাবী করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে মশালী বলির পাড়া এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র আমিন উল্লাহ জানায়, তাকে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার কথা বলে ২ হাজার টাকা ঘুষ নেয়। তার মেয়াদ কাল শেষ হওয়ার পথে থাকায় মেম্বারের নিকট ভিজিডি কার্ড চাইলে তিনি নিজেকে প্রাক্তন সৈনিক দাবী করে মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী মশালীবলির পাড়া এলাকার মৃত আবুল শমার পুত্র এস্তফিজ জানায়, ইউপি মেম্বার মোক্তার আহমদ তাহার কাছ থেকে শালিসের জন্য ৩৮ হাজার টাকা জামানত নেয়। শালিস শেষ হওয়ার পর তাহাকে জামানতে টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত্ করে বলে জানায়। জামানতের টাকা চাইতে গেলে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়। তবলী পাড়ার মৃত ছালেহ আহম্মদের পুত্র মফিজুল আলম জানায়, উক্ত ইউপি মেম্বার তাকে বয়স্কভাতার কার্ড দেওয়ার কথা বলে ২ হাজার ৫শত টাকা ঘুষ নেয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কার্ড দেয়নি। কার্ড চাইতে গেলে মামলার ভয় দেখায়। ভূক্তভোগী তবলী পাড়ার ছমি উদ্দিনের পুত্র শাহাব উদ্দিন জানায়, উক্ত ইউপি মেম্বার তাহাকে সোনালী ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে দেওয়ার কথা বলে ১৯ হাজার ৫শত টাকা আত্মসাত্ করেন। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোক্তার আহমদ এর বিরুদ্ধে ২৪ জন ভূক্তভোগী টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার,স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়সহ অনেক দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন প্রেরনের জন্য কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সালেহীন তানভীর গাজি সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য উপজেলা পঃপঃ কর্মকর্তা বিধান কান্তি রোদ্রকে দায়িত্ব অর্পন করেন বলে জানান। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায়।
উল্লেখ্য যে, একই এলাকার মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে নূরুল হকের নিকট হতে নগদ ১লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার হাওলাত নিয়ে আত্মসাত্ করায় নূরুল হক উক্ত মেম্বারের বিরুদ্ধে কুতুবদিয়া বিজ্ঞ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি আর ২৩২/১৫ নং মামলা দায়ের করিলে তদন্তে ঘটনা সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় উক্ত মামলায় বর্তমানে অভিযুক্ত মেম্বার জেল হাজতে আছে। বর্ণিত সি আর ২৩২/১৫ নং মামলা দায়ের করার সাথে সাথে উক্ত মেম্বার কোন ঘটনা ছাড়ায় সম্পূর্ণ জালিয়াতি সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে নূরুল হকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ৩২৬/৩০৭সহ অন্যান্য ধারায় জি আর ৯৯/১৫ নং মামলা রজু করে এবং মাত্র ১৯ দিনের মধ্যে কোন তদন্ত ছাড়ায় মোটা অংকের বিনিময়ে অভিযোগ পত্র সংগ্রহ করেন। যাহা বর্তমানে বিচারাধীন আছে। ইহা ছাড়াও অভিযুক্ত মেম্বারের বিরুদ্ধে বহু জালজালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
You must be logged in to post a comment.